সড়ক নিরাপদ করতে “সড়ক পরিবহন আইন ২০১৯” আইন হয়েছে। তা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে ১ নভেম্বর ২০১৯ থেকে। খুশি লাগছে মনে। সড়ক নিরাপদ হওয়ার স্বপ্ন দেখছি। নানা এখলাছ উদ্দিন, ভগ্নিপতি ইমাম হোসেন, ছোট বোন শারমিনসহ হাজারো মানুষকে হারিয়ে বড় মনোকষ্টে আছি। বড় কোন দুর্ঘটনায় সরকার মহলের হুঙ্কার শুনে তৃপ্ত হই, এই ভেবে যে এই বুঝি সড়ক নিরাপদ হচ্ছে। যেদিন আইনটি কার্যকর হলো ঠিক সেদিনই খোদ রাজধানী ঢাকাতে আইন শৃৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আইন ভাঙ্গাতে দেখে আশাহত হয়েছি। আসলে বহু বছর ধওে দেখছি নিরাপদ সড়কের জন্য হাজারো হুঙ্কার আন্দোলন, ধর্মঘট, মিছিল, সমাবেশ কতকিছুই না হয়; সড়ক আর নিরাপদ হয় না। “সড়ক পরিবহন আইন ২০১৯” বাস্তবে কতটা প্রতি ফলন ঘটাবে? মনে প্রশ্ন জাগে, আদৌ কি খুনে সড়ক আমাদের জন্য নিরাপদ হবে? থেমকে কি সড়কে মৃত্যুর মিছিল?
“সড়ক পরিবহন আইন ২০১৯” আশাজাগানীয়া। এ আইন হচ্ছে জেনে মনে বড় আশা জাগে; তবে মনে জোড় পাই কম। আমাদের কত কিছুর জন্যইতো আইন আছে, প্রয়োগ হয় ক’টার? এদেশে কঠোর খাদ্য আইন আছে তবুও প্রায় সব খাবারেইতো বিষ মিশানো থাকে। নারীরর প্রতি সহিং¯্রতার আইন আছে কিন্তু এদেশের নারীরা কতটা নিরাপদ? আমাদেও নারী অনিরাপদ হয়ে, ধর্ষিত হয়ে, খুন হয়ে যাবার পর নুসরাতের মত ক’টা ঘটনার বিচার হয় এদেশে। সড়ক আইন ছিলো আগেও, এখনও আছে। প্রয়োগ হয় কি?। নয়া আইনের প্রয়োগ নিয়েও মনে প্রশ্ন উঁকিঝুকি মারে। তবুও আশা করতে দোস কোথায়? আসার বাসা বেঁধে না হয় নিরাপদ সড়কের স্বপ্ন দেখলামই আমরা। একে বারে আশা ছেড়ে দেয়া যাবে না কিন্তু। যা ভাবিনি তাতো হচ্ছে দেশে। সড়কে সড়কে ফ্লাইওভার, সড়ক, মহাসড়ক, মেট্রো রেল, স্বাপ্নের পদ্মা সেতু সেবইতো দেখছি হচ্ছে। নতুন করে জানলাম সামনের বছর ২০২০ সাল থেকে নাকি আমাদের শিশুরা নতুন বইয়ের সাথে টাকা পাবে। বয়স্ক মানুষ, দরিদ্র মানুষ, বিধবারা ভাতা পাচ্ছে। একদিন আমরা দেশের সকল নাগরিকরা হয়তো ভাতার আওতায় আসবো। ফ্রি চিকিৎসা পাব। এমন স্বপ্ন এখন দেখতেই পারি।
ভাবি সব কিছুইতো হচ্ছে। অসভ্য খুনে সড়ক কি আদৌ নিরাপদ হবে? মনে বড় সংশয়। সড়ক কি ঠিকই নিরাপদ হবে? কিছু কিছু ঘটনায় দেখেছি প্রধানমন্ত্রী নাড়া দিলে সব নড়েচড়ে ওঠে। তিনি দৃষ্টি দিলে সব কিছু সহজে হয়ে যায়। তিনি যখন কক্্রসবাজারে সমুদ্রে পা ভিজিয়ে ছিলেন তখন- “সমুদ্র জলে প্রধান মন্ত্রীর পা : পর্যটনের কিছু একটা হবে?” এই শিরোনামে কলাম লিখেছিলাম। সেখানে কিছু একটা হচ্ছে এখন। কক্্রসবাজারে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের কাজে হাত নিয়েছে সরকার। কাজ চলছে। সমুদ্রের সৌন্দর্য বর্ধনের কাজও হচ্ছে। পতেঙ্গা সীবিচ ইতোমধ্যে দর্শনীয় হয়েছে, আরও হবে। এমনি করে প্রধানমন্ত্রী সরাসরি নজর দিলে আমাদের সড়কর নিরাপদ হবে। প্লিজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি সড়ক নিয়ে হুঙ্কার দিন; গর্জে উঠুন। আপনার তর্জন গর্জনে আমাদের সড়ক একদিন নিরাপদ হবেই হবে।
এদেশের সড়ক নিরাপদ হওয়া খুব জরুরী। খুন খারাবির চেয়ে সড়কেই মানুষ মরছে বেশি। প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মরছে, আহত হয়ে পঙ্গু হচ্ছে শতশত মানুষ। সড়কে আইন না মানা, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অদক্ষ এবং অবৈধ ড্রাইভার গাড়ি চালাতে গিয়ে হরহামেশাই দুর্ঘটনায় পড়ছে। সম্প্রতি উচ্চ আদালত ফিটনেসবিহীন গাড়িতে জ্বালানি সরবরাহ না করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। আদালতের সেই নির্দেশ মানা হচ্ছে না। মটোর সাইকেলে হেলমেট না থাকলে জ¦ালানী তেল না দেয়ার নির্দেশ ছিলো পেট্রোল পাম্প গুলোর প্রতি। আমরা লক্ষ করেছি সে নির্দেশ মানা হচ্ছে। তাই মটোর সাইকেল আরোহিরা হেলমেট পড়ে গাড়ি চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। কাজেই পরিবহনের ক্ষেত্রে ফিটনেসবিহীন গাড়িতে জ¦ালানী না দেয়ার বিষয়টি মনে হয় জনস্বার্থে মেনে নেয়া দরকার এবং মেনে নিলে মানুষ উপকৃত হবে। আমাদেও পরিবহন গুলো ঠিকঠাক থাককে পরিপাটি হবে। সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে আসবে। আদৌ তা হবে কিনা তা ভাবছি। এর আগে সড়ক নিরাপদ না হওয়ার ব্যাপারে নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খানকে দোসা হতো। এখন তিনি নেই তাহলে কার শক্তিতে পরিবহন সেক্টর মালিক শ্রমিকরা সড়ক আইন অমান্য করছে। এভাবে চললে আইন করে কোন কাজেই আসবে না। আইন যেম পাকাপোক্ত করতে হবে, আইন মানতে হবে, আইন মানাতে হবে, আইন মানতে বাধ্য করতে হবে। তবইে সড়ক নিরাপদ হবে।
আসলে আমরা বলছি অনেক, করছি কম। সব হচ্ছে কিন্তু কিছুই হচ্ছে না আইন প্রয়োগ না হওয়ার কারনে। এদেশে কত শত রাজীবের হাত যাচ্ছে, পা যাচ্ছে, মাথা যাচ্ছে, এখলাছ উদ্দিন, ইমাম হোসেন, শারমি, মিশুক-মনির, সাইফুর রহমানদের জীবন যাচ্ছে। থামছেই না সড়কে মৃত্যু মিছিল। আমরা বিশেষ দু’একজনের জন্য আহ্ উহ্ করি। প্রতিদিন কত খালিদ, কত হৃদয় পঙ্গু হচ্ছে, জীবন দিচ্ছে তার খোঁজ কি রাখি? আমরা কেন মৃত্যুর মিছিল রোধ করছি না? কেবল আলোচিত ঘটনায় মন্ত্রী, এমপিরা ছুটে যায়,স্বজন কিংবা লাশের পাশে। আমরা মায়া কান্না করি; লাভ কি তাতে?
সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মরছেতো মরছেই। রোধ হচ্ছে না। এদেশে সড়ক দুর্ঘটনা কিন্তু অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। সড়কে আইন মানছে না কেউ। আসলে সড়কে আইন মানতে বাধ্য করা হয় না। তাহলে কিভাবে সড়ক নৈরাজ্য থামবে? এ নিয়ে সরকার সংশ্লিষ্টদের ভাবনা কম। যারা সড়কে আইন মানানোর কাজ করেন তারাই আইন মানেন না। আমরা কি অন্ধ? আমরা কি কালা (কানে কম শুনি)? প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মরছে, প্রতিদিন সংবাদপত্রগুলো ফলাও করে সংবাদ ছাপছে। সড়ক দুর্ঘটনায় মড়ক লাগায় জাতীয় প্রথম শ্রেণীর একটি পত্রিকা গত দেড় বছর ধরেই প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে বিশেষ সংবাদ ছাপছে। সবাই দেখে, সবাই দুর্ঘটনা নিয়ে ভাবে কিন্তু যাদের এ নিয়ে ভাবনা থাকার কথা তারাই ভাবলেশ। তাঁরা দেখেনও না, বললে শোনেনও না।
সড়ক দুর্ঘটনা এ কী অলঙ্ঘনীয় ব্যাপার? এদেশে সড়ক দুর্ঘটনা হলো মৃত্যুদূত, ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকার মতো। ঘর থেকে বের হয়ে আবার ঘরে ফেরা যাবে কি? এমন সংশয় বরাবরই থেকে যায়। এ প্রশ্নের ইতিবাচক জবাব পাওয়াও কঠিন বাংলাদেশে। তাই প্রতিদিন গণমাধ্যমে আমরা দেখতে পাচ্ছি সড়ক দুর্ঘটনার অসংখ্য বিভৎস ছবি, দেখতে পাই স্বজন হারানোদের আহাজারি। আমাদের সড়ক যেন এখন মরণফাঁদ। এমন কোন দিন নেই, যেদিন অকালে প্রাণ ঝরছে না, প্রিয়জন হারানোর বেদনায় বাতাস ভারি হয়ে উঠছে না। দেশে যেভাবে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে তাতে, নিরাপদ সড়ক বলে আর কিছু নেই। এ অবস্থায় আজকাল আর কেউ ঘর থেকে বের হলে পৈত্রিক প্রাণটা নিয়ে ফের ঘরে ফিরতে পারবেন কিনা সে নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবে না।
এমন কোনো দিন নেই, যে দিন সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে না। বিগত এরশাদ সরকারের আমলে সড়ক দুর্ঘটনা অস্বাভাবিক বেড়ে গেলে সরকার দুর্ঘটনা সংঘটনকারী গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন করেন। কিন্তু পরিবহন শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে পরে তা রহিত করতে বাধ্য হয় সরকার। এরপর থেকে বিভিন্ন সরকারকে পরিবহন শ্রমিকদের দাবি দাওয়ার কাছে প্রায় জিম্মি থাকতে দেখা যাচ্ছে। এভাবে দুর্ঘটনা সংঘটনকারী চালকদের শাস্তি না হওয়া, ট্রাফিক আইন লংঘন, লাইসেন্সবিহীন ও অদক্ষ চালক কর্তৃক গাড়ি চালানো, আনফিট গাড়ি রাস্তায় চালানো, সড়ক যোগাযোগে অব্যবস্থাপনা ইত্যাদি কারণে ইদানিং সড়ক দুর্ঘটনা মারাত্মক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্ঘটনার সাথে জড়িত চালকদের বিচারের কাঠগড়ায় নিয়ে আসার ঘটনা এদেশে বিরল। দেখা গেছে, প্রায় সব ক’টি দুর্ঘটনার ক্ষেত্রেই চালকরা পার পেয়ে গেছে। কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থাই নেয়া হয়নি তাদের বিরুদ্ধে।
এদেশে সড়ক দুর্ঘটনা স্বাভাবিক এবং প্রাকৃতিক নয়, তা হচ্ছে মানবসৃষ্ট কারণে। এই হিসাবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতরা পরোক্ষভাবে হত্যারই শিকার। কিন্তু হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার কাঙ্খিত উদ্যোগ নেই। ফলে সড়ক দুর্ঘটনা না কমে জ্যামিতিক হারে বেড়েই চলেছে। এরশাদ সরকারের আমলে সড়ক দুর্ঘটনা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেলে সরকার গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন করে। এতে চালকের দায়িত্বে অবহেলার কারণে সড়ক দুর্ঘটনায় কারো মৃত্যু ঘটলে চালককে নরহত্যার দায়ে অভিযুক্ত করার বিধান রাখা হয়। কিন্তু পরিবহন শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে পড়ে তা রহিত করতে বাধ্য হয় সরকার। দায়ী চালকদের শাস্তি না হওয়া, ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন, লাইসেন্সবিহীন ও অদক্ষ চালক কর্তৃক গাড়ি চালানো, আনফিট গাড়ি রাস্তায় চালানো, সড়ক যোগাযোগে অব্যবস্থাপনা ইত্যাদি কারণে এদেশে সড়ক দুর্ঘটনা মারাত্মক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িত চালকদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর উদাহরণ খুব অনুজ্জ্বল। সব ক্ষেত্রেই দায়ী চালকরা পার পেয়ে গেছে। সরকারি হিসাবে গত ১০ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মারা গেছে ৩৪ হাজার ৯১৮ জন। প্রতি বছর মারা যায় ৩ হাজার ৪৯১ জন। থানায় মামলা হয়েছে এমন দুর্ঘটনার হিসাব নিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে দায়িত্বশীলদের তরফে। বেসরকারি হিসাবে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছে ২০ হাজার ৩৪ জন। প্রতিদিন গড়ে মারা যাচ্ছে প্রায় ৫৫ জন। সরকারি তথ্য ও বেসরকারিভাবে প্রাপ্ত তথ্যের মধ্যে বিস্তর ব্যবধান থাকার কারণ হলো, দুর্ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের ৬৭ ধরনের প্রশ্নের উত্তর সংগ্রহ করে প্রতিবেদন জমা দিতে হয়। এ ঝামেলার কারণে অনেক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর বিষয়টি যথাযথভাবে রেকর্ডভুক্ত হয় না। পুলিশের দেয়া তথ্যানুযায়ী ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ২ হাজার ১৪০ জন। মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে ১ হাজার ১৮৬ এবং সামান্য আহত হয়েছে ১৫৭ জন। অন্য একটি প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী ২০১০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৭২ হাজার ৭৪৮টি। মারা গেছে ৫২ হাজার ৬৮৪ জন। আহত ও পঙ্গু হয়েছে আরো কয়েক হাজার মানুষ। ২০১৯ সালে প্রকাশিত এক আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এশিয়া, ইউরোপ এবং অস্ট্রেলিয়ার ১৫টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার নেপালে বেশি, দ্বিতীয় বাংলাদেশে। সবচেয়ে কম হার যুক্তরাজ্যে। এ পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতি ১০ হাজার নিবন্ধিত যানবাহনের দুর্ঘটনায় নেপালে মারা যায় ৬৩ জন এবং বাংলাদেশে ৬০ জন। যুক্তরাজ্যে এ হার মাত্র ১ দশমিক ৪ শতাংশ।
সড়ক দুর্ঘটনাজনিত ক্ষয়ক্ষতির সামপ্রতিক এক গবেষণা তথ্যে দেখা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় ফি বছর ৭ হাজার কোটি টাকারও বেশি সম্পদহানি হয়। এই হার দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১ দশমিক ৯৫ শতাংশের সমান। বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির হার উন্নত দেশগুলোর তুলনায় শতকরা ৫০ ভাগ বেশি। অন্য এক গবেষণা জরিপ থেকে জানা যায়, ৪৮ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনার জন্যে দায়ী যাত্রীবাহী বাস, ৩৭ শতাংশ দায়ী ট্রাক। দেশে সন্ত্রাস দমনে যদি বিশেষ বাহিনী গঠন করা যায়, তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এ জাতীয় বাহিনী গঠন করা হচ্ছে না কেন? জানমাল রক্ষা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আইন না মানাই হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম মূল কারণ। সবাইকে আইন মানতে বাধ্য করতে হবে। দুর্ঘটনার অন্যতম কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে ১. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, ২. গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার, ৩. অতিরিক্ত যাত্রী এবং পণ্য পরিবহন, ৪. ট্রাফিক আইন না মানা, ৫. গংশ্লিষ্টদের দায়িত্বে অবহেলা, ৬. চালকদের বেপরোয়া মনোভাব, অদক্ষতা ও অসতর্কতা এবং ৭. অরক্ষিত রেললাইন। কথা হলো, যে কোনো মৃত্যুই দুঃখজনক। মৃত্যু যদি অকাল ও আকস্মিক হয় তবে তা মেনে নেয়া আরো কঠিন। প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে একের পর এক অকালমৃত্যু আমাদের শুধু প্রত্যক্ষই করতে হচ্ছে না এই দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক বিভীষিকাময় ও অরাজক পরিসি’তিও মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সবার প্রচেষ্টায় এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতির নিরসন করতেই হবে। এভাবে চলতে পারে না। এভাবে মানুষের জীবনপ্রদীপ নিভে যেতে পারে না। পঙ্গুত্বের মতো দুর্বিষহ যন্ত্রণা নিয়ে মানুষ জীবন কাটাতে পারে না। কারণগুলো যেহেতু চিহ্নিত সেহেতু সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা দুরূহ হবে কেন?
দুর্ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে, ঘটবেও। কেন তা রোধ করা যাচ্ছে না? আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় দেশে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এসব রুখতে হবে? যে কোনো মৃত্যুই দুঃখজনক। সে মৃত্যু যদি অকাল ও আকস্মিক হয়, তবে তা মেনে নেয়া আরও কঠিন। প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে একের পর এক অকালমৃত্যু আমাদের শুধু প্রত্যক্ষই করতে হচ্ছে না, এ দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক বিভীষিকাময় ও অরাজক পরিস্থিতিও মোকাবিলা করতে হচ্ছে, যা আমাদের কারও কাছেই কাম্য নয়। আমরা সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পরিবহন মালিক ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে সমন্বিত আন্তরিক, সচেতন, দৃঢ় ও দায়িত্বশীল ভূমিকা আশা করি।
লেখক- মীর আব্দুল আলীম, সাংবাদিক, গবেষক ও কলামিষ্ট