চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে “দলিত ও সমতলের আদিবাসীদের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত হেক” শীর্ষক গণশুনানী অনুষ্ঠিত হয়েছে। গণশুনানীতে আদিবাসীদের পক্ষ থেকে পৃথক মন্ত্রণালয়, পৃথক ভূমি কমিশন ও পৃথক মানবাধিকার কমিশন গঠনের দাবি উঠেছে। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপ (এপিপিজিস) এর উদ্যোগে ১৮ নভেম্বর সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের বরেন্দা গ্রামে রাধা-গোবিন্দ মন্দির চত্বরে ওই গণশুনানীর অনুষ্ঠানে দলিত এবং সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশ নেয়। গণ শুনানিতে আদিবাসীরা তাদের জীবনযাত্রায় প্রভাবশালীদের দ্বারা নানান নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরেন। এরমধ্যে ভূমি সংক্রান্ত অভিযোগ ছিলো সবচেয়ে বেশি। দলিত ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারী-পুরুষদের পক্ষ থেকে তাদের পূর্বপুরুষের শত বছরের ভোগ দখলীয় কৃষিসম্পত্তি, বসতভিটা, মন্দির, শশ্মানঘাট ও দেবত্তরসম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ ও বিতাড়িত করার অভিযোগ আনা হয়েছে। আদিবাসীরা বলেন কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সহায়তায় এক শ্রেণীর ভূমিদস্যু জাল কাগজপত্র তৈরী এবং জমিদারী ভুয়া পর্চার মাধ্যমে তাদের জমির রেকর্ডপত্রে পরিবর্তন এনে জবড়দখল ও আদালতে মামলা দিয়ে বছরের পর বছর হয়রানীর পাশাপাশি জীবন নাশের হুমকী দিয়ে আসছে। আদিবাসীরা বলেন, ক্ষমতাসীন প্রভাবশালীরা তাদের অনেক জমি দখল করে নিয়েছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) দেবেন্দ্র নাথ উরাঁও এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণশুনানীতে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদ সদস্য ও দলিত এবং সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্পর্কিত সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপের সভাপতি মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন দলিত ও সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্পর্কিত সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপের সদস্য-বদরুদ্দোজা মোঃ ফরহাদ হোসেন এমপি, আহমেদ ফিরোজ কবির এমপি, ডাঃ সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল এমপি, গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এমপি, ফেরদৌসী ইসলাম এমপি, সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপের সেক্রেটারি জেনারেল শিশির শীল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম খান, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা হেক্স/ইপিইআর’র কান্ট্রি ডিরেক্টর আনিক আসাদ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নাচোল উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল কাদের, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবিহা সুলতানা ও নাচোল থানার কর্মকর্তা ইন্চার্জ সেলিম রেজ, নাচোল উপজেলা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী একাডেমীর সভাপতি যতীন হে¤্রম ও রানী ইলামিত্র সংসদের সভাপতি বিধান সিং। উল্লেখ্য, গণশুনানীতে ২৭ জন ভুক্তভোগী তাদের অভিযোগ তুলে ধরেন। এর মধ্যে ১৭টি অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিক সমাধান দেয়া হলেও ১০টি অভিযোগের বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকায় সেগুলিতে লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে আইনি সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দেন দলিত ও সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্পর্কিত সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপের সদস্যবৃন্দ।