কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে চরের বুকে কলা চাষ করে সাবলম্বী হয়েছে শতাধিক পরিবার। উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ওয়াপদাবাজার সংলগ্ন দুধকুমর নদীর চরের বুকে কলাবাগান করে সাবলম্বী হয়েছে এসব পরিবার। পরিত্যাক্ত বালুচর এখন কলা বাগান নামেই বেশ পরিচিত। উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এ বছর উপজেলার বামনডাঙ্গা বেরুবাড়ি, রায়গঞ্জ, কচাকাটা, বল্লভেরখাস, কালিগঞ্জ, ভিতরবন্দসহ অন্যান্য ইউনিয়ন মিলে প্রায় ১শ ৬৫ একর জমিতে মেহের সাগর, সবরি ও অন্যান্য জাতের কলার চাষ হয়েছে। তারা কৃষকদের মাঝে গিয়ে বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতাও করছেন। এছাড়াও রায়গঞ্জ ইউনিয়নের দামালগ্রাম এলাকায় ১ বিঘা জমিতে কলার প্রদর্শনী দিয়েছেন বলেও জানান তারা।
রফিকুল ইসলাম নামের এক কলাচাষি জানায় ৩ বছর আগে পরিত্যাক্ত ২৫ বিঘা বালুচরে কলাবাগান করেন তিনি। এতে খরচ পুশিয়ে প্রতিবছর তার লাভ হয়েছে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা। চলতি বছরে বন্যার ক্ষতি পুশিয়েও তার লাভ হয়েছে ৮ লাখ টাকা। তার কলাচাষে উৎসাহী হয়ে আশপাশের অনেকেই কলাচাষে আগ্রহী হয়েছেন।
ইউসুফ আলী নামের আরেক কৃষক জানায় তারা কয়েকজন কৃষক মিলে এই চরাঞ্চলে প্রায় ১শ ৫০ বিঘা জমিতে ৬০ হাজারের উপর কলার চারা লাগিয়েছেন। এসব বাগান থেকে গত বছরেই বিক্রি করেছেন প্রায় অর্ধকোটি টাকার কলা।
এ বছর বৈশাখ মাস থেকেই কলার ছড়ি কেটে বিক্রি শুরু করেছেন তারা। দিনে কাটছেন ৩শ থেকে ৪শ কলার ছড়ি। এসব কলা নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পাইকার ও আরতদাররা। স্থানীয় পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে এসব কলা এখন যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। একদিকে যেমন কলা বিক্রি করছেন অপরদিকে জমি খালি হওয়ায় সাথে সাথে জমি চাষযোগ্য করে নতুন করে কলার চারা লাগাচ্ছেন। এছাড়াও কিছু বাগানের নতুন করে বের হচ্ছে কলার ছড়ি।
এসব কলাবাগানে কাজ করে রুজি-রোজগারের ব্যবস্থাও হয়েছে শতাধিক কৃষি শ্রমিকের। এমনকী কলাবাগান করে বেকার যুবকরা আত্মকর্মী হয়ে উঠেছে। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তাদের। ফলে আশেপাশের লোকজনও কলা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তবে কৃষকরা মনে করছেন সরকারি বা বেসরকারি কোনো অর্থ সহায়তা পেলে আরো বড় আকারে কলাবাগান করার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শামসুজ্জামান বলেন, দুধকুমর নদীর দু’ধারের চরাঞ্চলে কলা চাষ আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভুমিকা রাখছে। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কলা চাষিদের পরামর্শ ও সহযোগিতা করে আসছি।