পৌষের হাড়কাঁপানো শীতের পর এবার মাঘেও জেঁকে বসেছে শীত। উত্তরের জেলা রংপুরে কয়েকদিন আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকলেও চলতি সপ্তাহে ফের শুরু হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। সূর্যের লুকোচুরি আর হিমেল হাওয়ার
সাথে তাপমাত্রা উঠানামা করছে ।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) রংপুরে ১১ থেকে ১২ দশমিক ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা উঠানামা করলে ও আজ তা নয়ের নিচে নেমে এসেছে। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) ভোর ছয়টা থেকে বেলা বারোটা পর্যন্ত এ জেলায়সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অফিস বলছে, আগামি ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত হত পারে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। বায় ুমন্ডলে জলীয়বাষ্পের কারণে বাডবে ঘন কুয়াশাও। দু-একদিনে তাপমাত্রা কমে গিয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহে শীতের তীব্রতায়কাঁপবে রংপুর অঞ্চল।
এদিকে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) ভোর থেকে ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসের কারণে রংপুরে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। ঝিরিঝিরি বাতাসের সঙ্গে প্রচণ্ড ঠান্ডায় চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন স্বল্প আয়ের মানুষেরা।
বেলা বাড়লেও দেখা মেলেনি সূর্যের। ঠান্ডায়কুপোকাত মানুষজন সহসাই বাহিরে বের হচ্ছে না। তবে শ্রম বিক্রি কর নিম্ন আয়ের মানুষে আর চাষিরা পড়েছে বিপাকে।
রংপুর সদরের পালিচড়া এলাকার দিনমজুর মনতাজুর রহমান বলেন, একদিন কাম না করলে মোর সংসার চলে না। সারাদিন মানুষের জমিত কামলা দিয়্যা আয় উপার্জন করি। কিন্তু এই জারোতে খুব কষ্ট হচ্ছে। একে তো কাপড়ের কষ্ট। তার ওপর কাজ কাম না করলে খাবার-দাবারের কষ্ট।
নগরীর পার্কের মোড়ের রিকশাচালক মিজান মিয়া জানান, প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে মানুষ বের হচ্ছে না। আগে রিকশা চালিয়ে দিনে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা আয়রোজগার হত। এখন সারাদিনে ৩০০ টাকা আয়করাও খুব কষ্টদায়ক। ঠান্ডার কারণে আমাদের নিম্নআয়ের মানুষদের চরম কষ্টে দিনযাপন করতে হচ্ছে।
এদিকে শীতে জবুথবু এই জনপদে আগুন পোহাতে গিয়ে গেল এক মাসে আট জন নারী ও দুই শিশুসহ দগ্ধ হয়ে মারা গেছে ১৩ জন। এখনো রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ এণ্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে ভর্তি আছে ২৫ জন রোগী।
এদিকে রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মেঘলা আকাশ আজকেও থাকবে। তবে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। শীতের এই তীব্রতা আরো দুই-তিন দিন একই রকম থাকবে। রংপুরে গেল দুই দিন দশ থেকে বারো ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠানামা করলেও মঙ্গলবার নয়ের নিচে নেমে এসেছে।