সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে দায়িত্ব পালন শেষে গত রোববার দুপুরে বাসায় ঘুমন্ত অবস্থায় বাংলাদেশী শ্রমিক মো. মাহিন ভূইয়া (৩৫) মারা গেছেন। গত সোমবার নিহতের ভাই তাদের ভাই মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন। এ খবরে নিহত মাহিনের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় চলছে শোকের মাতম। পরিবারের সবচেয়ে ছোট ছেলেকে হারিয়ে মা জাহানারা বেগম বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন। নিহত মো. মাহিন ভূইয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের বাড়াই গ্রামের মৃত লাল মিয়া ডিলারের ছেলে।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ছয় ভাই আর দুই বোনের মধ্যে মো. মাহিন ভূইয়া সবার ছোট। ২০১৫ সনে সৌদি আরবে চাকুরী করতে যান। সেখানে একটি কোম্পানীতে রাতের বেলায় চাকুরী করতেন। গত শনিবার রাতে কাজ শেষে রোববার সকালে বাসায় ফেরেন। রোববার দুপুর বেলায় ঘরে এসির সিলিন্ডার বিষ্ফোরণ ঘটে অগ্নিকা-ে মুহুত্বের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। মাহিন ভূইয়াসহ দুই জন বাংলাদেশী শ্রমিক তখন ঘুমিয়ে ছিলেন। অগ্নিকান্ডের সময় তারা ঘর থেকে বের হতে পারেননি। ঘটনাস্থলেই দুই জন মারা যান। সৌদি আরবের পুলিশ দুই জনের লাশ উদ্ধার করে দাম্মামের একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়।
খবর পেয়ে সৌদি আরবের অন্য একটি শহরে থাকা মাহিনের দুইভাই মো. মাহফুজ ও আবু ছায়েম গত সোমবার দাম্মাম হাসপাতালে গিয়ে মাহিন ভূইয়ার লাশ সনাক্ত করেন। নিহতের ভাই মো. মাহফুজ ও আবু ছায়েম বাড়িতে ফোন করে মাহিনের নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) নিহত মাহিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে তার বাড়িতে আত্মীয় স্বজরা এসেছে। পুত্র শোকে বৃদ্ধ মা জাহানারা বেগম বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন। তাঁর মাথায় পানি ঢালা হচ্ছে। বোনেরাও ভাইয়ের শোকে কান্না করছেন।
মা জাহানারা বেগম সাংবাদিকদের নিকট বলেন, ২০১৫ সনে তার ছেলে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। এবার বাড়িতে এসে বিয়ে করার কথা। বিয়ের জন্য কয়েকটি মেয়েও দেখেছেন। তিনি বলেন ১০/১২দিন আগে শেষ বারের মত ফোন করেছে মাহিন। সে বলেছিল মা এবার দেশে এসে বিয়েসাদি করে দেশেই কিছু করব। কিন্তু জীবিত ছেলেতো দেশে আসতে পারেনি। তিনি সরকারের কাছে দাবী জানিয়েছেন তার ছেলের লাশটি যেন দ্রুত আনার ব্যবস্থা করে দেন যাতে শেষ বারের মত আদরের ছেলের মুখটি দেখতে পারেন।