রাজশাহীর বাঘায় ঠিকাদারের বিরুদ্ধে নি¤œমানের ইট দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগ পেয়ে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন উপ-সহকারী প্রকৌশলী। এ সময় ঠিকাদারের ছেলে ওই উপজেলা প্রকৌশলীকে তার অফিসে রোববার (১৯ জানুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে মারপিট করে লঞ্চিত করে। ঘটনার পর পরই উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আধাবেলা কলম বিরতি পালন করেন।
এ ঘটনায় সোমবার (২০ জানুয়ারি) উপজেলার সকল সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত কলম বিরতি পালন করেন। উপ-সহকারী প্রকৌশলী বাদী হয়ে বাঘা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরে বাঘা উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) অফিস থেকে হাবাসপুর এলাকায় ৩৮ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ৫০০ মিটার সাব-বেইজ রাস্তা নির্মাণ কাজের বরাদ্দ পায় রাজশাহীর “মমো এন্টার প্রাইজ’’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরবর্তীতে এই কাজটি ক্রয় করে নির্মাণ কাজ শুরু করেন স্থানীয় ঠিকাদার ও বাঘা পৌর আ.লীগের সভাপতি আবদুল কুদ্দুস সরকার। এ কাজটি দেখভাল করেন ঠিকাদারের বড় ছেলে সেলিম আহাম্মেদ।
এ রাস্তাটি নির্মাণ কাজে নি¤œমানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে বলে উপজেলা প্রকৌশলী অফিসকে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে রোববার সকালে উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশালী ফরিদ আহাম্মেদ ঘটনাস্থলে তদন্তে যায়। সেখানে নিন্মমানের ইট দিয়ে কাজ করা হচ্ছে-তা প্রমাণ পেয়ে সংশ্লিষ্ঠদের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে অফিসে চলে আসে তিনি। পরে স্থানীয় ঠিকাদার ও বাঘা পৌর আ.লীগের সভাপতি আবদুল কুদ্দুস সরকারের বড় ছেলে সেলিম আহাম্মেদ সরকার ওই প্রকৌশলীকে চড়-ধাপ্পড় মেরে এবং অফিস কক্ষের মধ্যে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন।
এ ঘটনায় সোমবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত উপজেলার সকল সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী কলম বিরতি রাখেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপ-সহকারী প্রকৌশলী বাদী হয়ে বাঘা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশালী ফরিদ আহাম্মেদ বলেন, সেলিম আহাম্মেদ অফিসে এসে কাজ বন্ধ রাখার কারণ জানতে চেয়ে অকথ্যভাষায় কথাবার্তা বলে এবং আমাকে মারপিট করে ধাক্কা দিয়ে চেয়ার থেকে ফেলে দেয়। এ সময় অন্যান্য সহকর্মীরা এগিয়ে এসে আমাকে রক্ষা করে।
এ বিষয়ে সেলিম আহাম্মেদ বলেন, উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে মারপিট করা হয়নি। কেন কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন, তা জানতে চেয়েছিলাম। তবে তাকে রাগ করে একটা ধাক্কা দিয়েছিলাম।
বাঘা উপজেলা প্রকৌশলী রতন কুমার ফৌজদার বলেন, ঘটনাটি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে সেলিম আহম্মেদকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বাঘা থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনার অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। আসামীকে গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বলেন, আইনীভাবে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আইনীভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।