বগুড়ার শেরপুরে কর্মস্থল থেকে বাড়ীতে ফেরার পথে সাইফুল ইসলাম (৫৫) নামের এক স্কুল ছাত্রকে খুন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় নিহতের কাছে রক্ষিত বেশ কিছু টাকা লুন্ঠিত হয়েছে বলে নিহতের পরিবার জানিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার রাতে ।
নিহত স্কুল শিক্ষক সাইফুল ইসলাম নন্দিগ্রাম উপজেলার বরুল ইউনিয়নের হুসিয়ারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মজিবর রহমানের ছেলে। তিনি শেরপুরের বিশালপুরের দেয়োমায়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
পুলিশ ও নিহতের পারীবারিক সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক সাইফুল ইসলাম গত রোববার সন্ধ্যার আগে তার কর্মস্থল থেকে বের হয়ে শেরপুর শহরে আসেন। সেখানে তিনি জমি বিক্রির প্রায় লক্ষাধিক টাকা নিয়ে আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করে একটি সিএনজি চালিত অটোতে করে বাড়ীর উদ্দেশ্য রওনা দেন। পথি মধ্যে কয়েকজন দুস্কৃতকারী তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় ।
অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়ার পর তার উপর বর্বর কায়দায় নির্যতন চালিয়ে মারপিট করা হয়। এরপর রাতের কোনো এক সময়ে তাকে তার কর্মস্থল দেয়োময়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভেতরে হাত-পা বাধাঁ অবস্থায় ফেলে রেখে যায় দুস্কৃতকারীরা । এ ঘটনায় গত সোমবার নিগতের পর দিন সকালে স্কুলের শিক্ষার্থীরা তাকে দেখতে পায়। ওই দিনই নিহতের নিকট আত্বিয় তার নিখোজের বিষয়ে শেরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ।
এদিকে নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, এলাকার একাধিক দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে নিহতের ছেলে শুভ ১৫-১৬ লাখ টাকা নিয়ে পরিশোধ করতে পারছিল না। টাকা আদায়ের জন্য দাদন ব্যবসায়ীরা সাইফুল ইসলামকে চাপ দিয়ে থাকে। । সাইফুল ইসলামের বেতনের চেক বই দাদন ব্যবসায়ীর কাছে জমা ছিল। দাদনের দাদন ব্যবসায়ীরাই সাইফুল ইসলামকে মারপিট করে হাত-পা বেধে স্কুলে ফেলে রেখে গেছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়। এ বিষয়ে ১নং বুড়ইল ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ নূর মোহাম্মদ বলেন, সাইফুল ইসলাম সোমবার সন্ধ্যায় দোলগাছি বাজারে যায়। সেখান থেকেই তাকে অপহরণ করা হতে পারে ।
এদিকে পরে মূমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধারের পর শিক্ষক সাইফুল ইসলামকে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে শেরপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এবং পরবর্তীতে তাকে বগুড়ার শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে শিক্ষক সাইফুল ইসলাম মারা যান। নিহতের কাছে থাকা প্রায় লক্ষাধিক টাকার কোনো হদিস মেলেনি।
এ বিষয়ে গতকাল শেরপুর থানার ওসি (ওসি সার্বিক) হুমায়ুর কবিরের সাথে কথা বলা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান , শিক্ষক সাইফুল ইসলামের নিখোঁজ ও নিহত হওয়ার বিষয়ে একটি অভিযোগ দেওয়া হলেও রহস্যজনক কারণে তা পরে প্রত্যাহার করে নেয়া হয় । তার পরেও বিষয়টি পুলিশ ক্ষতিয়ে ব্যবস্থা নেবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা ।