রাজশাহীতে যত্রতত্র বাড়ছে সিলিন্ডার গ্যাসের ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবহার। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে বিলাশবহুল রেস্তোরাঁয় ব্যবহার হচ্ছে এই সিলিন্ডার গ্যাস। অনেকেই চুলার ঠিক পাশেই রাখছে মজুদকৃত গ্যাস সিলিন্ডার। যত্রতত্র সিলিন্ডার রাখায় বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটছে। আর প্রশাসনিক তদারকি না থাকায় কেউ কোন নিয়ম-নীতি মানচ্ছেন না। ফলে বিক্রি ও ব্যবহারে ঝুঁকি বাড়ছে। ঘটছে দুর্ঘটনাও। তারপরেও শুধুমাত্র চিঠি আদান প্রদানেই সীমাবদ্ধ রয়েছে বিস্ফোরক অধিদফতর ও ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজশাহী নগরীতে পানের দোকান, মুদি ও ওষুধের দোকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরণের দোকানেই বিক্রি হচ্ছে গ্যাসের সিলিন্ডার। যারা নির্দিষ্ট কোন গোডাউনে না রেখে সারিবদ্ধভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় খোলাস্থানে রেখেছে। আবাসিক এলাকাসহ বর্তমানে এ ব্যবসা মহানগরীর অলি গলিতেও পৌঁছে গেছে। ফলে যে কোন মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
মহানগরীর লক্ষীপুর, ভাটাপাড়া, আলুপট্টি, জিরোপয়েন্ট, কাঁচাবাজার, রেলগেট, বর্ণালী, সাধুরমোড়, মুন্নাফের মোড়, তালাইমারী এলাকার অনেক বাড়িতে ঢুকে দেখা যায়, যত্রতত্রভাবে এলপিজি গ্যাস চুলার পাশেই রেখেই ব্যবহার করা হচ্ছে। যেখানে কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। একই পরিস্থিতি চায়ের দোকানসহ খাবার হোটেলেও। খরচ কম ও ঝামেলাহীন হওয়ায় জ¦ালানী হিসাবে রেস্তোরাঁ থেকে রাস্তার পাশের যে কোন দোকানেই চলছে এই গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবহার। এমন অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের কারণেই যে কোন মূহূর্তে আগুনের তাপেই পুড়ে যেতে পারে গ্যাস সরবরাহের জন্য থাকা সিলিন্ডারের সংযোগ পাইপ, ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। এছাড়াও খাবার হোটেল বা চায়ের দোকানের সেই জলন্ত চুলার পাশেই রাখা হচ্ছে মুজুদকৃত আরও গ্যাস সিলিন্ডার। এত কিছুর পরেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোন নগরদারী নেই।
সিলিন্ডার ব্যবহারকারী রাজশাহী মহানগরীর কুমারপাড়া মোড়ের চায়ের দোকানদার বাদশা বলেন, গত দুই বছর ধরে গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে চুলা ব্যবহার করছি। ব্যবহারের ক্ষেত্রে লাইসেন্স লাগে কি-না জানি না। একই অবস্থা নিউ খাবার ঘর-এরও। নিউ খাবার ঘরের মালিক তুহিন বলেন, এ বিষয়ে আমাকে কখনোই কেউ অবগত করেনি, ব্যবহারে নিষেধ করেনি।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী সদর দফতরের সহকারী পরিচালক আবদুর রশীদ বলেন, ‘নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত না করে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবহারের সংখ্যা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি মারাত্মক বিপদজনক। এলপি গ্যাস ভর্তি সিলিন্ডার মজুদ রাখাসহ যত্রতত্র ব্যবহার বন্ধের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি। তারা চাইলে আমরা অভিযানে সহায়তা করবো। পাশাপাশি আমরা সচেতনতার জন্যও বলছি।’
রাজশাহীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) হামিদুল হক বলেন, ‘সবখানে সিলিন্ডার ব্যবহারের বিষয়ে আমরা বিস্ফোরক অধিদফতরের সাথে যোগাযোগ করেবো। পাশাপাশি এ বিষয়ে অতিদ্রুত অভিযান চালানো হবে।