‘ঠান্ডাতে মরি গেনু বাহে, এইদন ঠান্ডা কেমন করি সহ্য করং। ঠান্ডাত আইত নিন্দও ধরে না, কাইও একান কম্বলও দেয় না। তোমরা মোক একান কম্বল দিবেন বাও’ কথাগুলো বলছিলেন উপজেলার নাওড়া গ্রামের শীতার্ত আমেনা বেওয়া (৭৪)।
গত দু দিন ধরে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া শৈত্য প্রবাহ ও হিমেল হাওয়ার প্রভাব পড়েছে। দিনের বেশি ভাগ সময় সূর্যের দেখা মিলছে না। ফলে প্রচন্ড শীতে উপজেলা জুড়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বিভিন্ন স্থানে শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। বুধবার সকালে উপজেলার কয়েকটি এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বুধবার সকাল ৯ টা পর্যন্ত কুড়িগ্রামে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে করা হয়েছে বলে রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্য সূত্রে জানা গেছে ।
ঠান্ডার প্রকোপ যতই বাড়ছে শীতবস্ত্রের অভাবে মানুষ ক্রমেই কাবু হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে তিস্তা ও ব্রহ্মপূত্র নদ বেষ্ঠিত চলাঞ্চলের ছিন্নমুল মানুষ নিদারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে।
এদিকে উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নে শীতার্ত অসহায়ও দুস্থ্যদের মাঝে সরকারীভাবে ৯ হাজার কম্বল বরাদ্দ দেয়া হলেও তা পৌছায়নি বেশিরভাগ এলাকায়।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ইউপি সদস্য জানান, যে পরিমাণ কম্বল পেয়েছি তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তাই বিতরণ করতে হিমশিম খাচ্ছি।
রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, আগামী দু একদিন তাপমাত্রা আরও হ্রাস পাবে। সেই সাথে ২৪-২৫ ডিসেম্বর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাতেরও সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজ উ দ্দৌলা বলেন, গত এক মাস ধরে ইউনিয়নগুলোতে শীতার্তদের জন্য কম্বল বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। কম্বল নিয়ে গিয়ে যদি কেউ বিতরণ না করে সেটা দুঃখজনক। তবে তবকপুর ও উপজেলার সীমান্তবর্তি সাহেবের আলগা ইউনিয়ন এখন পর্যন্ত কম্বল নিয়ে যায়নি।