সত্য কথায় সত্যখেকোদের গায়ে আগুন ধরবে এমনটি অস্বাভাবিক নয়। আর সত্যটা যদি হয় সাংবাদিকতায় তাহলে তো কোনো কথাই নেই। সত্য কথা প্রচার-প্রকাশ হওয়া মাত্রই সত্যখেকোদের গায়ে আগুন ধরতে বাড়তি আগুন দেওয়ার প্রয়োজন হয়না। চার দশকের জীবনে দুই দশকের সাংবাদিকতায় ঢের বুঝেছি, সাংবাদিকদের জীবনে মামলা-হামলা, হুমকি নতুন কোনো বিষয় নয়। সাংবাদিকতায় আগেও মামলায় ছিলাম। এখনো আছি। আর হুমকি ধামকি তো হাল জমানায় সাংবাদিকতার খাঁটি পাওনা। কিছুদিন আগে এক ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারকের ফিল্মি স্টাইলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মারধরের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ করে তিক্ত অভিজ্ঞা হয়েছে। আমাকে শায়েস্তা করতে নানাবিধ ফিকির-ফন্দি আঁটতে গিয়ে ‘বিচারক বনাম অবিচার নাটক’ মঞ্চায়ন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওই বিচারক। স্থানীয় কালোবাজারিদের দিয়ে আমার বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক চাঁদাবাজির মামলা করতে সুযোগ খোঁজেন। জীবনে ধূমপান না করেও নিস্তার মিলে নেই ওই বিচারকের নিকট। তার হীন কার্যকলাপের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ করার দায়ে আইনশৃংখলা বাহিনীর নিকট অভিযোগ করা হয়; আমি নাকি মাদক কারবারির সাথে জড়িত। আমার বিরুদ্ধে তদন্ত করতে একাধিকবার এলাকায় র্যাব আসে। এতে আমি বিচলিত না হলেও আমার শুভাকাঙ্খিরা বিস্মিত হয়েছে। কারণ ‘ধূমপান’ বিরোধী আন্দোলন আমার জীবনের অন্যতম অনুসঙ্গ। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার দায়ে অতিতেও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এখন হচ্ছে জ্যামিতিক হারে। এসব মামলা-হামলা, ভয়ভীতি কিংবা হুমকির মধ্য দিয়েই সাংবাদিকতা করতে হয়।
সাংবাদিকতার দায়ে মামলার নির্যাতনে শিকার দেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক মতিউর রহমান চৌধুরী। তিনি শুধু সাংবাদিকও নন। বরং উপমহাদেশের প্রথম বাংলা ট্যাবলয়েড দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদকও বটে। এছাড়া তিনি দীর্ঘ দিন থেকে টেলিভিশনে উপস্থাপনা করে যাচ্ছে অত্যন্ত সুনামের সাথে। সর্বোপরি তিনি একজন সব্যসাচী মানুষ। সব্যসাচী সাংবাদিক। সাংবাদিকতার ধান্ধায় তাঁকে কোনোদিন আক্রান্ত হতে দেখা যায়নি। মুক্তিযুদ্ধেও তাঁর ত্যাগ অনেকের চেয়ে অনেক।
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার কৃতীসন্তান জনাব মতিউর রহমান চৌধুরী অতিতে মামলায় ছিলেন, এখনও মালায় আছেন। বলা যায়, তাঁর বিরুদ্ধে মামলা নতুন নয়। বরং অসংখ্য মামলার মধ্যে দিয়েই তিনি সাংবাদিকতা করে যাচ্ছেন। তবে গত ১০ই মার্চ অভিনব একটি মামলা হয়েছে মতিউর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে। নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিস্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার অপকর্ম নিয়ে গত ২ই মার্চ মানবজমিন পত্রিকায় একটি খবর প্রকাশ হয়। যার জের ধরে মানহানির অভিযোগে মাগুরা-১ আসনের এমপি সাইফুজ্জামান শিখর বাদি হয়ে শেরে বাংলানগর থানায় ডিজিজাল নিরাপত্তা আইনে মতিউর রহমান চৌধুরী ও প্রতিবেদক মো. আল-আমিনসহ ৩৫জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। যদিও প্রতিবেদনে কোনো সংসদ সদস্যের নামের গন্ধ পর্যন্ত নেই।
