দির্ঘ পাঁচ বছর অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকা লালমনিরহাট নার্সিং কলেজে প্রয়োজনীয় জনবল ও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ছাড়াই একাডেমিক কার্য্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে।
ইতিমধ্যে নার্সিং কলেজটিতে ভর্তি বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয়েছে বলে বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে নার্সিং-মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের কো অর্ডিনেটর খায়রুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তবে, কলেজটিতে শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন, লালমনিরহাট সিভিল সার্জন (সিএস) ডা. কাশেম আলী ও সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক গোলাম মোহাম্মদ।
জানা গেছে, ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর লালমনিরহাট নার্সিং কলেজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভবনসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ সমাপ্ত হয় ২০১৪ সালে। এর মাঝে পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও নিয়োগ করা হয়নি কলেজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল। ফলে দির্ঘদিনেও চালু করা যায়নি একাডেমিক কার্য্যক্রম।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে সরেজমিন লালমনিরহাট নার্সিং কলেজ ক্যাম্পাস গেলে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় কলেজের প্রভাষক ইউসুফ আলীর সাথে।
তিনি জানান, পাঁচবছর আগেই সাড়ে ৫ একর জায়গায় কলেজের প্রয়োজনীয় ভবনসহ বাউন্ডারি ওয়ালের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে আইনী ঝামেলার জন্য বাউন্ডারি ওয়ালের ১শ ফুটের মতো ওয়াল এখনো খোলাই রয়েছে। ফলে ওইদিক দিয়ে এলাকার লোকজন অবাধে চলাচল করছে।
২০২০ সালে এই কলেজে ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি ৩বছর মেয়াদী কোর্সের প্রথম ব্যাচে ২৫জন নারী, ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি ৩বছর মেয়াদী কোর্সের প্রথম ব্যাচে ৫জন পুরুষ ও ৪৫জন নারী এবং বিএসসি ইন নার্সিং ৪বছর মেয়াদী কোর্সের প্রথম ব্যাচে ৫জন পুরুষ ও ৪৫জন নারী শিক্ষার্থী ভর্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখানে প্রতিবছর তিন বিভাগে মোট ১২৫ শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবেন। এর মধ্যে ১০জন পুরুষ ও ১১৫জন নারী।
তিনি আরো বলেন, কলেজে কেয়ার টেকার না থাকায় তাকেই কলেজের কেয়ার টেকার এবং নাইট গর্ডের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।
লালমনিরহাট নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ ছাহেবা বেগম বলেন, চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি যোগদান করার পর কয়েক দফায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে কলেজ ক্যাম্পাসের অসমাপ্ত বাউন্ডারি, প্রধান ফটকের রাস্তা, আবাসিক হোস্টেলের নিরাপত্তা প্রাচীর এবং ক্যাম্পাসে মাটি ভরাট ও জনবল নিয়োগের চিঠি দিয়েছি। সরকারী নিয়ম-কানুনের জন্য দেরি হচ্ছে। তবে আগামী বছরের জানুয়ারি মাসেই শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, লালমনিরহাট নার্সিং কলেজের একাডেমিক কার্য্যক্রম চালুর বিষয়ে লিখিত কোনও কাগজ হাতে পান নি দাবি করে লালমনিরহাট সিভিল সার্জন (সিএস) ডা. কাশেম আলী বলেন, আমি শুনেছি এবার লালমনিরহাট নার্সিং কলেজ চালু করা হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তেমন কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তবে ইতিমধ্যে কলেজে একজন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও ২ জন প্রভাষক নিয়োগ করা হয়েছে।
নার্সিং মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের কো অর্ডিনেটর খায়রুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থী ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। খুব শিঘ্রই কলেজে জনবল নিয়োগ করা হবে।
আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করা কেন হয়নি এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকৌশল বিভাগ ভাল বলতে পারবেন।