শাবিপ্রবির এ উদ্যোগকে স্বাগত জানানো সাথে আমাদের, দেশের শান্তিপ্রিয় সর্বসাধারণ এবং সচেতন অভিভাবকদের পক্ষ থেকে শত-সহস্ত্র অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। আমরা জানতে পেরেছি ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন শ্রেণি/পেশার মানুষ ভর্তির ও চূড়ান্ত পরীক্ষার আগে ডোপ টেস্টের মতো প্রশংসনীয় কার্যক্রম নেয়ায় শাবিপ্রবিকে স্বাগত জনিয়েছে। কেননা আমরা এ যাবত দেখেছি, পূর্বে মাদকাসক্ত না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর অনেক শিক্ষার্থী মাদকে জড়িয়ে যায়। এতে একদিকে যেমন তার আর্থিক ক্ষতি হয়, অন্যদিকে তার শিক্ষা কার্যক্রমও ব্যাহত হয়। সর্বশেষ ওই শিক্ষার্থী সন্ত্রাসী কর্মকা-ে জড়িয়ে পরে। শিক্ষার্থীদের ভর্তির পূর্বে ও চূড়ান্ত পরীক্ষার আগে ডোপ টেস্ট নিলে এ অবস্থার পরিবর্তন হবে বলে আমরা আশা করি।
ইতোপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও চূড়ান্ত পরীক্ষার আগে ডোপ টেস্ট চালুর সুপারিশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। সম্প্রতি কমিটির এক বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি কার্যক্রম তদারকির সময় ডোপ টেস্ট কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে বলে আমরা মনে করি। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তির পূর্বে ডোপ টেস্ট মাদক নিয়ন্ত্রণে অধিক ফলপ্রসূ হবে বলে আশা করছেন দেশের শিক্ষাসংশ্লিষ্টরাও। ওই বৈঠকে দেশকে মাদকের অভিশাপ থেকে মুক্ত রাখতে এবং শিক্ষিত ও সুস্থ জাতি উপহার দিতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির আগে এবং চূড়ান্ত পরীক্ষার আগে কমিটি ডোপ টেস্ট সিস্টেম চালু করার পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করে। সম্প্রতি সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রথম বর্ষে ভর্তির আগে ‘ডোপ টেস্ট’ পদ্ধতি চালু করেছে। শিক্ষার্থী মাদকাসক্ত কি না, তা পরীক্ষা করেই এবার প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করেছে শাবিপ্রবি। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে নবীন শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্ট নিয়ে ভর্তির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে মাদকমুক্ত রাখতেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এছাড়া সরকারি চাকরিতে প্রবেশের পূর্বে প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট বা মাদক পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। ইতোমধ্যে জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে মাদক পরীক্ষা শুরু করেছে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান। প্রার্থীর মাদক পরীক্ষার ফল নেতিবাচক হলে তিনি চাকরির জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবেন বলে জানা গেছে। আমরা আশা করি, ডোপ টেস্টের বিষয়টি বাধ্যতামূলক করলে যুবসমাজের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়া, নিয়োগের সময় এ পরীক্ষা করলে শিক্ষার্থীরা সচেতন হবে, ভীতি তৈরি হবে। মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতিও বাস্তবায়ন হবে।
দেশকে মাদকমুক্ত করতে গেলে নানাভাবে নানা পর্যায়ে কাজ করতে হবে। এখন চাকরিতে প্রবেশের পূর্বে ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির পূর্বে যদি মাদক পরীক্ষা করা হয় তাহলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়বে। যেহেতু চাকরি করতে গেলেও ডোপ টেস্ট দিতে হবে; এ জন্য সে আর মাদকে জড়াবে না বলে আমরা আশা করি। তাই শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যোগটি অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।