জানা যায়, এমপি শিখরের সঙ্গে মতিউর রহমান চৌধুরীর পরিচয় নেই। দুজনের মধ্যে কোনোদিন ফোনেও কথা হয়নি। তবে এমপি শিখরের বাবা অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামানের সঙ্গে পরিচয় ছিল তাঁর। ঘনিষ্ঠতাও ছিল। এমপি শিখরের বাবাকে নিয়ে অনেক লিখেছেন তিনি। তাঁর লেখা থেকে জানা যায়, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। তিনি সচ্ছল রাজনীতিবিদ ছিলেন না। অনেক কষ্ট করে গেছেন। রাজনীতি করতে গিয়ে অনেকটা নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। মানুষ তাঁকে ভালোবাসতো প্রাণভরে।
মতিউর রহমান চৌধুরী যখন বাংলাবাজার পত্রিকার সম্পাদক; এমপি শিখরের বাবাকে নিয়ে ‘একজন আসাদুজ্জামানের মৃত্যু’ শিরোনামে একটা লেখা লিখেছিলেন। শিখরের পরিবারের কাছে ওই লেখাটি অনেকদিন সযতেœ রাখা ছিল।
মামলা যে কেউ করতেই পারেন। এই অধিকার যে কারোর রয়েছে। মতিউর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলার বাদি যদি আইন প্রণেতা না হয়ে অন্য কেউ হতেন তাহলে বোধ করি এ নিয়ে এতোটা প্রশ্ন উঠতো না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা করায়, দলমতনির্বিশেষে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকরা সোচ্চার হয়েছেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো মানবজমিনের পাশে দাঁড়িয়েছে। জারি রেখেছে প্রতিবাদও।
জনাব মতিউর রহমান চৌধুরীর সাথে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই। পরাধীন না থাকার হুঁশিয়ারি স্পর্ধিত স্লোগান আর চলমান ঘটনার চমকপদ শিরোনামে ফূলপেইজ ব্যাকাপের জন্য মানবজমিনের উপর আমার দুর্বলতা। অনেক আগে থেকে মানবজমিন পড়ি। ২০১২ সালে দৈনিক সংবাদের সহ-সম্পাদক হিসেবে করর্মরত থাকাবস্থায় আমি মানবজমিন অফিসে গিয়ে ছিলাম স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করতে। এক পর্যায়ে ঠিকঠাকও হয়েছিল মানবজমিনে কাজ করবার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা না হওয়ায় এখনও মানবজমিনের স্টাফ হওয়ার আপসোস শেষ হয়নি। মন চায়, যদি মানবজমিনে লিখতে পারতাম...
মতিউর রহমান চৌধুরীর মতে, সমাজ অনুমতি না দেওয়ায় ট্যাবলয়েড বলতে যা বোঝায় তা এখনও করা যায়নি মানবজমিনকে। কনজারভেটিভ সমাজেও অনেক চড়াই-উৎরাই আর লড়াইয়ের মধ্যদিয়ে এক এক করে দুই যুগ পূর্ণ করতে যাচ্ছে মানবজমিন। ৫০ বছরের সাংবাদিকতায় মতিউর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনেক মামলাই হয়েছে। তন্মমধ্যে ক্যাসেট কেলেঙ্কারির মামলা অন্যতম। তখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। বিচারপতি সাহাবুদ্দীন প্রেসিডেন্ট। প্রয়াত প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ হাইকোর্টের বিচারপতি লতিফুর রহমানের সঙ্গে একটি মামলা নিয়ে টেলিফোনে কথা বলেছিলেন। এ বিষয়ে মানবজমিন পত্রিকা খবর ছাপে। এ নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে নানা গুঞ্জন চাউর হয়। বিষয়টি যায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীনের কানে। মাহমুদুল ইসলাম তখন অ্যাটর্নি জেনারেল। কিছুকাল আগে তিনি না ফেরার দেশে চলে গেছেন। খবর প্রকাশের দায়ে সাহাবুদ্দীন সাহেব আদালত অবমাননার মামলা করার নির্দেশ দিলে তখন সময় নেননি আইন বিষয়ে প-িত মাহমুদুল ইসলাম। বরং তড়িৎ গতিতে মতিউর রহমান চৌধুরী এবং মানবজমিন-এর সম্পাদক মাহবুবা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা চুকে দেন তিনি। আসামি করা হয় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকেও।
আদালতে এতো বড় মামলা কীভাবে মোকাবিলা করা যায়, তা নিয়ে ভাবনার মধ্যে পড়ে যান মতিউর রহমান চৌধুরী। উপমহাদেশখ্যাত আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ মামলার কথা শুনে চিন্তায় পড়ে যান। প্রমাণ কি আছে? না-কি শুনেই রিপোর্ট করা হয়েছে? প্রমাণ না থাকলে কিন্তু জেলে যেতেই হবে। তাছাড়া প্রমাণ ছাড়া তিনি নিজেও মামলা নেবো না। ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদের এমন সাফ কথার ‘বিচারপতি আর এরশাদ সাহেবের মধ্যকার টেলি কথোপকথনের টেপ রয়েছে’ জবাব দেন মতিউর রহমান চৌধুরী।
এবার অবাক ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ। বললেন ব্যারিস্টার রোকনের সঙ্গে কথা বলে এই মামলা লড়বো। ঠিকই ব্রিফ তৈরি করলেন। ক্যাসেট শুনলেন দু’দফা। ক্যাসেট শুনে মতিউর রহমান চৌধুরীর উদ্দেশে বললেন, আপনি কি গোয়েন্দা বাহিনীতে কাজ করেন নাকি! এই ক্যাসেট পেলেন কোথায়? আদালতে দুই প্রভাবশালী আইনজীবী মামলায় লড়বেন শুনে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলাম ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদের কাছে গিয়ে বললেন- ‘স্যার এটা কি ঠিক আপনারা দাঁড়াচ্ছেন আসামিদের পক্ষে’! ইশতিয়াক সাহেব হেসে দিয়ে বললেন- কেনো? আপত্তি আছে? না স্যার, এসব মামলায় প্রমাণ ছাড়া কি আপনাদের মতো আইনজীবী দাঁড়াতে পারেন? ইশতিয়াক সাহেব বললেন ‘দেখা যাক, আদালতেই কথা হবে’।
মামলা উঠলো আদালতে। বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম ও বিচারপতি এ. কে. এম. শফিউদ্দিন প্রথমেই জানতে চাইলেন কিসের ভিত্তিতে এই রিপোর্ট করা হয়েছে? এরশাদ সাহেব যে বিচারপতি লতিফুর রহমানের সঙ্গে কথা বলেছেন এর দালিলিক প্রমাণ কি?
ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ ক্যাসেট দেখিয়ে বললেন, ‘এটাতে প্রমাণ বন্দি করা আছে।’ আদালত চত্বর তখন আইনজীবীতে ঠাসা। কৌতূহলী মানুষজনেরও ভিড়। আদালতের কার্যক্রম এক ঘণ্টার জন্য স্থগিত করা হলো।
ক্যাসেট শুনলেন বিচারপতি প্যানেল ও আইনজীবীরা। বিচারপতির কণ্ঠ শুনে সহকর্মীরা নিশ্চিত হলেন। আর এরশাদ সাহেবের কণ্ঠ তো কারোর অচেনা নয়।
সঙ্গে সঙ্গে বিচারপতি লতিফুর রহমান পদত্যাগ করলেন। মামলা চলতে থাকলো। রায়ে এরশাদ সাহেবের ছয় মাসের জেল। মতিউর রহমান চৌধুরীর ১ মাস। মাহবুবা চৌধুরীর ১ দিন। আদালতে প্রমাণ হাজির করেও জেল কেনো হলো? এই প্রশ্নের কোনো জবাব আজও মেলেনি। এমন কি বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলামকে অবসরকালীন সময়ে এক অনুষ্ঠানে মতিউর রহমান চৌধুরী জিজ্ঞেস করেছিলেন। তিনিও জবাবটা এড়িয়ে যান। মামলাটি এখনও আপিল বিভাগে বিচারাধীন।
যাই হোক, মামলা নিয়ে জনাব মতিউর রহমান চৌধুরী মোটেও চিন্তিত নন, এনমটি আমাদের বিশ্বাস। তিনি জীবনে অনেক মামলাই মোকাবিলা করেছেন। চাকরি হারিয়েছেন ১৯৭৪ সালে। খালেদা জিয়ার জমানায় জেলে গিয়েছেন। ১৭ ঘণ্টা আটকে রেখেছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। দুর্নীতিপরায়ণদের উল্লাসের নৃত্য লেখার কারণে মতিউর রহমান চৌধুরীর গাড়িও ভেঙে দিয়েছিল এরশাদ সাহেবের লোকেরা। সাপ্তাহিক খবরের কাগজ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। জিয়াউর রহমানের জমানায় দু’বার অ্যাক্রিডিটেশন বাতিল করা হয়। একনাগাড়ে বিনা কারণে আট মাস বাইরে থাকার দুঃখজনক অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাঁর। ছাত্র-রাজনীতি থেকে সাংবাদিকতায় এসেছেন তিনি। রাজনীতি করলে কিছু একটা হতে পারতেন। তাঁর বন্ধুরা তো হয়েছেন। রাজনীতি করার ইচ্ছে কখনো তাঁর ছিল না। এখনো কোনো দলে ভিড়েননি। কোনো ফোরাম বৈঠকেও যান না। সরকারের ভালো কাজের প্রশংসা করেন। মন্দ কাজের সমালোচনা করলে অনেকে তাঁর উপর ক্ষুব্ধ হন। তাঁকে দলভুক্ত করার প্রপাগা-া চালান।
বিএনপি’র শাসনকালে কেবলমাত্র ‘মানবজমিন’ লিখেছিল ৬ জন মন্ত্রী ছাড়া বাকিদের গায়ে ‘ময়লা’ লেগেছে। আসলে ৫০ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে কারো লোক হতে পারেননি মতিউর রহমান চৌধুরী। এমপি শিখর মামলা করেছেন। মামলা চললে আদালতে মতিউর রহমান চৌধুরীর অবস্থান পরিষ্কার হবে। আইন যদি সত্যিকার অর্থে তার নিজস্ব গতিতে চলে তাহলে শুধু মতিউর রহমান চৌধুরী নন, সবপক্ষই ন্যায়বিচার পাবে- এমনটাই আশা রাখি।
মহান মুক্তিযুদ্ধের ২৫শে মার্চ শেষ রাতে মতিউর রহমান চৌধুরী যখন গ্রেপ্তার হয়েছিল, তখন তাঁর পরিবার এবং দলের কর্মীরা সবাই ভেবেছিল তিনি শহীদ হয়ে গেছেন। একসময় মতিউর রহমান চৌধুরীর খবর পাওয়া গেলো। মুক্তিযুদ্ধের পরেই এনা’র সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। এরপর ইত্তেফাক, বাংলার বাণী, পূর্বদেশ, আজকের কাগজের মতো স্বনামধন্য গণমাধ্যমে কাজ করেছেন মতিউর রহমান চৌধুরী। সর্বশেষ বাংলাবাজার পত্রিকা ছিল মতিউর রহমান চৌধুরীর অপূর্ব সৃষ্টি। বাংলাবাজার পত্রিকাটি ‘হটকেক’ পরিণত হয়েছিল। এখন মতিউর রহমান চৌধুরীর মানবজমিন কেবল মানবজমিনই নয়, বরং মানবজমিন সবপক্ষের জমিনে পরিণত। আর মতিউর রহমান চৌধুরী হলেন বাংলাদেশে আধুনিক সাংবাদিকতার রূপকার, দেশে ট্যাবলয়েড সংবাদপত্রের জনক। এখন আওয়ামী জমানায় সব পরিচয় শেষে এক সময়ের ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় পদে নেতৃত্বদানকারী মতিউর রহমান চৌধুরী ছাত্রলীগেরই ফাদার সংগঠন মনোনিত আইন প্রণেতার মামলার আসামি।
শুধু মতিউর রহমান নয়, অনেক সাংবাদিকই হেনস্থার স্বীকার। আমারদেশ পত্রিকা নিয়ে সাংবাদিকদের রক্তচক্ষু দেখানো শুরু। অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম, ইত্তেফাকের জামালপুর সংবাদদাতা হালিম দুলাল, ইসলামপুরের নয়াদিগন্তের খাদেমুল হক বাবুল, বকশীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহীন আল আমীন, মানবজমিনের বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি গোলাম রব্বানী নাদিম, ঢাকা রিপোর্টের মুসা, সরিষাবাড়ীর জাকারিয়া জাহাঙ্গীর, আজকের বিজনেস বাংলাদেশের প্রতিনিধি জেরিন সাবরিন, দৈনিক কুমিল্লার ডাকের সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, নিখোঁজ সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলসহ অনেকেই বস্তুনিষ্ঠু সাংবাদিকতার দায়ে কেউ নিগ্রহের শিকার কেউবা কারাবাসের শিকার।
একটা কথা এখানে উল্লেখ করতে চাই, আইন করে যেমন কাউকে দায়িত্বশীল করা যায় না। তেমনি আইন কারো মানও ফিরিয়ে দিতে পারে না। মানহানি থেকে সুরক্ষা সব দেশের আইনেই বিদ্যমান। কিন্তু বিশ্বব্যাপী নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের জন্য একটি আলাদা সত্য রয়েছে। সেটি হলো তাদের মান-মর্যাদার বিষয়টি আইন দ্বারা নয়, সেটা বহুলাংশে পাবলিক পারসেপশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সুতরাং মামলা নয়, বরং দোষ শোধরানোই হবে সবপক্ষের মঙ্গলময় কাজ।
(লেখক : এম. কে. দোলন বিশ্বাস, দৈনিক সংবাদের সাবেক সহ-সম্পাদক)