পাকিস্তানের লিয়াকতপুর শহরের কাছে তেজগাম ট্রেনের তিনটি বগিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত হয়েছে ৭৩ জন। এছাড়াও আহত অনেকের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছে রহিম ইয়ার খান জেলা সরকার। বৃহস্পতিবার এক যাত্রীর রান্নার গ্যাস স্টোভ বিস্ফোরণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। পাঞ্জাবের স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডা. ইয়াসমিন রশিদ বলেন, নারী ও শিশুসহ ৪৪ ব্যক্তি আহত হয়েছেন। হতাহতদের লিয়াকতপুরের ডিএইচকিউ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, ট্রেনটি দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর করাচি থেকে লাহোরে যাচ্ছিল। তখন এক যাত্রীর গ্যাস সিলিন্ডারের বিস্ফোরণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। পাঞ্জাব প্রদেশের দক্ষিণে রহিম ইয়ার খান শহরের কাছে এই বিস্ফোরণে ট্রেনটির তিনটি বগি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। পাকিস্তান রেলওয়ে কর্মকর্তারা বলেন, একটি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। যে কোচে বিস্ফোরণটি ঘটেছে, সেটি তাবলীগ জামাতের এক লোক বুকিং নিয়েছিলেন। সকালের নাস্তা তৈরিতে তিনি গ্যাস স্টোভে ডিম সিদ্ধ করছিলেন, তখনই বিকট বিস্ফোরণে চারপাশে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে ট্রেনে আরও দুটি কোচ গ্রাস করে নেয় আগুন। পাকিস্তানের রেলওয়েমন্ত্রী শেখ রশিদও এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। হতাহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক জানিয়ে এ ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। টুইটারে দেয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, একটি তাৎক্ষণিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। যেটা দ্রুত শেষ করতে বলা হয়েছে। পাঞ্জাবের গ্রামীণ অঞ্চলে এই দুর্ঘটনার টেলিভিশন ফুটেজে দেখা গেছে, ট্রেনের তিনটি বগি থেকে ধোঁয়া বেরিয়ে আসছে। এ সময় লোকজন চিৎকার করে কান্নাকাটি করছিলেন। দেশটির এক জ্যেষ্ঠ রেল কর্মকর্তা বলেন, কয়েকজন যাত্রী সকালের নাস্তা তৈরি করছিলেন। এ সময় দুটি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়েছে। ট্রেনের অধিকাংশ যাত্রী একটি একটি ধর্মীয় সমাবেশে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। তিনি আরও জানান, দীর্ঘ সফরে অধিকাংশ পাকিস্তানিরা খাবার সঙ্গে নিয়ে যান। তবে গ্যাস সিলিন্ডার বহন নিষিদ্ধ। এ ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। লিয়াকতপুর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাদিম জিয়া বলেন, ৭১ যাত্রী নিহত ও ৪৪ জন আহত হয়েছেন। তবে আদনান সাবির নামের এক উদ্ধার কর্মকর্তা বলেন, মৃত বেড়ে ৭৩ জনে পৌঁছেছে। জিয়া বলেন, আগুন থেকে বাঁচতে ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে কয়েকজন যাত্রী নিহত হয়েছেন।