পীরগঞ্জে এনটিআরসিএ কর্তৃক সুপারিশ ও নিয়োগপ্রাপ্ত ইংরেজী বিষয়ের শিক্ষক মারুফ মিয়া ৩ বছরেও এমপিভুক্তি হতে না পেয়ে অসহায় পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও অধ্যক্ষ নানা টালবাহনায় এমপিও আটকে দিয়েছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগে জানা যায়, গত ৬ জুন- ২০১৬ ইং তারিখে এনটিআরসিএ এর পাবলিক সার্কুলারে আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৩ নভেম্বর- ২০১৬ ইং ফলাফলে মারুফ মিয়া এনটিআরসিএ কর্তৃক নির্বাচিত ও সুপারিশপ্রাপ্ত হয়। অত:পর ২৭ নভেম্বর ২০১৬ ইং তারিখে নিজ বাড়ি থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দুরে পীরগঞ্জের চতরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান পূর্বক নিয়মিত পাঠদান করতে থাকেন। এরই মধ্যে এমপিওভূক্তির জন্য ডিডি বরাবর একাধিকবার ফাইল প্রেরণ করা হলে প্রত্যেকবারেই অজ্ঞাত কারণে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফাইলটি রিজেক্ট করেন। এরই মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় কেটে যায় প্রায় দু’বছর। এদিকে গত ১৯ ডিসেম্বর- ২০১৮ ইং তারিখে আবারও এনটিআরসিএ এর পাবলিক সার্কুলার দিলে মারুফ মিয়া পুনরায় আবেদন করেন। তিনি এনটিআরসিএ কর্তৃক পুনরায় নির্বাচিত ও সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারী- ২০১৯ ইং তারিখে পীরগঞ্জের জাফরপাড়া দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসায় যোগদান পূর্বক নিয়মিত পাঠদান করে আসছেন। শিক্ষক মারুফ মিয়া নতুন প্রতিষ্ঠানে এসে আবারও এমপিও’র জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট আবেদন করলে বরাবরের মত ফাইল ফেরত পাঠায়। ফাইল ফেরতের কারণ জানতে মারুফ মিয়া জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে সাক্ষাত করতে গেলে তিনি (ডিইও) অসৌজন্যমূলক আচরন করে বলেন, বিনা পয়সায় চাকরী আবার বিনা টাকায় বেতনও ! মারুফ সবিনয়ে ওই কর্মকর্তাকে বলেন, আমার কোন ভুল-ভ্রান্তি বা ত্রুটি থাকলে লিখিত আকারে দিলে কৃতজ্ঞ থাকবো। এতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, বেশী বাড়াবাড়ি করলে ডিডিকে বলে তোমার চাকরী ‘নট’ করে দিবো। এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রোকসানা বেগম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন- মূলত ওই শিক্ষকের অনার্স এবং মাস্টার্স সার্টিফিকেট দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটি’র। যার কোন আইনগত ভিত্তি নেই। ওই সব ইউনিভার্সিটি’র সার্টিফিকেট কিনতে পাওয়া যায়। (উল্লেখ্য- ২০১৬ ইং সালে দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটি আদালত কর্তৃক বন্ধ করা হয়। কিন্তু শিক্ষক মারুফ মিয়ার পাশের সন- ২০১১ ইং)। সার্টিফিকেট যাচাই- বাছাই না করে ঐ শিক্ষককে নিয়োগ প্রদান করা হলো কেন ? এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন- এটা আমাদের কাজ না, প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাজ। এ ব্যাপারে জাফরপাড়া দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম বলেন, আমি ঐ শিক্ষকের এমপিও’র জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করেছি। শিক্ষক মারুফ মিয়াকে এমপিও’র ফাইল প্রবেশের জন্য প্রতিষ্ঠানের পাসওয়ার্ড দেয়া হচ্ছে না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উর্দ্ধতন কর্মকর্তার নির্দেশে তাকে পাসওয়ার্ড দেয়া হচ্ছেনা। কেন ? এমন প্রশ্নে তিনি মুখে কুলুপ এটে দেন। এ ব্যাপারে রংপুর জেলা প্রশাসক ও মাদ্রাসা’র সভাপতি মো. আসিব আহসান জানান, এমপিওভুক্ত একটা প্রসেস। একই সঙ্গে সকল শিক্ষককে এমপিওভুিক্তর আওতায় আনা সম্ভব নয়। প্রসেস অনুযায়ী ঐ শিক্ষক এমপিওভুক্ত হবে- এতে সময় লাগতেই পারে !