চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলায় চাইনিজ (চায়না) কমলা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন ওমর ফারুক নামে এক কৃষক। উপজেলার নিধিকুন্ডু গ্রামে এক বিঘা জমিতে তৈরি বাগানে ৮৫টি কমলা গাছের প্রত্যেকটি থেকে ৮০-৯০ কেজি কমলা উৎপাদন করছেন এবং প্রায় ২ কোটি টাকার কমলার চারা বিক্রির আশা করছে তিনি।
এদিকে ৩ বছর বয়সী মনমুগ্ধকর কমলা বাগানটিতে প্রচুর কমলা ধরেছে। আর ওই বাগানের সৌন্দর্য্য অবলকনে প্রতিদিন কয়েক হাজার দর্শনার্থী ভিড় করছেন সেখানে। নিজ জেলাসহ অন্য জেলারও মানুষ জন ছুটে আসছেন বাগান ও ওমর ফারুকের সফলতার গল্প শুনতে। শুধু তাই নয় কোন মূল্য ছাড়িই দর্শনার্থীদেরও খাওয়ানো হয় কমলা।
সরেজিমন নিধিকুন্ডু গ্রামে কমলা বাগানে গিয়ে কৃষক ওমর ফারুকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ২০১৫ সালে খুলনার এক বন্ধুর বাড়ি থেকে কমলা গাছের ডাল কেটে এনে কলম করে ৮৫টি চারা গাছ করেন। এরপর ২০১৬ সালে তিনি ৩৩ শতাংশ জমিতে এই ৮৫টি কমলা গাছ রোপন করেন। প্রথম বছরই কমলা ধরতে শুরু করে বাগানে। এরপর ২০১৮ সালে এই গাছ গুলোর এক একটিতে প্রায় ৩৫-৪০ কেজি কমলা ধরে। সেই কমলা তিনি ৮০-৮৫ টাকা দরে বিক্রি করেন। একই সাথে তিনি সেই কমলা গাছের ডালে কলম পদ্ধতিতে চারা তৈরি করেন। প্রতিটি চারা ১০টাকা দরে বিক্রি করেন। ২০১৯ সালে তার বাগানের প্রতিটি গাছে ৮৫-৯০ কেজি করে কমলা ধরে। ৮৫টি কমলা গাছে প্রায় ৭ লাখ টাকার চাইনিজ কমলা উৎপাদন হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৯ সালে তিনি প্রায় ৩০ হাজার চাইনিজ কমলার চারা উৎপাদন করেছেন। এখান থেকে প্রায় ২ কোটি টাকার চারা বিক্রি হবে বলে জানান তিনি।
ওমর ফারুক আরও জানান, গত ২ বছরে তার কাছ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কৃষকরা চারা নিয়ে গিয়ে চাইনিচ কমলা বাগান করেছেন। শুধু তার এলাকাতেই প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে এই বাগান করেছে কৃষকরা। তার বাগানে উৎপাদিত কমলা দেখতে যেমন সুন্দর এবং তেমনি সু-স্বাদু। তিনি ৯ বিঘা জমিতে চারা উৎপাদন করছেন। এই চারা দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় ছড়িয়ে দিতে চান। আগামীতে যাতে চাইনিজ কমলা বিদেশে থেকে আমদানি না করা হয় সেই জন্য তিনি এই লাভজনক কাজে কৃষকদের এগিয়ে আসতে আহবান জানিয়েছেন।
কৃষক ওমর ফারুকের ছেলে আকাশ খান জানান, তাদের বাগানের যে চাইনিজ কমলা উৎপাদন হচ্ছে তা বাজারের কমলার চেয়ে কিছুটা বড়। এই কমলা বাগানের খবর পেয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা ভির জমাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। শুধু তাই নয় কমলা ছুয়েও দেখছেন ছবিও তুলছেন। আর প্রতিদিন দর্শনার্থী কিংবা চাষীরা এখান থেকে চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। দর্শনার্থীদেরও কমলা খাওয়ানো হচ্ছে। এ ছাড়া যারা কমলা বাগান করতে আগ্রহী তাদের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।