যশোরের মণিরামপুরে সদ্য সমাপ্ত দুই পিইসি পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্ন ফাঁসসহ অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় জড়িত ৩ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনার সাথে জড়িত ৩ প্রধান শিক্ষককে বিভাগীয় উপপরিচালক বরাবর বরখাস্তের সুপারিশ করা হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসার সেহেলি ফেরদৌস নিশ্চিত করেন। বরখাস্তকৃতরা হলেন উপজেলার বাগডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সৌমিত্র রায়, মশ্মিমনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যায়ের সহকারি শিক্ষক মনিরুজ্জামান এবং হাজরাকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শ্যামল কুমার সরকার।
জানাযায়, চলতি পিইসি পরীক্ষায় গত ২০ নভেম্বর সাধারন বিজ্ঞান পরীক্ষার দিন উপজেলার পোড়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ধর্ম পরীক্ষার দিন মশ্মিমনগর কেন্দ্রে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটে। বিজ্ঞানের প্রশ্ন কেন্দ্রে আসা মাত্রই কেন্দ্র সচিব পরিমল বাবুর মাধ্যমে নৈশ প্রহরী কাম-দপ্তরী মাসুদ রানার হাত হয়ে চলে যায় পার্শ্ববর্তী বাগডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সৌমিতের হাতে। তিনি প্রশ্নের সমাধানকৃত উত্তরপত্র একই এলাকার আড়সিংগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফটোকপি মেশিনে ৪টি কপি করেন। এর একটি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামছুর রহমান রেখে দিয়ে সহকারি শিক্ষক মিন্টুর মাধ্যমে কেন্দ্রে পৌছে দেন। বাকী ৩ কপি নিয়ে মাছুদ রানাও চলে যায় কেন্দ্রে।
কেন্দ্রে উপস্থিত দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা, কেন্দ্র সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে পরীক্ষার রুমে রুমে সরবরাহ করার খবর পেয়ে এ্যসিল্যান্ড সাইয়েমা হাসান সেখানে ঝটিকা অভিযান চালান। তিনি আড়সিংগাড়ী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিবের কাছ থেকে উত্তরপত্র উদ্ধার করেন। ওই দিনই ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফীর নির্দেশে শিক্ষা কর্মকর্তা সেহেলী ফেরদৌস জড়িতদের অফিসে তলব করে কেন্দ্র সচিব পরিমল, সহকারি শিক্ষক সৌমেনসহ ঘটনার সাথে জড়িত থাকা ১৮ শিক্ষক-কর্মচারীকে ওই সময় শোকজ করেন।
অপর দিকে ধর্ম পরীক্ষার দিন উপজেলার মশ্মিমনগর কেন্দ্রেও একই ঘটনা ঘটলে ঝটিকা অভিযান চালান এ্যসিল্যান্ড সাইয়েমা হাসান। ওই সময় কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারি পল্লী উন্নয়ন অফিসার গোপাল গোলদার, কেন্দ্র সচিব শামীমা সুলতানা, হল সুপার ফারহানা, সহকারি হল সুপার ইমান আলীকে অব্যহতি দেয়া হয়।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার সেহেলি ফেরদৌস জানান, দুই কেন্দ্রে অনিয়মের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলম জানান, ঘটনায় জড়িত ৩ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে লিখিত সুপারিশ উপপরিচালক বরাবর পাঠানা হয়েছে।