শেরপুরে পরিত্যক্ত প্লাস্টিক থেকে তৈরি হচ্ছে সুতা।
এতে যেমন পরিচ্ছন্ন হচ্ছে এলাকা তেমনি দূষণমুক্ত হচ্ছে পরিবেশ। আর সৃষ্টি
হচ্ছে কর্মসংস্থান, দূর হচ্ছে বেকারত্ব। আর এ কারণেই শেরপুরে ইতোমধ্যে
তিনটি কারখানা উঠেছে। এসব কারখানায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে এখানকার
প্রায় শতাধিক অসহায় নারী-পুরুষ।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, শেরপুর শহরের কুসুমহাটি এলাকায় গড়ে উঠেছে জাহিদ
প্লাস্টিকস নামে সুতা তৈরির কারখানা। জেলায় আনাচে-কানাচে পড়ে থাকা
পরিত্যক্ত প্লাস্টিক সামগ্রী কুড়িয়ে আনে শ্রমিকরা। পরে মেশিনে টুকরো করে
তা ধুয়ে পরিষ্কার করে রোদে শুকানো হয়। এরপর এই প্লাস্টিকের টুকরো গলিয়ে
তৈরি করা হয় সুতা। যা স্থানীয় ‘কেঁকড়া’ নামে পরিচিত। এতে করে পরিবেশ
মুক্ত হচ্ছে দূষণের হাত থেকে। পাশাপাশি কর্মসংস্থান হচ্ছে বেকারদের।
প্রতি কারখানায় কাজ করছেন প্রায় ১৫-২০ জন শ্রমিক। বর্তমানে শেরপুরে এমন ৩
থেকে ৪টি কারখানা রয়েছে। এই সুতা শেরপুর ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন জেলায়ও
যাচ্ছে।
ফুলপুর থেকে আসা কুসুমহাটি জাহিদ প্লাস্টিকের কারখানার শ্রমিক কামাল
মিয়া, বাবু ও বাবুল মিয়াসহ অনেকে জানান, এখানে কাজ করে একেকজন মাসে ৫-৮
হাজার টাকা পায়। ওই কারখানার শ্রমিক রিনা ও হাসি জানান, এই কারখানায় কাজ
করে যে টাকা পান তা দিয়েই তাদের সংসার ও ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনা চলে।
শহরের কুসুমহাটি এলাকায় জাহিদ প্লাস্টিক কারখানার মালিক আরশাদ আলী
জানান, প্রায় এক বছর আগে কুসুমহাটির নিজ বাড়ির পাশেই তিনজন অংশীদার নিয়ে
এই কারখানাটি গড়ে তোলেন। বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে এসব পরিত্যক্ত প্লাস্টিক
সংগ্রহ করার পর প্রক্রিয়াজাত করে তা থেকে সুতা তৈরি করা হয়। এই সুতা কৃষি
কাজসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়। তিনি আরও জানান, তাদের আর্থিক অবস্থা কম।
তাই সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে ঋণ দেওয়ার দাবি জানান এই উদ্যোক্তা।
শেরপুর বিসিক শিল্প নগরী কর্মকর্তা এস এম রেজুয়ানুল ইসলাম বলেন, শেরপুরে
প্লাস্টিক রিসাইকেলিং করে সুতা তৈরি করা হচ্ছে। এই সুতাটি আবার নির্দিষ্ট
সময়ের পর এটা মাটির সঙ্গে মিশে যায়। কিন্তু প্লাস্টিকের বোতল মাটিতে মিশে
যেতে দীর্ঘদিন সময় লাগে। আমরা যেহেতু শিল্পের পোশাক প্রতিষ্ঠান হিসেবে
কাজ করি। আমরা অবশ্যই প্লাস্টিক শিল্পটিকে নিবন্ধনের আওতায় আনতে পারব।
পাশাপাশি তাদের একটি সরল সুদে ঋণ দিতে পারব। এছাড়াও তারা যদি কারিগরি এবং
কোনো ধরণের তথ্য জানতে চায় তাহলে তাদের সেই তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করব।