কুড়িগ্রামের উলিপুরে কনকনে ঠান্ডা আর শৈত্য প্রবাহেও থেমে নেই শ্রমজীবি মানুষের জীবন-জীবিকা। গত কয়েকদিনের প্রচন্ড ঠান্ডায় জন-জীবন ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে নি¤œ আয়ের মানুষের। অনেকে শীতবস্ত্রের অভাবে বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। অনেক এলাকায় শিশু ও বৃদ্ধরা সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি আগুনের কুন্ডলী জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। ঠান্ডার কারনে শীতজনিত রোগির সংখ্যাও বাড়ছে। শিশু ও বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে রোগির সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে।
এদিকে, চলতি বোরো মৌসুম শুরু হওয়ায় শ্রমজীবি মানুষ ঠান্ডা উপক্ষো করে চারা রোপনে নেমে পড়েছেন। বুধবার সকাল ৯টায় কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া অফিস ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে। সকাল থেকে সূর্য্যরে দেখা না মেলায় জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। ব্রহ্মপূত্র ও তিস্তা নদী তীরবর্তি চরাঞ্চলের মানুষ নিদারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।
বুধবার সকালে উলিপুর পৌরসভার নিজাইখামার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একদল দিনমজুর বোরো চারা রোপনের জন্য কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে বীজতলা থেকে চারাগাছ তুলছেন। এসময় খবির উদ্দিন নামের একজন দিনমজুর জানান,‘হামার বাবা কিসের ঠান্ডা, কাম না করলে খামো কি? হামার জীবনটাই এমন’। ঠান্ডার কারনে চলতি বোরো মৌসুমের চারা রোপনের কাজ কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে বলে অনেকে জানান। অনেক এলাকা ঘুরে দেখা দেখা গেছে, ঠান্ডার কারনে রাস্তা-ঘাট গুলো অনেকটা ফাঁকা। স্কুল গুলোতে ছাত্রছাত্রির উপস্থিতি অনেকটা কমে গেছে। জরুরী কাজ না থাকলে কেউ বাড়ির বাহিরে বের হচ্ছে না। বাকরের হাট বাজারের বাপ্পী নামের এক ব্যবসায়ী জানান, সন্ধার পরেই বাজার ফাঁকা হয়ে যায়, কেনাকাটাও থাকে না। দলদলিয়া ইউনিয়নের চর কর্পূরা গ্রামের মানিক জানান, প্রচন্ড ঠান্ডায় চরের মানুষ দিনারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, ঠান্ডায় চারা রোপন করলে কোল্ড ইনজুরীতে পড়তে পারে, শৈত্য প্রবাহ কেটে গেলে চারা রোপন শুরু করলেও তেমন কোন প্রভাব পড়বে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল কাদের বলেন, নতুন করে শীতবস্ত্রের বরাদ্দ আসেনি। আসলে শীতার্ত মানুষের মাঝে বিতরণ করা হবে।