আমদানি-রফতানি প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করতে চলতি বছরের মাঝামাঝি চট্টগ্রাম বন্দরে প্রি-অ্যারাইভাল প্রসিডিউর (পিএপি) চালুর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বিশে^র বিভিন্ন দেশের বন্দরে এ ব্যবস্থা চালু থাকলেও বাংলাদেশে এতোদিন তা ছিলো না। পিএপি’র মাধ্যমে জাহাজ বন্দরে বন্দরে পৌঁছার আগেই কার্গো বা পণ্যের বিস্তারিত তথ্য শিপিং এজেন্টের মারফতে সংশ্লিষ্ট বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে চলে যায়। ফলে পণ্যের ছাড়পত্রের প্রক্রিয়াটি দ্রুত সম্পন্ন হয়। তাতে ছাড়পত্র ব্যয়ও কমে যায়। ফলে দ্রব্যমূল্যের সাশ্রয় হয়। সব দিক বিবেচনায় রেখে চলতি বছরের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে চালু করা হচ্ছে প্রি-অ্যারাইভাল প্রসিডিউর। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে আমদানিকারককে আমদানি পণ্যের সাধারণ তথ্য (আইজিএম) জাহাজ আসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষকে দিতে হয়। তারপর দাখিল করতে হয় বিল অব এন্ট্রি। আর তা দাখিল সম্পন্ন হওয়ার পর থেকে কাস্টমসের কার্যক্রম শুরু হয়। আইজিএম সাবমিট করে শিপিং এজেন্ট। আর বিল অব এন্ট্রি দাখিল করতে ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্টরা। সব মিলিয়ে ১০ দিনের মতো সময় লাগে। তাতে আমদানিকারকের কার্গোর পণ্যের ছাড়পত্র নিতে অনেক সময় লেগে যায় এবং খরচও অনেক বেড়ে যায়। তাছাড়া বাংলাদেশে পণ্যের ছাড়পত্র ব্যয় দক্ষিণ এশিয়ার যে কোনো দেশের চেয়ে বেশি।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরে এপিএ চালু হলে বন্দরে পণ্য এসে পৌঁছার আগেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চালানটির বিভিন্ন তথ্য পেয়ে যাবে। ফলে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার প্রক্রিয়াটি সময়সাশ্রয়ী হবে। কারণ কাস্টমস কর্মকর্তারা আগেই আইজিএম দেখে মানদ-ের ওপর ভিত্তি করে কার্গো বাছাই করবে। তখন ঠিক করবে কোন কোন কার্গো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে আর কোনগুলো ছাড়পত্র পেয়ে যাবে। যেসব কার্গোয় সরকারি পণ্য আমদানি-রফতানি করা হয়, বেশির ভাগ সময় ওসব কার্গোর শুধু কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। তবে কাজ এগিয়ে রাখার জন্য তারা চাইলে প্রি-অ্যারাইভাল প্রসিডিউরের মাধ্যমে নিজেদের সংযুক্ত করতে পারবে।
সূত্র আরো জানায়, বর্তমানে এপিএ’র বিষয়ে কিছু নিয়মকানুন পরিবর্তন করার কাজ চলছে। আর কিছু নিয়মকানুন আগের মতোই চলবে। অনেকগুলো পণ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) সনদের পরও বিশেষ কিছু বিভাগের সনদ লাগে। সেগুলো ওই প্রক্রিয়াতেই হবে। তাতে পণ্যের ছাড়পত্রের প্রক্রিয়াটা অনেক দ্রুত হবে। ফলে দেশের বাইরে এদেশের ভাবমূর্তি ভালো হবে।
এ বিষয়ে এনবিআর কাস্টমস অডিট, মডার্নাইজেশন অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের সদস্য খন্দকার মুহাম্মদ আমিনুর রহমান জানান, এপিএ প্রক্রিয়ায় জাহাজ শেষ বন্দরটি ছেড়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে আইজিএম দাখিল করবে। সেসব তথ্য দেশে ৫ অথবা ১০ দিন পর পৌঁছাক, সেটা আলাদা বিষয়। কিন্তু শেষ বন্দর ত্যাগের সঙ্গে সঙ্গেই তাকে (শিপিং এজেন্টকে) আইজিএম সাবমিট করতে হবে।