বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের নাগর নদেতে পানি না থাকায় নাব্যতা হারাচ্ছে। যার ফলে নদে হারাতে বসেছে তাঁর নদীত্বর রুপ।
জানা গেছে, উপজেলার সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার পশ্চিমপ্রান্তে ভাটরা ইউনিয়নের নাগরকান্দি গ্রামের বুকচিরে অবস্থিত নাগর নদ। এই নদ বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার প্রবহমান করতোয়া (নীলফামারী) নদী থেকে উৎপন্ন হয়ে নাটোরের সিংড়া নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নওগাঁর আত্রাই নদীর জলধারায় সম্পৃক্ত। নদের বুক থেকে মাটি কাটা ও বালু উত্তোলন করায় নদের রুপ আজ বিলীন হওয়ার দারপ্রান্তে। হারিয়ে যাচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পরিবেশের হচ্ছে মৃত্যু। এ নিয়ে যেন কারও মাথাব্যথা নেই। কালের আবর্তনে নদের ঐতিহ্য এখন হারিয়ে যাচ্ছে। নদটিতে বছরের বেশির ভাগ সময়ই পানি থাকত। নদেরপাড়ারের মৎস্যজীবীরা মনের আনন্দে মেতে উঠতেন মাছ শিকারে। কিন্তু এখন সেই নদে মাছ তো দূরের কথা, পানি থাকছে না।
আজ নদীর কূল আছে, কিনারা আছে, কিন্তু ঢেউ নেই। বহুদিন ধরে নদের বুকে পাল তুলে নৌকা আসা-যাওয়া করে না। দিন দিন ছোট হয়ে আসছে নদের আকার। এক দিকে নাগর নদে গভীর করে মাটি কাটা ও বালু উত্তোলন এবং আবার নদের দুই ধার দিয়ে অনেকেই কৃষি আবাদ করেছে। একসময় পানিতে থৈ থৈ করতো নাগর নদে। পানি না থাকায় শুখিয়ে মরছে নদ। যৌবন হারিয়ে এখন অনেকটা মরা খালে পরিণত হয়েছে।
নাগরকান্দি গ্রামের বাচ্চু মিয়া বলেন, একসময় এই নদী-নালা, খাল-বিল, শাখা-প্রশাখা গুলো থেকে প্রচুর পরিমাণে বোয়াল, গজার, মাগুর, কৈসহ দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। এখন পানির অভাবে মাছ তো দূরের কথা নদীই ‘মরা গাঙে’ পরিণত হওয়ার পথে। তাই নাগর নদ খনন করে নাব্যতা ফিরে আনার দাবি জানান তিনি। মোক্কাবেল, মিন্টুসহ কয়েকজন জেলে জানান, আগে এই নদে অনেক মাছ পাওয়া যেত। সেই মাছ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতাম। এখন পানির অভাবে মাছও পাওয়া যায়না।
বগুড়ার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহাবুবুর রহমান জানান, নাগর নদটি খনন দরকার। এ নদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে প্রজেক্ট পাঠানো হয়েছে। সেই প্রজেক্ট বাস্তবায়ন হলে নদ তার পূর্বের অবস্থা ফিরে পাবে। সেই সঙ্গে পানির সঠিক ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে কৃষিক্ষেত্রে সেচ সুবিধা অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে।