সরকারি নীতিমালা অপব্যবহারে দ্বৈতনীতির বলির পাঠা হয়ে আশাশুনিতে এক কলেজ শিক্ষক মানবেতর জীবন যাপনে বাধ্য হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রতিকার প্রার্থনা করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন কলেজ শিক্ষক মোঃ শাহাদাৎ হোসেন।
আশাশুনি সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের এমপিওভুক্ত শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেন লিখিত অভিযোগে জানান, কলেজটি ২০১৭ সালের ৯ জানুয়ারি সরকারিকরণ করা হয়। সরকারি করণ করা হলেও শিক্ষক আত্বীকরণের কাজ চলমান থাকায় শিক্ষক কর্মচারীগণের এডহক নিয়োগ হয়নি। ফলে বেসরকারি আমলের এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের আদলে বেতন-ভাতা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে গত ১ মে’১৯ তাং একটি হত্যা মামলার আসামি হন এবং ১৭ জুন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিজ্ঞ আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন। ১৫ জুলাই তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে কলেজে যোগদান করলে তাকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর না নিয়ে নতুন খাতায় স্বাক্ষর নেওয়া হচ্ছে। এমনকি কোন পত্রাদেশ ছাড়াই তাকে মাসিক ভাতাদি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনের রীটপিটিশন নং ৩৬৫৭/২০১৫ এর রায়ে বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষকের ৬০ দিনের বেশী সাময়িক বরখাস্ত না রাখার আদেশ এবং ওই দিনের বেশী সাময়িক বরখাস্ত রাখা হলে, তিনি বেতন ও অন্যান্য ভাতাদি প্রাপ্য হবেন, মর্মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকা স্বত্তেও তা কলেজের অধ্যক্ষ অমান্য করে তার বেতন ভাতাদি সম্পূর্ণ বন্ধ করে রেখেছেন। এসব নির্দেশনা সংযুক্ত করে গত ২৭ আগস্ট তিনি অধ্যক্ষ বরাবর মানবিক অসুবিধার কথা উল্লেখ করে বেতন ভাতাদি পেতে আবেদন করেন। তার পরেও তিনি মাহামান্য হাইকোর্টের রিটপিটশনের রায় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাকে অবজ্ঞা করে তাকে কোন প্রকার বেতনভাতাদি দেননি। অথচ ওই একই মামলার আসামি আশাশুনি মহিলা কলেজের প্রভাষক মোনায়েম হোসেন ও প্রভাষক আকবর হোসেনকে ঐ কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয় যথাক্রমে অর্ধবেতন ও পূর্ণ বেতন ভাতাদি প্রদান করছেন। ফলে একই মন্ত্রণালয়ের অধীন দু’টি কলেজের মধ্যে নীতি ভঙ্গ ও নীতি মানার দ্বৈতনীতি সচেতনমহলকে ভাবিয়ে তুলেছে। যার বলির শিকার প্রভাষক শাহাদাৎ হোসেনকে তার অধ্যক্ষ ঊর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষের পত্রাদেশ ছাড়াই জুন থেকে অক্টোবর মাস গত হলেও বেতন ভাতাদি প্রদান করেননি। বেতন ভাতা না পেয়ে পিতৃহারা কলেজ শিক্ষক পঙ্গু মাতা, স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। মহামান্য হাইকোর্ট ও শিক্ষামন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক তাকে পুর্ণাঙ্গ বেতনভাতাদি প্রদানের ব্যবস্থা নিতে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীত নিবেদন করেছেন। এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ ড. মিজানুর রহমান বলেন, তার বিরুদ্ধে মামলার বাদী পক্ষের আবেদন এবং শিক্ষক শাড়াদৎ হোসেনের আবেদন আমি ডিজি মহোদয়ের কাছে পাঠিয়েছি, ডিজি মহোদয় যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠান হয়। সেখান থেকে গৃহীত সিদ্ধান্ত প্রেরন করা হয়েছে, কিন্তু আমি হাতে পাইনি। তবে যতটুকু জেনেছি শিক্ষককে কারাগারে প্রেরনের দিন থেকে সাময়িক বরখাস্তের কথা বলা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত দিবেন তা বাস্তবায়ন করা হবে।