ভাতের সাথে পাউডার জাতীয় চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে মা মেয়েকে অচেতন করে দশ লাখ টাকাসহ চৌদ্দ ভরি স্বর্নালংকার লুট করেছে দুবৃর্ত্তরা। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের আটির উপর গ্রামে মৃত আবদুল গফুর মল্লিকের বাড়িতে।
অচেতন অবস্থায় মা নুরুন্নেছা বেগম (৫২) ও কলেজ পড়–য়া মেয়ে ফারজানা খাতুন(১৯)কে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মঙ্গলবার সকালে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।
নুরুন্নেছা বেগমের চেতনা ফিরলেও মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত তার মেয়ে ফারাজানা অচেতন অবস্তায় ছিল। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে মজিদা বেগম নামের গৃহকর্মীকে শ্যামনগর থানা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
ঘটনার শিকার নুরুন্নেছা বেগম জানান, সোমবার রাত আটটার দিকে তার মেয়ে ফারজানা ভাত খাওয়ার সময় রাইস কুকারে রান্না করা ভাতের উপর সাদা পাউডার জাতীয় কিছু দেখতে পায়। কিন্তু বিকেলে পিঠা বানানোর সময় ময়দার গুঁড়াপড়েছে উল্লেখ করে তিনি মেয়েকে খাইয়ে দিয়ে নিজেও ভাত খায়। কয়েক মিনিটের মধ্যে তার মেয়ে শোবার ঘরের মেঝেতে লুটিয়ে পড়লে মেয়েকে ধরতে গিয়ে নিজেও পড়ে যান। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে স্থানীয়দের ডাক-চিৎকারে তার চেতনা ফিরে।
বিধবা নুরুন্নেছা বেগম আরও জানান সৌদি আরব প্রবাসী তার বোন রোজিনা খাতুন বিভিন্ন সময়ে তার কাছে উপার্জনের টাকা পাঠিয়ে জমাতো। সম্প্রতি ছোট বোন দেশে ফিরে গচ্ছিত টাকা ব্যাংকে ফিক্সড করার কথা নুরুন্নেছা বেগমকে জানালে কয়েকদিন ধরে তিনি টাকাগুলো এতত্রিত করে নিজ বাড়িতে রেখেছিলেন। দুবৃর্ত্তরা আলমারি ভেঙে তার নিজের গচ্ছিত টাকাসহ ছোট বোনের টাকা মিলিয়ে প্রায় দশ লাখ টাকা ও চৌদ্দ ভরি স্বর্নালংকার নিয়ে গেছে।
নুরুন্নেছার বেগমের বড় মেয়ে শারমিন সুলতানা জানান ঘটনার রাতে প্রতিবেশী মাজিদা বেগম সন্ধ্যার পর থেকে তার মায়ের বাড়িতে ছিলেন। রাতে তিনি ভাত খেতে অস্বীকৃতি জানিয়ে পৃথক ঘরে শুয়ে পড়ে এবং রাত চারটার দিকে ডাক-চিৎকার করে স্থানীয়দের ডেকে দুবৃর্ত্তরা কলাপসিপল গেট কেটে বাড়িতে ডাকাতির করেছে বলে জানায়। নিজে শ^শুরালয়ে থাকার কথা উল্লেখ করে শারমিন সুলতানা আরও জানায় গৃহকর্মী মাজিদা তাদেরকে জানিয়েছে দুবৃর্ত্তরা তাকে কম্বলে মুড়িয়ে মাথায় অস্ত্র ধরে লুটপাট করায় তিনি তাৎক্ষনিকভাবে কাউকে ডাকার সুযোগ পাননি।
নুরুন্নেছা বেগমের সৌদি প্রবাসী বোন রোজিনা খাতুন জানায়, আমার বোন আমাদের সবকিছু দেখাশুনা করেন। তিনি মায়ের মতো আগলে রেখেছেন অদ্যবধি। গৃহকর্মী মাজিদা বেগমের সহায়তায় দুবৃর্ত্তরা বোন ও ভাগ্নিকে অচেতন করে সর্বস্ব লুট করেছে।
শ্যামনগর থানার ওসি (তদন্ত) ইয়াছিন আলম জানিয়েছে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। গৃহকর্মীসহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ পেলে মামালা রুজু করে আইনগত ব্যবস্থা নেযা হবে।