দেবহাটায় বরজ থেকে পান ছেড়ার অভিযোগে ৮ম শ্রেনীর ছাত্র ১৩ বছরের এক শিশুকে মুখ বেধে নির্যাতন পরবর্তী দীর্ঘ সময় আটকে রেখে জখম করার বিষয়ে এখনো দেবহাটা থানায় মামলা হয়নি। পুলিশ বলছে থানায় এখনো পর্যন্ত কোন অভিযোগ না দেয়ায় মামলা রেকর্ড করা সম্ভব হয়নি। তবে এ ঘটনায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা ঐ শিশুটিকে দেখতে শনিবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়েছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি ও সখিপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফারুক হোসেন রতন। আহত শিশুটি হলো দক্ষিণ সখিপুর গ্রামের সফিকুল ইসলামের ছেলে এবং চাঁদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনির ছাত্র মোস্তাফিজুর রহমান (১৩)। আহত শিশুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মোস্তাফিজুর খেলার ছলে বাড়ির পাশের নারিকেলী গ্রামের মহাদেব সরকারের ছেলে সমর সরকারের পানের বরজ থেকে পান তুলে নিয়ে যায়। পরদিন ঈদগাহ বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল হান্নানের প্রলোভনে পড়ে যায় শিশুটি। ঐ ব্যবসায়ী টাকার প্রলোভনে দেখিয়ে মোস্তাফিজুরকে রোজ পানতুলে তাকে দিতে বলে। এরপর শুক্রবার আবারো পান আনতে গেলে শিশুকে হাতে নাতে ধরে ফেলে বরজ মালিক সমর সরকার। প্রথমে বরজের ভিতরে মোস্তাফিজুরকে মুখ বেধে মাটিতে ফেলে বেধড়কভাবে পিটায় এবং পদদলিত করে। পরে সেখান থেকে বের করে বরজ মালিক সমর সরকার বরজের বাহিরে এনে ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে আবারো নির্যাতন করে মোস্তাফিজুরকে। এতে ঐ শিশু মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার উপর আবারো নির্যাতন চালিয়ে মোটরসাইকেলে নিয়ে গাজীরহাট ও ঈদগাহ বাজারে নিয়ে যায় বরজ মালিক। এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্য জগন্নাথ মন্ডল বিষয়টি জানতে পারলে সমর সরকার মোস্তাফিজুরকে ইউপি সদস্যের কাছে হস্তান্তর করে। পরে আহত শিশুকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার বিকালে ইউপি সদস্য বিষয়টি শনিবার সকালে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দেয় আহত শিশুর পরিবারকে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন মিমাংসা বা থানায় কোন াভিযোগ দায়ের করেননি আহত ঐ শিশুটির পরিবার। এদিকে নির্যাতনে আহত ঐ শিশুটি হাসপাতালে ব্যথায় চিৎকার করছে। হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিশুটি ব্যথায় কাতরাচ্ছে এবং তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। শিশু নির্যাতনকারী পান বরজের মালিক সমর সরকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি নির্যাতনের বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, তিনি তাকে ধরে মেম্বরের কাছে হস্তান্তর করেছেন। এ বিষয়ে দেবহাটা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে আহত শিশুটির পরিবারকে থানায় এসে অভিযোগ দেয়ার কথা বলা হলেও তারা এখনো কেউ থানায় কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ওসি জানান।