নওগাঁর মান্দা উপজেলার ভারশোঁ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের বিরুদ্ধে একটি পুকুরের মাছ লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ মাছচাষি আহসান উল্লাহ হাসান নামে একব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট গত বুধবার লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ভারশোঁ ইউনিয়নের চেরাগপুর মৌজায় আমদীঘি নামে ৭ একর ৮৯ শতক আয়তনের একটি পুকুর চেরাগপুর কালিমাতা মন্দিরের দেবোত্তর সম্পত্তি রয়েছে। ওই মন্দিরের সেবায়েতের পক্ষে (আমমোক্তার) চুক্তি সাপেক্ষে ২০১১ সাল থেকে পুকুরটি ভোগদখল করে আসছেন উপজেলার চককানু গ্রামের আহসান উল্লাহ হাসান।
গত মঙ্গলবার গভীর রাতে ভারশোঁ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের নেতৃত্বে নিয়ামতপুর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের মছির উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম, মান্দা উপজেলার চেরাগপুর গ্রামের মাসুদ রানা, শামসুল ইসলাম, আকবর আলীসহ ২০-২৫ জনের একটি দল পুকুরে বেড়জাল দিয়ে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকার মাছ ধরে নিয়ে গেছেন। মাছ ধরার সময় বাঁধা দিতে গেলে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত অস্ত্রধারীরা মাছচাষি আহসান উল্লাহর লোকজন মারধরের উদ্দেশ্যে উদ্যত হলে তারা পালিয়ে যান। পরে মাছচাষি আহসান উল্লাহ এ বিষয়ে মান্দা থানা পুলিশকে খবর দেন। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার আগেই মাছ লুট করে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
মাছচাষি আহসান উল্লাহ বলেন, প্রায় ৮ একর জলাশয়টিতে দীর্ঘ ৮ বছর ধরে আমি মাছ চাষ করছি। সম্প্রতি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান পুকুরটিকে খাস দাবি করে আমাকে সেটি ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু আমি তা না শোনায় চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন লোকজ মঙ্গলবার রাতে ওই পুকুরের মাছ লুট করে নিয়ে যায়। মাছ মারার সময় পুলিশকে খবর দিলেও তারা সঠিক সময়ে না আসায় সব মাছ লুট করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মাছ মারার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমদীঘিতে মাছ মারার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। সেখানে মাছ মারার বিষয়ে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’
মান্দা থানা কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মাছ মারার খবর শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ যাওয়ার আগেই মাছ ধরে একটি পক্ষ পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, ওই পুকুরটি বিরোধপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে পুকুরটির দখল নিয়ে মামলা- মোকর্দ্দমা চলে আসছে।
এ বিষয়ে মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল হালিম বলেন, এ ধরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।