বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় বুলবুল উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। ফলে দুর্যোগ ঝুঁকিতে দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তর বরিশালের উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার আশ্রয় কেন্দ্র না থাকা ১২টি চর এলাকার বাসিন্দারা। তবে দুর্যোগ মোকাবেলায় সকল ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় প্রশাসন। তাদের (প্রশাসনের) দাবি, আশ্রয় কেন্দ্র না থাকা চরগুলোর মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বভাসে বলা হয়েছে, প্রবল শক্তি নিয়ে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এর প্রভাবে ৭ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। আরও বলা হয়, শনিবার রাতে বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূলে আঘাত হানতে পারে বুলবুল। পায়রা সমুদ্র বন্দরের নিকটবর্তী নদী ও সাগর বেষ্টিত রাঙ্গাবালী উপজেলার অবস্থান হওয়ায় এ ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্কে এখানকার মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার রাঙ্গাবালী ইউনিয়নের চরকাশেম, চর মাদারবুনিয়া, কলাগাছিয়া চর, চরকানকুনি, ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের চরইমারশন, চরনজির, চরতোজাম্মেল, কাউখালী চর ও চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের চরলতা নামক চরে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় সেখানকার মানুষের দুর্যোগকালীন অনেক বেশি ঝুঁকি রয়েছে।
পাশাপাশি চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের মধ্য চালিতাবুনিয়া, বিবির হাওলা ও গরুভাঙা গ্রামের পাঁচ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত থাকায় এবং একমাত্র ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রটি নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে যাওয়ায় সেখানকার মানুষদের মধ্যে দুর্যোগ আতঙ্কে রয়েছে। ওই উপজেলার মোট ১২টি চরে আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় সেখানকার মানুষের দুর্যোগ ঝুঁকি বেশি।
স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিরা বলছেন, নভেম্বর মাস উপকূলের জন্য আতঙ্কের মাস। ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর ও ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাতে উপকূলীয় এলাকা লন্ডভন্ড হয়েছিল। যার কারণে নভেম্বর মাসের এই ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলের মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে।
রাঙ্গাবালী উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব পিআইও তপন কুমার ঘোষ বলেন, যেসব চরে আশ্রয় কেন্দ্র নেই, সেখানকার মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে। আর যারা এখনও আছে, তাদেরকে জোর করে হলেও নিরাপদস্থানে নিয়ে আসার জন্য বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশনা রয়েছে।
এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাশফাকুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় ইতোমধ্যে সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। মানুষদের সতর্ক করতে মাইকিং করা হয়েছে। ৫৪টি সাইক্লোন শেল্টার খুলে দেওয়া হয়েছে। দুর্গম এলাকার মানুষদের নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।