ফরিদপুর জেলার ভাঙা উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১১৩ জন প্রধান শিক্ষক জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। সোমবার প্রধান শিক্ষকগন বাই পোষ্টে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। একই সাথে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। স্মারকলিপিতে প্রধান শিক্ষকগন উল্লেখ করেন গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বরাদ্দকৃত অস্থায়ী স্কুলঘর মেরামত, রুটিন মেইনটেন্স সহ আনুসঙ্গিক কিছু কাজের জন্য বরাদ্দ আসে। বরাদ্দকৃত টাকা দিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকৌশলী, স্কুলের প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সম্বয়নে কাজ করা হয়।
গত কয়েকদিনে এসব কাজের তদারকির জন্য উপজেলা ক্ষুদ্র ও কৃষি ঋণ ব্যবস্থাপক শাহ আলম, একটি বাড়ি একটি খামার কর্মকর্তা গালিব হোসেন ও যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোজাফফার হোসেন সব স্কুলগুলো পরিদর্শন করেন। ওই তিন কর্মকর্তা পরিদর্শন শেষে শিক্ষকদের সাথে অসদাচরন সহ বাজে আচরণ করেন। একই সাথে তাদের সাথে দেখা করার জন্য বলে আসেন নতুবা তাদের বিরুদ্ধে উপর মহলে রিপোর্ট প্রদান করা হবে। স্কুল গুলোর প্রধান শিক্ষকগন তাদের সাথে দেখা না করায় তারা পুনরায় সকল শিক্ষককে হুমকি প্রদান করেন। এসব বিষয় নিয়ে উপজেলা ১১৩ জন প্রধান শিক্ষক ঘটনার প্রকৃত সত্য উৎঘাটন সহ ওই তিন কর্মকর্তার বিচারের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত তিন কর্মকর্তার সাথে যোগযোগ করা হলে তারা জানায়, প্রশাসনের পক্ষ হতে আমাদের প্রতিটি স্কুল তদন্ত করে দেখতে বলায় আমরা বিভিন্ন স্কুলে যাই। প্রধান শিক্ষকগন স্মারকলিপিতে যে চাঁদা দাবির কথা লিখেছে তা সত্য নয়।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুকতদিরুল আহম্মেদ জানায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবছরে অনেক টাকা বরাদ্দ এসেছে। অভিযোগ ছিল টাকার অপব্যবহার হচ্ছে তাই প্রশাসনের পক্ষ হতে ওই তিন কর্মকর্তাকে ঘটনাটি তদন্ত করা নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে প্রধান শিক্ষকগন যে স্মারকলিপি প্রধান করেছেন তাতে যেসব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে তা যদি সত্যি হয় তবে তদন্ত সাপেক্ষে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সরকারি কর্মকর্তা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আসলাম জানায়, সরকারি টাকা বরাদ্দ আসছে। আমরা ওই টাকা নিয়ম মাফিক প্রতিটি স্কুলে বরাদ্দ দিয়েছি এবং কাজের তদারকি করেছি। ওই কমিটিতে উপজেলা প্রকৌশলী, স্কুলের প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির লোকজন থাকায় সেখানে দুর্নীতির কোনো সুযোগ নাই। তারপরেও কোনো প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন প্রধান শিক্ষক গণ জেলা প্রশাসক বরাবর যে অভিযোগ দিয়েছে তা আমার দপ্তরেও আসছে। এই তিন কর্মকর্তার মধ্যে ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্পের কর্মকর্তা শাহ ্আলম এবছরের পিএসসি পরীক্ষায় ৮০ জন কোমলমতি শিক্ষার্থীর অনৈতিক ভাবে খাতা আটকে রাখে। সেসময় শিক্ষক, অভিভাবকদের তোপের মুখে পড়েছিলেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে ফরিদপুর-৪ আসনের সাংসদ মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন একটি তদন্ত টিম গঠন করে দিয়েছেন।
সমগ্র বিষয় নিয়ে প্রধান শিক্ষকগন দাবি করেন শিক্ষকদের সাথে উপজেলা প্রশাসনের ২য় শ্রেণির কর্মকর্তাগণ যে অসদাচরন করেছে এবং শিক্ষকদের কাছে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছে তা বর্তমান সমাজকে কুলশিত করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেখানে সমাজ থেকে দুর্নীতি নির্মুলে সর্বদা সতেষ্ট সেখানে প্রকাশ্যে এসব কর্মকর্তা সমগ্র উপজেলার শিক্ষকদের কাছে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে জঘন্য অপরাধ করেছেন। তাদের দাবি জেলা প্রশাসক মহোদয় সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনবে।