খুলনার পাইকগাছা থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে সেফ ইসলামি গ্রুপ লাপাত্তা হয়েছে। এতে পথে বসতে চলছে এর কয়েক হাজার সদস্য। উপজেলার কপিলমুনি সেফ ইসলামি গ্রুপের নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে সমবায় লাইসেন্স নিয়ে এর কার্যক্রম শুরু করে। বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে কয়েক মাসের মধ্যে হাজার হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকায় হাতিয়ে নেয়।
গত এক সপ্তাহ থেকে এর প্রধান কার্যলয় সহ বিভিন্ন শাখা কর্মকর্তারা বলতে পারছেন না এমডিসহ কর্মকর্তারা কোথায় আছেন। কপিলমুনি সহ অন্যান্য শাখা অফিসের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এর ফলে সদস্য ও তৃণমূল কর্তারা চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মাঝে দিন অতিবাহিত করছে।
সেফ প্রতিষ্ঠানটি শুধুমাত্র সমবায়ের লাইসেন্স নিয়ে এতদিন সরকারী নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে কোটি কোটি টাকা লেনদেন করেছে। সর্বশেষ কয়েক হাজার কোটি টাকা লোপাট করে এমডি, ডিএমডি, সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ হঠাৎ আত্মগোপন? তৃণমূল কর্মকর্তারা সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারছেন না। লেনদেন বন্ধ রেখে কি করবেন তাও বলতে পারছের না।
জানাযায়, সমবায় সমিতির লাইসেন্স নিয়ে খুলনা পরবর্তী কপিলমুনিতে সেফ ইসলামি গ্রুপের কর্মকা- শুরু করে ব্যাপকভাবে সাড়া ফেল। ধর্মীয় ভিত্তিক প্রচারণায় ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে মিথ্যা প্রলোভন বিশ্বাস করাতে সক্ষম হয়। সদস্য অন্তর্ভূক্তি, আমানত সংগ্রহ, ডিপোজিট পেনসন স্কীম সহ আকর্ষণীয় মুনাফা প্রদানে স্বল্প সময়ে চমকপ্রদ অবস্থানে চলে যায় প্রতিষ্ঠানটি। এরপর ল্যান্ড ক্রয় ও আকর্ষণীয় বিল্ডিং তৈরীতে শেয়ার বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা আয়ত্ত করে। অবস্থাদৃষ্টে সেফ এর বিতর্কিত কর্মকা- ও বিভিন্ন ঝামেলার আশঙ্কা থাকার এমন বিষয়ে টেকআপ করতে প্রতিষ্ঠানটি বুদ্ধিমত্ত্বার সাথে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী লোকদের নিয়োগ করে সাড়ম্বরে এসব অর্থ আয়ত্ত করে।
জানাগেছে, দুর্নীতিবাজ এমডি আব্দুল্লা আল মামুন সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে সবকিছু চলতেন। কর্মীদের বেতন না দিয়ে মাসের পর মাস ঘুরিয়েছে। শুধু তাই নয়, সেফ কমপ্লেক্স নির্মাণে ব্যায় হিসাবে ৩শ জন শেয়ার নিয়োগ করে ও শেয়ার প্রতি ১লাখ টাকা করে মোট ৩ কোটি টাকা কালেকশান করে।
অথচ ভবনটির নির্মাণ কাজ অসমাপ্ত অবস্থায় অদৃশ্য কারণে বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে ভবন সংশ্লিষ্ট দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার মোঃ তরিকুল ইসলাম জানান, কি কারণে তারা কার্যক্রম বন্ধ করেছেন তা জানিনা। তবে লিফটসহ এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে। আরোও জানায়, ইতোমধ্যে কপিলমুনি সেফ ভবনটি খুলনার একটি ব্যাংকের কাছেই মটগেজ রেখে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে ফলে ৩শ শেয়ার ক্রয় করা গ্রাহকরা তাদের অর্থ ফেরত পাওয়া নিয়ে অনিশ্চতা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে কপিলমুনি এলাকার দায়িত্বে নিয়জিত হিনাইদুল ইসলাম জানান, আমরা ধোয়াশার মধ্যে রয়েছি। আপাতত সঞ্চয় কালেকশানসহ সকল লেনদেন বন্ধ রেখেছি। তবে পরিস্থিতিতে সব কিছু বলতে পারবো। সেফ ইসলামি গ্রুপের এমডি আব্দুল্লা আল মামুনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।