দখলদার যুবলীগ নেতা আনোয়ার। এজন্য তিনি প্রকাশ্যে অন্যায় করলেও সবাই চুপ। এলাকার কেউ বেশি বাড়াবাড়ি করলে খবর আছে। কারণ; ক্যাডার নিয়ে তাঁর চলাফেরা। চাপের কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও এখন নিরব দর্শকের ভূমিকায় আছেন। কর্ণফুলী নদীর উপকূল উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে অবৈধ দখল উচ্ছেদ শুরু হয়েছে। তবে দূষণের থাবা থেকে রেহাই মিলছে না ওই নদীর। জনসমক্ষে খোলা আকাশের নীচেই কয়লা খালাস চলছে। বন্দর স্থাপনার বিপরীত পার্শ্বে কর্ণফুলী নদীর ব্রিজ ঘাট এলাকা। সেখানেই খোলা আকাশের নীচে প্রতিদিন খালাস করা হচ্ছে এসব কয়লা। পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার উপ-পরিচালক জমির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, কর্ণফুলী নদীর পাড়ে খোলা জায়গায় কয়লা খালাসের সংবাদ আমরা পাইনি। দেখি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটার ব্রিজঘাট এলাকা। সেখানে ‘এমভি রূপসী দোহার-২’ নামের একটি লাইটারেজ জাহাজ রয়েছে। এই জাহাজ থেকে প্রতিদিন অন্তত ৩০-৩৫ জন শ্রমিক নদীর কাছেই স্থানীয় যুবলীগ নেতা আনোয়ার সাদাত মোবারকের মালিকানাধীন জমিতে খোলা আকাশের নীচে কয়লা খালাস করছেন। এখানে লাইটারেজ জাহাজ থেকে কয়লা খালাসের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে অস্থায়ী কাঠের জেটিও। লাইটার থেকে কয়লা নামানোর পর ডেজার দিয়ে একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে স্তুপ করা হচ্ছে। নদী পাড়ে মজুদ করা এই সকল কয়লা গড়িয়ে নদীতেও পড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কয়লা, তেল, বালি নদীর জন্য খুবেই ক্ষতিকর। ভারি কয়লা নদীর তলায় জমাট বাঁধবে, আর সেই কয়লার গুঁড়া পানির সাথে মিশে পলি তৈরি করবে। কয়লা কার্বনযুক্ত, এটি পানি ও মাছের জন্যও ভীষণ ক্ষতিকর। নিয়ম মাফিক উন্মুক্ত কয়লা খালাসের নিয়ম নেই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন-এগুলো দেখারও কেউ নেই। যাদের দেখাশুণা করার দায়িত্ব দেয়া আছে, তারা তাদের দায়িত্ব পালন করে না বলে অভিযোগ উঠেছে। সূত্র জানায়, আগে ব্যবসা করার জন্য নদী মাধ্যম হিসেবে কাজ করতো। এখন নদী ব্যবসার উপাদান হয়ে গেছে। যারা নদী সুরক্ষার দায়িত্বে আছেন, তারাই নদীকে ভাগ করে নানা ব্যবসা করেন। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। স্থানীয় চরপাথরঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী ছাবের আহমদ বলেন, যুবলীগ নেতা আনোয়ার সাদাত ওই কয়লার ব্যবসা করেন। রাজনৈতিক নেতা হওয়ার কারণে এজন্য তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। কারণ ব্যবস্থা নিতে গেলেও কোনো লাভ হবে না। এদিকে কর্ণফুলী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারুফা বেগম নেলী বলেন, ব্রিজঘাট এলাকায় কর্ণফুলীর পাড়ে কয়লা খালাসের বিষয়ে আমরা কিছুই জানিনা। এই বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।