সৈয়দ বাড়ির কন্যার মুন্সিয়ানা কাজের বদলে বদলে গেছে শিল্পনগরী নরসিংদী। মেধাবী ও রুচিশীল চিন্তা চেতনা এবং সততার সমন্বয়ে সাহসিকতার সাথে কাজ করার ফলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়টি আজ জন মানুষের আস্থায় পরিনত হয়েছে। বিগত দুইটি বছরে তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় নরসিংদী জেলায় একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে। তিনি এ জেলার মানুষের সকলের প্রাণের জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাই। মমতাময়ী ও পরিবেদনায় কাতর আমাদের জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন অত্যন্ত ধর্মপরায়ন একজন মানুষ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ছাড়াও তাহাজ্জতের নামাজ আদায়, সপ্তাহে একদিন রোযা রাখাসহ নফল ইবাদাতে নিজেকে মত্ত রাখেন। বাবার আদরের মেয়েটির ব্রাহ্মন বাড়িয়া জেলার মিশন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার হাতে খড়ি শুরু হয়।
জেলার সাবেরা সোবাহান সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সুনামের সাথে এস এস সি পাশ করার পর ব্রাহ্মন বাড়িয়া কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে মেধাবী মেয়েটি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। অতন্ত্য সুনামের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়ে তিনি ২০০১ সালে হবিগঞ্জ জেলায় সহকারী কমিশনার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে হবিগন্জ ও নেত্রকোনা জেলার বারহাট্রা উপজেলায় দক্ষতা ও সুনামের সাথে ভূমি সেবা প্রদান করেন। নেত্রকোনা,নীলফামারী ও ঠাকুরগাঁয়ে ১ম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতাও রয়েছে। চৌকস এই কর্মকর্তা কিছু সময় পানি সম্পদ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়েও কাজ করেন। এরপর তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার পদে নিযুক্ত হন। ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগ ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের ২০১১-২০১২ অর্থ বছরের কর্মকান্ড মূল্যায়নের প্রেক্ষিতে দেশ সেরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হওয়ার গৌরব অর্জন করেন তিনি। ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন কালেই ২০১৮ সালের ১১ মার্চ নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ পান সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন। নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে যোগদান করার পর তিনি প্রায় সাড়ে ৪শত কর্মহীন বেকার যুবক যুবতির কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন। প্রাথমিক শিক্ষায় এ জেলায় ব্যাপক অবদানের জন্য তিনি দেশ সেরা জেলা প্রশাসক হিসেবে ‘জাতীয় শিক্ষা পদক ২০১৮’ এ ভূষিত হন। আমার দেখা তিনিই একমাত্র ব্যাক্তি যিনি ঘোষণা দিয়ে প্রশ্নফাঁস বিহীন অর্থ ছাড়া মামা চাচার ক্ষমতাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে শুধুমাত্র মেধার ভিত্তিতে সরকারী নিয়োগ পরীক্ষা পরিচালনা করে দেখিয়েছেন। একজন সৎ সরকারী কর্মকর্তার চেয়ারের যে আসলেই কতো ক্ষমতা সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন তা কাজের মাধ্যমে দেখিয়েছেন।সততা থাকলেই সরকারী কর্মকর্তারা এই দেশটা পাল্টে দিতে পারেন। তিনি তার উজ্জল দৃষ্টান্ত। নরসিংদীর উন্নয়ন ও নরসিংদীর মানুষের প্রতি তাঁর ভালোবাসার কোন কমতি নেই। মায়ের মমতা দিয়ে এ জেলাকে সাজাতে ইতোমধ্যে শহরের সাটিরপাড়া মৌজায় বঙ্গবন্ধু থিম পার্ক করার জন্য ৫ একর জমি অধিগ্রহণ করেছেন। নাগরিয়াকান্দী শেখ হাসিনা ব্রীজের পাশে একটি ইনডোর ষ্টেডিয়াম ও নরসিংদীর সাংবাদিকদের জন্য প্রেসক্লাবের পাশেই একটি আবাসন প্রকল্পের কাজ শুরু করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। এবং তিনি তা পারবেন বলে বিশ্বাসও করে এ জেলার মানুষ। বাবার আদর্শ ও শিক্ষা বিশেষ করে পারিবারিক, সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কানায় কানায় পূর্ণতা আছে বলেই গত দুই বছরে এ জেলায় তিনি অনেক কর্ম সম্পাদন করতে পেরেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন এই কর্মকর্তা একদিন কেবিনেট সচিব হয়ে দেশের সর্বচ্চো কর্মকর্তা হবেন এমন প্রত্যাশাই এ অঞ্চলের মানুষের।
হয়তো জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান যদি আজও বেঁচে থাকতেন তবে আমাদের ফারহানা কাউনাইনকে কাছে ডেকে নিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে বলতেন, মা’ থেমে যাস না, এগিয়ে যা বীর দর্পে। তোকে এই বাংলার মানুষের বড় বেশী দরকার’।
সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন মুক্তিযুদ্ধের বিশিষ্ট সংগঠক ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচোর এবং আদর্শবান রাজনীতিক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রাণের মানুষ অ্যাডভোকেট মরহুম সৈয়দ সিরাজুল ইসলামের আদরের কন্যা। ১৯৭০-এর নির্বাচনে তিনি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে জাতীয় নির্বাচনে এমপি হিসেবে জয় লাভ করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে জেলা আওয়ামী লীগকে ঢেলে সাজান।
ফারহানা কাউনাইনের স্বামী মোঃ সায়েদুর রহমান ঢাকা বিভাগের পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে সুনামের সাথে কাজ করে আসছেন।