বগুড়ার নন্দীগ্রাম সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় কুমড়বড়ই তৈরী করে স্বাবলম্বী হবার স্বপ্ন দেখছে গৃহবধুরা। স্থানীয় ভাবেস্বাস্থ্য সম্মত তৈরী সুস্বাদু কুমড়বড়ই দিন দিন আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। শীতের শুরতে এর ব্যপক চাহিদা থাকায় গোটা অঞ্চলে এ জনপ্রিয় খাবার কুমড়বড়ই তৈরী করার ধুম পড়েছে।
জানা যায়, জেলা সহ বিভিন্ন স্থানে এই কুমড়বড়ই এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ঘরেঘরে বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের গৃহবধুরা শীত মৌসুমী খাবার হিসেবে কুমড়াবড়ই তৈরী করে থাকে। মাশকালাই ডাল দিয়ে তৈরী করা হয় এই সুস্বাদু খাবার। শুধুমাত্র শীতের সময়ই নয়, প্রায় ১২ মাসই তেরী করা হয় তরকারীতে ব্যবহৃত এই শুস্বাদু কুমড়বড়ই এখন সর্বত্বই মেলে। যা সারা বছরের খাদ্য হিসেবে এর জনপ্রিয়তা দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জেলার নন্দীগ্রাম এলাকায় এখন পুরোদমে চলছে কুমড় বড়ই তৈরীর আয়োজন। যে কারণে উপজেলার সর্বত্ব হাট-বাজারে কুমড়বড়ই পাওয়া যাচ্ছে। কুমড়াবড়ই’র তরকারি ছাড়াও প্রায় সব ধরনের তরকারীর সাথে কুমড়বড়ই সহযোগী উপাদান হিসেবে খাওয়া যায়। এছাড়াও আলাদা ভাবে ভর্তা করেও খাওয়া যায়।
নন্দীগ্রাম উপজেলার নুন্দহ, কল্যাণনগর, হাটধুমাসহ বিভিন্ন গ্রামে কুমড়াবড়ই তৈরীকারি গৃহবধুদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চলতি শীত মৌসুমে নন্দীগ্রাম উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে কুমড়াবড়ই তৈরীর ধুম পড়েছে। বিশেষ করে উপজেলার কল্যাণনগর ও হাটধুমা গ্রামে বেশিরভাগ কুমড়বড়ই তৈরী করা হয়। কুমড়বড়ই তৈরীর পর স্থানীয় ও পার্শ¦বর্তী উপজেলার ব্যবসায়ীরা এসে ক্রয় করে নিয়ে যায়।
এতে নিজেদের খাবারের পাশাপাশি বিক্রয় করে বাড়তি আয় করার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। হাটধুমা গ্রামের হাজেরা বেগম বলেন, কুমড়াবড়ই তৈরী করার জন্য প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয় মাশকালাই ডাল। এ ডাল দিয়ে তৈরী করা কুমড়াবড়ই সবচেয়ে বেশি সুস্বাদু হয়। তবে এর সঙ্গে চাল মিশিয়ে যে কুমড়াবড়ই তৈরী করা হয় তার চাহিদা থাকলেও তেমন সুস্বাদু হয় না।
কুমড়াবড়ই তৈরীর প্রক্রিয়া হিসেবে হাজেরা বেগম আরো বলেন, সারারাত পানিতে মাশকালাই ডাল ভিজিয়ে রাখার পর তা খুব ভাল ভাবে পিষে কুমড় বড়ই তৈরী করে তার কড়া রোদে শুখানোর পর তৈরী প্রক্রিয়া সম্পন্য করা হয়। তৈরী করা কুমড় বড়ই পরিস্কার পাতলা কাপড়ের ওপর রোদে শুকাতে হয়। দেড় থেকে দুইদিন শুকানোর পর কুমড় বড়ই খাবার উপযোগী হয়। এরপর বিক্রি প্রক্রিয়ার জন্য এরপর ব্যবসায়ীদের নিকট পাইকারী দরে এবং সাধারণ ক্রেতাদের কাছে খুচরা দরে বিক্রয় করা হয়ে থাকে।
উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে কুমড়বড়ই বিক্রেতা কার্তিক চন্দ্র বলেন, মাশকালাই থেকে তৈরী করা কুমড়াবড়ই প্রতি কেজি ২৫০ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। তিনি আরো জানান, সাধারন প্রক্রিয়ায় তৈরী করা অন্যান্য কুমড় বড়ই প্রতি কেজি ১৫০/১৬০ টাকা দরে বিক্রয় করা হয়ে থাকে। চাহিদার অনুপাতে নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে কুমড়বড়ই তৈরীর ধুমপড়ে। বিশেষ করে শীত মৌসুমে কুমড় বড়ির বাড়তি চাহিদা থাকলেও এখন সারা বছর এর চাহিদা থাকে। ফলে এর উৎপাদন প্রক্রিয়ার সারা বছর চলতে থাকে। যে কারণে জেলার বিভিন্ন পল্লীতে কুমড়বড়ই তৈরী করে গ্রাম্য গৃহবধুরা এখন স্বাবলম্বী হবার চেষ্টা করছে এবং এর আগে অনেক গৃহবধু কুমড়াবড়ই তৈরী করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।