রাজশাহী পুঠিয়ায় প্রধান শিক্ষক নিয়োগদানে বাধা দেয়ায় সভাপতি তিন মাসের ছুটি দিয়ে চার জন শিক্ষকে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ছুটি শেষে শিক্ষক যোগদান করতে আসলে, সভাপতি রাজনৈতিক প্রভাবখাটিয়ে তাকে যোগদান করতে দেয়নি। পরে তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্নসাত করার অভিযোগ এনে কোর্টে মিথ্যাা মামলা দায়ের করেন। আদালত মিথ্যা মামলা থেকে প্রধান শিক্ষকে অব্যহতি দিয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, পুঠিয়া শিবপুর হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কে এম আব্দুল জব্বার গত ১৭ ডিসেম্বর ১৯৯০ইং সালে বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। শিক্ষক থাকা অবস্থায় বিদ্যালয়ে নিয়োগকে কেন্দ্র করে তৎকালিন বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সার ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান প্রধাণ শিক্ষকে বাদ দিয়ে অবৈধ শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক এই নিয়োগদানে বাধা দেয়ার চেষ্টা চালানোর অভিযোগ উঠে। পরে সভাপতি কৌশলে প্রধান শিক্ষকে রাজনৈতিক ভাবে চাপ সৃষ্টি করে গত ২২ আগস্ট ২০১১ইং সালে রমজান মাসের ভেতর তিন মাসের ছুটি দিয়ে চারজন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে দেন। ছুটি শেষে প্রধান শিক্ষক নিজ পদে যোগদান করতে আসলে। তাকে বিদ্যালয়ে যোগদান করতে দেয়া হয়নি। পরে তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্নসাত করার অভিযোগ এনে, রাজশাহী চীফজুডিশিয়ার ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে একটি মিথ্যাা মামলা দায়ের করেন। আদালত গত ৯ মার্চ ২০১৭ইং সালে মিথ্যা মামলা থেকে প্রধান শিক্ষকে অব্যহতি দিয়েছেন। পরর্বতি সময় বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির রাজশাহী কোর্টে ৩০ জুন ২০১৪ইং সালে মামলাটি আপিল করেন। আদালত গত ২৩ মে ২০১৯ইং সালে আপিল না মঞ্ছুর করে শিক্ষকের পক্ষে রায় দেন। পূর্ণরায় ব্যবস্থাপনা কমিটি উচ্চ আদালতে গত ২০ অক্টোবর ২০১৯ইং সালে একটি রিট আবেদন করেন। ওই দিনই শুনানি শেষে আদালত দুই মাসের ভেতর শিক্ষকে দুই লাখ টাকা দিতে বলেন। এবং নিম্ন আদালতে রায় বহাল রাখেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ শিক্ষকে অদ্যবধি কোনো টাকা দেয়নি। প্রধান শিক্ষক আদালতের নিদের্শনা বাস্তবায়নের লক্ষে তার বকেয়া বেতন ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগসুবিধা এবং নিজ পদে যোগদান করার জন্য গত ৮ জুলাই ২০১৯ইং সালে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান বরাবর একটি আবেদন করেছেন। উপরোন্ত বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি যাচাই-বাছাই না করে প্রধান শিক্ষক কে এম আব্দুল জব্বারের চাকরির মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও তাকে চাকরিতে যোগদান করতে দেয়া হয়নি। বরং একজন প্রধান শিক্ষকে অবৈধ ভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক কে এম আব্দুল জব্বার বলেন, আমি রাজনৈতিক রোশানলে পরে আমার জীবনটা শেষ হয়ে গেল। বিদ্যালয়টি প্রথম থেকে আমি তিলেতিলে গড়ে তুলেছি। আদালত আমাকে ৩৩ লাখ টাকা দেয়ার জন্য বর্তমান কমিটির সভাপতি ও শিক্ষকদের বলেছেন। কিন্তু তারা আমাকে কোনো টাকা দিচ্ছে না। শিবপুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, আমি বিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় একটি যাচাই-বাছাই করে তার অর্থ আত্নসাতের প্রমাণ পেয়ে ছিল। সে মোতাবেক তখন তাকে বরখাস্ত করা হয়ে ছিল। বর্তমানে আমি বিদ্যালয়টির সভাপতি না থাকার জন্য, মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে গুলির কি অবস্থা তা আমার জানা নেই। প্রধান শিক্ষকের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়ে ছিল।
এ ব্যাপারে শিবপুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক আরাবিয়া সুলতানা বলেন, আমরা আসলে,বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির আওতায় চাকরি করি। বর্তমান কমিটি এবং শিক্ষকরা এত টাকা কোথায় থেকে সাবেক প্রধান শিক্ষকে দেবে। তারপর তিনি বেতন ভাতা বেশি করে জামা দেয়ার কারণে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।