ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় প্রজনন মৌসুম শেষ হলেও পদ্মা নদীতে কারেন্ট জালে ধরা পড়ছে মনে মন ডিমওয়ালা মা ইলিশ। এসব ডিমওয়ালা ইলিশে ছয়লাব হয়ে পড়েছে উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার। প্রজনন মৌসুমের নিষিদ্ধ সময় গত ৩০ অক্টোবর পার হওয়া মাত্র রাত ১২টার পর পদ্মা নদীতে কারেন্ট জাল নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছে শত শত জেলে নৌকা। তারা কারেন্ট জাল ব্যবহার করে পদ্মা নদীতে অবাধে নীধন করে চলেছে ডিমওয়ালা ইলিশ। এতে উপজেলা পদ্মা নদীতে প্রতিদিন অন্ততঃ দুই হাজার মন ডিমওয়ালা ইলিশ মারা পড়ছে বলে স্থানীয়রা ধারনা করছেন। শুক্রবার উপজেলা মৎস্য অফিসার মালিক তানভিরে হোসেন বলেন, “ প্রজনন মৌসুমের সময়সীমা জাতীয় মৎস্য অধিদপ্তর নির্ধারন করে থাকেন। তবে কারেন্ট জাল ব্যবহার করা সারা বছরই নিষিদ্ধ”।
শুক্রবার সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, উপজেলা পদ্মা নদীর দিয়ারা গোপালপুর জলমহল, চর কল্যানপুর জলমহল, চর কালকিনিপুর, চর তাহেরপুর, চর মির্জাপুর, চর শালেপুর, উত্তর শালেপুর, ভাটি শালেপুর, উজান মালেপুর, চর হাজীগঞ্জ জলমহল, চর মোহনমিয়া, মাঝিকান্দি, চরহরিরামপুর, চর ঝাউকান্দা, চর হোসেনপুর, জাকেরের সুরা, টিলারচর, মাথাভাঙ্গা ও চর মঈনূট মৌজার গভীর জলমহলে মত শত জেলেরা কারেন্ট জাল দিয়ে দিন রাত নীধন করে চলেছে ডিমওয়ালা ইলিশ। এসব ডিমওয়ালা ইলিশ বিক্রির জন্য উপজেলায় রয়েছে তিনটি বড় মোকাম। উপজেলা পদ্মা নদীর চরঝাউকান্দা ইউনিয়নের পদ্মা পারে চর মইনট ঘাটে প্রতিদিন ভোররাত থেকে ইলিশের সবচে’ বড় মোকাম বসে। ইলিশের উক্ত মোকাম থেকে ঢাকা জেলার বেপারীগণ ছোট ট্রাক বোঝাই করে দেশের বিবিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করে থাকেন। উপজেলা সদর বাজার ও চরহাজীগঞ্জ বাজারের মাছ হাটায় রয়েছে ইলিশের আরও দু’টি বড় মোকাম। এছাড়া শুক্রবার উপজেলার বিভিন্ন ছোট ছোট বাজারেও ডিম ওয়ালা ইলিশে ছয়লাব দেখা গেছে।
শুক্রবার উপজেলা পদ্মা নদীতে কারেন্ট জাল দিয়ে ইলিশ নীধনকারী এক জেলে কার্তিক সরকার (৪৫) বলেন, “২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ ছিল বলে ঘরে বসে বেকার সময় কাটিয়েছি। কিন্ত বন্ধের পরক্ষনেই কারেন্ট জাল ও নৌকা নিয়ে পদ্মায় নেমে পড়েছি। বন্ধ সময়ের তুলনায় পদ্মায় এখন প্রায় দ্বিগুন ইলিশ ধরা পড়ছে বলে তিনি জানান”। আরেক জেলে তমেজ খান (৫০) জানায়, “ দু’দিন ধরে পদ্মায় এতো মাছ এসেছে যে বাড়ী যাওয়ার সময় হয় নাই, মাঝে মধ্যে পদ্মা পারে এসে ডিমওয়ালা ইলিশ রান্না করছি এবং জালে আটক ইলিশ মাছগুলো বিভিন্ন বাজারে বিক্রির জন্য পাঠিয়ে দিচ্ছি”।