সনাতন ধর্মালম্বীদের কাছে বিদ্যা, জ্ঞান, বাণী ও সুরের দেবী সরস্বতী। প্রতি বছর গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সনাতন ধর্মালম্ভীদের বাড়ী বাড়ী ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দমূখর পরিবেশের মধ্যে দিয়ে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
গত বছরের মতো এ বছরও এ পূজায় ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়েছে। উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের আমবাড়ী গ্রামের শ্রীশ্রী রাধাগবিন্দ ও গনেশ পাগল সেবাশ্রম ৫৫ ফুট উচ্চতার প্রতিমায় সরস্বতী পুজার আয়োজন করেছে। আয়োজকরা দাবি করেছেন, এটিই হচ্ছে এ উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ প্রতিমায় সরস্বতী পূজা। এই পূজার প্রতিমাটি তৈরী করেছেন শ্রীবাস গাইন (পাল)।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় আমবাড়ী গ্রামের সার্বজনীন শ্রী শ্রী রাধাগবিন্দ ও গনেশ পাগল সেবাশ্রম চত্ত্বরে নির্মিত ৫৫ ফুট উচ্চতার এই সরস্বতী প্রতিমায় পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
এই পুজা দেখার জন্য আমবাড়ী গ্রামের আশপাশের এলাকা থেকে বিভিন্ন লোক এসে জড়ো হয়েছে পূজাস্থলে। এছাড়াও বরিশাল, পিরোজপুর ও বিভিন্ন জেলা উপজেলার আত্মীয়-স্বজন এসেছে এ গ্রামে পুজা দেখার জন্য। এই পূজাকে কেন্দ্র করে বসেছে ৩দিন ব্যাপী গ্রামীন মেলা। আয়োজন করা হয়েছে ধর্মীয় যাত্রাপালা ও কবি গানের।
পাল শ্রীবাস গাইন (৪৬)বলেন, আমি আমার ১০ জন সহকারীকে নিয়ে এক মাস ধরে এ প্রতিমাটি নির্মান করেছি। আমি এর আগেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের প্রতিমা তৈরী করেছি। আমি এ ধরনের প্রতিমা তৈরী করতে এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা নিয়ে থাকি। কিন্তু এটা আমার গ্রামের পূজা । আমাকে আয়োজকরা যা দিবে আমি তাতেই খুশি। তবে আমি এর আগে ৪৫ফুট উচ্চতার প্রতিমা তৈরী করেছি। ৫৫ফুট উচ্চতার প্রতিমা এটাই প্রথম। পুরোহিত গোলক চন্দ্র গাইন(৫৫) বলেন, আমি ৩০ বছর ধরে পূজা করি। কিন্তু এতো বড় প্রতিমায় কোন দিন পূজা করিনি। আমার আজকে অনেক স্থানে পূজা করার কথা ছিল, কিন্ত সব বাদ দিয়ে এখানে পূজা করতে এসেছি। এতো বড় প্রতিমায় পূজা করতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।
পূজা কমিটির সভাপতি বিশ^পদ মন্ডলু (৪০) বলেন, আমরা এলাকার যুবকরা মিলে এই পূজার আয়োজন করেছি। গত বছর আমরা ৪৫ ফুট উচ্চতার প্রতিমায় সরস্বতী পূজার আয়োজন করেছিলাম। এ বছর ৫৫ফুট উচ্চতার সরস্বতী প্রতিমায় পূজার আয়োজন করেছি। আমাদের এই পূজায় ৩ লক্ষাধিক টাকা খরচ হবে। আমরা এ ধরনের পূজার আয়োজন করতে পেরে খুবইু আনন্দিত।
পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কালিপদ গাইন বলেন, আমার জানা মনে এটিই এ উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রতিমায় সরস্বতী পূজা। আগামীতেও আমরা এ পূজা চালিয়ে যাবো।
পিরোজপুর থেকে আগত মিলন মল্লিক বলেন, আমি আমবাড়ী গ্রামের জামাই। যখন জানতে পারলাম ৫৫ ফুট উচ্চতার সরস্বতী প্রতিমায় পূজা হবে তখন এই পূজা দেখার জন্য স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে নিয়ে শ^শুরবাড়ী চলে আসলাম। আমার জীবনে এতো বড় সরস্বতী প্রতিমা দেখেনি।
কান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার মধুু বলেন, আমাদেরু ইউনিয়নে এতো বড় সরস্বতী পূজা হচ্ছে শুনে আমি আনন্দিত ও গর্বিত। আগামীতে যাতে এই পূজা আরো বড় পরিসরে অনুষ্ঠিত হয় তার জন্য আমার দলের পক্ষ থেকে আয়োজকদের সার্বিক সহযোগিতা করবে।