দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবৈধ গাইড বইয়ের ব্যবহার ও ক্লাস চলাকালে কোচিং বন্ধের ঘোষনা দিযেছেন উপজেলা প্রশাসন। আজ বুধবার এ ঘোষনা দেয়ার পরপরই বেলা সাড়ে ১২টায় শহরের বিভিন্ন পাঠ্য বইয়ের দোকানে ও গুদাম ঘরে গাইড বই বিরোধি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়। এ সময় শহরের পুস্তক ব্যবসায়ীদের আতংক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে দোকান বন্ধ করে দেন। তবে উচ্চতর আদালতের রীট আদেশের কপি দেখানোয় থেমে যায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান।
আজ বুধবার সকাল ১১ টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর আয়োজিত আন্তঃশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও উপজেলা পর্যায়ে ‘শুদ্ধ সুরে জাতীয় সংগীত’ প্রতিযোগিতা আয়োজনের প্রস্তুতিমূলক এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহনাজ মিথুন মুন্নী। সভায় অনুষ্টানের প্রধান অতিথি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ হাফিজুল ইসলাম প্রামানিক, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিরাজুল ইসলাম, একাডেমিক সুপারভাইজার বিভাষ বর্মন ও সরকারি বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোক্তারুল আলম বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে উপজেলার ৭৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ৩৯ টি মাদ্রাসার সুপারিনটেন্ডস উপস্তিত ছিলেন।
সভায় পার্বতীপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ হাফিজুল ইসলাম প্রামানিক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহনাজ মিথুন মুন্নী তাদের বক্তব্যে জোরালো ভাবে ঘোষনা করেন, পার্বতীপুর উপজেলার কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা গাইড বই নিয়ে আসতে পারবে না। পার্বতীপুরে কোন পুস্তক ব্যবসায়ীকে অবৈধ গাইড বইয়ের ব্যবসা করতে দেয়া হবে না। প্রয়োজনে গাইড বইয়ের ব্যবসা বন্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে। এছাড়া স্কুল চলাকালে কোচিং চালানো যাবে না। এমপিও ভূক্ত কোন শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যে যুক্ত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ঘোষনার পরপরই বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পার্বতীপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আবু তাহের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান শহরের তুষার লাইব্রেরীতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করতে যান। কিন্তু লাইব্রেরী মালিক গাইড বই বিক্রি সংক্রান্ত হাইকোর্টের একটি রীট আদেশের কপি প্রদর্শন করলে ওই পুস্তক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে তিনি ফিরে আসেন বলে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জানান। রীটের কপিটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। মিথ্যা প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে তিনি জানান।
এদিকে, পার্বতীপুর উপজেলার ২০৭ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৭৩ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩৯ মাদ্রাসার হাজার হাজার শিক্ষার্থীর মাঝে গাইড বই বিক্রির জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সভাপতিকে লাখ লাখ টাকার আর্থিক সুবিধা দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের গাইড বই কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে ঢাকার গাইড বই প্রকাশনা সংস্থা পাঞ্জেরী পাবলিকেশন ও লেকচার পাবলিকেশনের স্থানীয় বিক্রয় প্রতিনিধিরা এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গাইড বই বিক্রি করতে দিন-রাত সারা উপজেলা চষে বেড়াচ্ছেন বলে নাম প্র্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান।