শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশীদ্রোন ইউনিয়নের পারের টং গ্রামে গড়ে উঠেছে নিরাপদ সবজি গ্রাম। এই গ্রামের ২০৭ জন কৃষক প্রায় ৩৫ হেক্টর জমিতে বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি উৎপাদন করছে। শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি অফিসের বাস্তবায়নে নিরাপদ সবজি গ্রাম কর্মসুচিতে সহায়তা করছে বেসরকারি সংস্হা সুচনা প্রকল্প।
সুত্র জানায়, নিরাপদ সবজি গ্রাম পারের টং-এ স্হাপন করা হয়েছে পারের টং কালেকশন পয়েন্ট। এ কালেকশন পয়েন্ট থেকে খুচরা ও পাইকারি সবজি কিনে নিচ্ছেন ক্রেতারা। নিরাপদ সবজি গ্রামে উৎপাদিত এসব সবজি যাচ্ছে শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার, সিলেট, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। চাষিরা সকাল ৬টার মধ্যে পারের টং কালেকশন পয়েন্টে সবজি নিয়ে আসেন। নিরাপদ সবজির এই হাট বসে ২-৩ ঘন্টার জন্য। সকাল ৮টার মধ্যে বেচাকেনা শেষ হয়ে যায়। তারপর পাইকারি ক্রেতারা এসব সবজি ট্রাকে করে নিয়ে যান।
শ্রীমঙ্গলের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি জানান, উদ্ধুদ্ধকরনের মাধ্যমে কীটনাশক ব্যবহার না করে বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি গ্রাম হিসেবে পারের টং গ্রামকে গড়ে তোলা হয়েছে। এ গ্রামের ২০৭ জন কৃষক প্রায় ৩৫ হেক্টর জমিতে নিরাপদ সবজি চাষ করছে। কৃষি অফিস তাদের প্রশিক্ষনসহ বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে আসছে। বর্তমানে সারা বছরই এখানে কোন না কোন সবজি চাষ হচ্ছে। এরমধ্যে রয়েছে, টমেটো, বেগুন, ডাটা, করলা, মিস্টি লাউ, পুঁইশাক, পালংশাক, শিম, ধনিয়াপতা, বরবটি, চিচিঙা, চালকুমড়া প্রভৃতি।
মোনালিসা সুইটি আরো জানান, বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি উৎপাদনের জন্য চাষীদের ফেরোমন ট্র্যাপ, হলুদ ট্র্যাপ, জৈব সার, জৈব বালাইনাশক, বিষটোপসহ যান্ত্রিক পদ্ধতি ও জৈবিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। পোকামাকড় দমনে কীটনাশক ছাড়া বিভিন্ন অত্যাধুনিক পদ্ধতি ও উপকারী পোকা দিয়ে অপকারী পোকা দমন করা হয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তা মোনালিসা সুইটি জানান, সবজি উত্তোলনের পর বাছাই, গ্রেডিং, ধৌতকরনের পর প্লাস্টিক ক্রেটে করে বাজারজাত করা হয়। প্রতিদিন প্রায় ৩৫-৪০ মন শাকসবজি কালেকশন পয়েন্টে আসে। শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন স্হান থেকে খুচরা ক্রেতারা এসে বিষমুক্ত সবজি কিনে নিয়ে যান। তবে সবজির সিংহভাগই কিনেন পাইকারি ক্রেতারা। পরে তারা ট্রাকে করে নিয়ে যান বিভিন্ন স্হানে।
সুচনা প্রকল্পের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর মোস্তফা হায়দার মিলন বলেন, সুচনা প্রকল্প কৃষকদের নিয়ে একটি বিজনেস গ্রুপ গঠন করেছে। সবজি উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্হাপনার উপর কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এ ছাড়া কৃষি উপকরনের জন্য অর্থ সহায়তাও প্রদান করেছে।