খুলনার পাইকগাছা থানা পুলিশ মৎস্যজীবী সমিতি সভাপতি আবদুস সালাম (৫৫) খুনের মোটিভ সহ আলামত উদ্ধার করেছে। মায়ের সাথে দীর্ঘদিনের পরকীয়া কারণে এ হত্যা মামলা ৩নং স্বাক্ষী আবুল হোসেন সালামকে খুন করে বলে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকারোক্তি করেছেন বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মিন্টু মিয়া জানিয়েছেন। এদিকে ঘাতক আবুল হোসেনের মা পূর্ব গজালিয়ার আনিছ গাজীর স্ত্রী রনজিলাকেও পুলিশ থানা হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান ওসি সহ সংশ্লিষ্টরা একাধিক বার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সূত্র জানায়, পূর্ব গজালিয়ার মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি আবদুস সালাম গাজী ওই নারীর সাথে দীর্ঘদিন পরকিয়ায় আসক্ত ছিল, যা ছেলে আবুল হোসেন দম্পতি জানতে পারে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ঘটনার দিনগত বুধবার (২০ নভেম্বর) রাত ৯ টার দিকে সালাম গাজী রাতের খাবার খেয়ে মোবাইলে কথা বলতে বলতে বাড়ী থেকে বের হয়ে রাস্তা দিয়ে নিজ চিংড়ী ঘেরের যাবার উদ্দেশ্যে মাত্র দেড়শো গজ দূরে পৌঁছালে আবুল হোসেন নতুন কুঁড়াল দিয়ে মাথায় উপুর্যপুরী ভাবে কুপিয়ে তাকে নির্মম ভাবে হত্যা করে। পরে কেহ যাতে বুঝতে না পারে তৎক্ষনাত সে মোবাইলে সালামের পরিবারকে জানায়। পরে মোবাইলটি পুলিশ ধান ক্ষেত থেকে ও হোসেনের স্বীকারোক্তি মতে গত (২৩ নভেম্বর) শনিবার বিকালে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত কুড়ালটি মিনহাজ নদী (বদ্ধ) থেকে উদ্ধার করে ওসি এমদাদুল হক শেখ। হত্যাকান্ডের ঘটনায় পূর্বশত্রুতার জের ও সন্দেহ বসত নিহতের ছেলে সেলিম বাদী হয়ে স্থানীয় এক সাংবাদিকসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করলে পুলিশ এজাহার নামীয় আফসার ঢালী, মনিরুল ও সাংবাদিক আবদুর রহমানকে আটক করে।
পাইকগাছা সাংবাদিক জোটের যুগ্ম আহ্বায়ক ও খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক প্রবাহের সাংবাদিক এসএম আ. রহমানের নাম এজাহারভুক্ত করায় স্থানীয় সাংবাদিকরা ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন। হত্যার নেপথ্যের কারণ হিসাবে সালামের পরকীয়া জড়িত এবং ঘটনায় ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করে থানা পুলিশ। অথচ অধিকতর তদন্ত না করেই হত্যা মামলায় সাংবাদিক এসএম আবদুর রহমানকে এজাহারভুক্ত আসামি এবং জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ। সাংবাদিক নেতারা বলেন, একজন মানুষকে কুপিয়ে হত্যা করা সাংবাদিকদের কাজ হতে পারে না। তাছাড়া ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত সিনিয়ার সাংবাদিক রহমানের বাড়ি উপজেলার কপিলমুনি। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি কপিলমুনি বাজারে আড়তদারী ব্যবসা করেন। সাংবাদিকরা বলেন, আমরা চাই নৃশংস হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। তবে এই মামলায় যেন কোনো নিরীহ ব্যক্তি হয়রানীর শিকার না হয়। সাংবাদিক রহমান এজাহার ভুক্ত আসামি হলেও ব্যবসায়ী দ্বন্দের কারণে এজহারে তার নাম এসেছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানান সাংবাদিকরা।
ঠিক কি কারণে তাকে এজহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে তার কোনো উত্তর নেই সাংবাদিক পরিবারের কাছে। হত্যা মামলায় জেল হাজতে প্রেরণ করার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ সহ সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সাংবাদিক পরিবার।
এদিকে সিনিয়র সাংবাদিক আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মিথ্যা মামলায় তীব্র নিন্দা ও মামলা প্রত্যাহারে দাবী জানিয়েছে বিবৃতিদিয়েছেন পাইকগাছা সাংবাদিক জোট। বিবৃতিদাতারা হলেন আহ্বায়ক প্রকাশ ঘোষ বিধান, যুগ্ম আহ্বায়ক যথাক্রমে শেখ মুহাঃ আবদুস সালাম, শেখ আবদুল গফুর, সদস্য সচিব পলাশ কর্মকার, সদস্য এইচ এম এ হাশেম, জিএম আসলাম হোসেন, জিএম এমদাদ, জিএম মোস্তাক আহম্মেদ, শেখ সেকেন্দার আলী, একে আজাদ, মহানন্দ অধিকারী মিন্টু, মো. রফিকুল ইসলাম খান, জিএম মোস্তাক আহম্মেদ, মিলন দাশ, সম নজরুল ইসলাম, জগদীশ দে, আ. সবুর আল-আমিন, এইচ এম জিয়াউর রহমান ও দীপ অধিকারী প্রমুখ।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক শেখ খুনের মোটিভ ও আলামত উদ্ধার সহ এ প্রসঙ্গে বলেন, এ ঘটনায় কোনো নিরাপরাধ মানুষের হয়রানী হবার সুযোগ নেই।