দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ তান্ডব চালিয়েছে খুলনার কয়রায়। ঝড়ের আঘাতে কয়রা সদর সহ উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বিধ্বস্থ হয়েছে তিন হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি। ভারী বর্ষণের কারণে পানিতে তলিয়ে গেছে মাছের অধিকাংশ ঘের ও ফসলি জমি। জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে বহু এলাকায়। তার আগে থেকে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে কয়রা। এজন্য ঝড়কবলিত কয়রাবাসী পড়েছে আরও দুর্ভোগে। পাউবোর বেঁড়িবাধে ভয়াবহ ফাটল ধরায় আতঙ্কে রয়েছে উপকুলীয় কয়রাবাসী।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার দিনগত রাতে উপকূলে আছড়ে পড়া বুলবুল রোববার ভোর থেকেই কয়রাজুড়ে তান্ডব চালায় বুলবুল। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়া এ উপজেলায় সকাল ১০টা পর্যন্ত তীব্র বাতাস ও ভারী বর্ষণ চলে। ঝড়ের কারণে কয়রা সদরের দোকানপাট বন্ধ থাকতে দেখা যায়। গাছ উপড়ে পড়েছে বহু এলাকায়। সাময়িক যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে কয়রা-পাইকগাছা সড়কে।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিমুল কুমার সাহা বলেন, কয়রায় ৭ টি ইউনিয়নের অনেক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্থ হয়েছে। ঝড়ে কয়রা সদর, মহারাজপুর, উত্তর বেদকাশী, দক্ষিণ বেদকাশী ও মহেশ্বরীপুর, বাগালী, আমাদী ইউনিয়নের আধাপাকা ঘরবাড়ি, এবং গাছপালা বেশি ভেঙে গেছে। তবে কোথাও বেড়িবাঁধ ভাঙেনি। এ ছাড়া অধিকাংশ সড়কে গাছ উপড়ে পড়েছে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল। তবে যান চলাচল রাখতে সড়কের গাছ সরিয়ে ফেলানোর কাজ চলছে।
কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ইউপি চেয়ারম্যান জিএম কবি শামছুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের আংটিহারা, জোড়শিং, গোলখালী, ঘড়িলাল, দক্ষিণ বেদকাশী, পাতাখালি, চরামুখা, হলুদবুনিয়া, বিনাপানি গ্রামে ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। বড় ধরনের গাছ ভেঙে পড়েছে। অনেকের বসতবাড়ি ও মাছের ঘের বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে।
কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যন মোহাঃ হুমায়ুন কবির বলেন, গতকাল থেকে বিদ্যুৎ নেই, তবে মধ্য রাত থেকে কয়রা এলাকার বিভিন্ন স্থানে একটির পর একটি গাছ উপচে পড়ছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে শীতকালীন সবজির ক্ষেত, ধানের ক্ষেত, মৎস্য ঘেরসহ ফসলি জমি। এসব জমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেছে। ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অনেক ঘরবাড়ি বিধ্বস্থ হয়েছে। এতে করে ঐ সকল অসহায় লোকজন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। উত্তর বেদকাশি ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানি বলেন, গাজীপাড়া, গাববুনিয়া সহ বিভিন্ন এলাকার পাউবোর বেড়িবাধ ভয়াবহ ফাটল দেখা দিয়েছে। যে কারণে ভাংগন কবলিত এলাকার জনসাধারন রয়েছে আতংকে।