দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি পরীক্ষা নিতে সম্মত হয়েছে সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়। সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় সায় দিয়েছে বলে ইউজিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। যদিও ঢাবি ও বুয়েটের এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেই বলে জানিয়েছে। অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকের পর তারা সিদ্ধান্ত জানাবে। তবে শেষ পর্যন্ত সব বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়েই কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাবে ইউজিসি। শেষ পর্যন্ত যদি কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় অপারগ হয় তাহলে তাদের বাদ রেখে বাকিদের নিয়েই এ বছর নতুন পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রথমে এই পরীক্ষাকে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা বলা হলেও এখন এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা’ ইংরেজিতে এর সংক্ষেপ করে বলা হচ্ছে সিএটি বা ক্যাট (সেন্ট্রাল অ্যাডমিশন টেস্ট)।
বর্তমানে দেশে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলছে। যদিও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সাতটি বিশ্ববিদ্যালয় সরাসরি শিক্ষার্থী ভর্তি করে না। বাকি ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে প্রায় ৬০ হাজার আসন রয়েছে। পরীক্ষা দেন কয়েক লাখ শিক্ষার্থী। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকদের দুর্ভোগ কমাতে কয়েক বছর ধরেই সমন্বিত বা গুচ্ছ ভিত্তিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার চেষ্টা চলছে। সেই চেষ্টার অংশ হিসেবে গত বছর (চলতি শিক্ষাবর্ষ) সাতটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিতভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়। এ বছর সব বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি শিক্ষাবর্ষে (২০২০-২১) থেকেই কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার কথা হচ্ছে। এটি হলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অনেক উপকৃত হবেন। ভর্তি পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দেশের একেক প্রান্তে ছুটতে হয়। সমন্বিত বা কেন্দ্রীয়ভাবে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে আর ভোগান্তি থাকবে না। এছাড়া একেক বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার জন্য একেক ধরণের ফি নির্ধারণ করতে হয়। এক্ষেত্রে ভর্তিচ্ছুদের জন্য অনেক অর্থ ব্যয় করতে হয়। একটি পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি হলে অপ্রত্যাশিত এই ব্যয়ও কমে আসবে। অনেকদিন ধরে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলেও কিছু বিশ^বিদ্যালয়ের দ্বিমতের কারণে এতদিন সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। তবে শেষ পর্যন্ত যে সিদ্ধান্ত হয়েছে সেটির ভিত্তিতেই আগামী শিক্ষাবর্ষে বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তিতে কেন্দ্রীয় পরীক্ষা নিতে কোনও বাধা আসবে না বলে প্রত্যাশা করি। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি এবং উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে একই শৃঙ্খলে আনতে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সময়োপযোগী এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই।