জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আপন ছোট ভাই ও তার ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের হামলায় শ্যামনগর উপজেলার ঈশ^রীপুর ইউনিয়নের ধুমঘাট শীলতলা গ্রামের আবদুস সাত্তার মোল্যা (৭০)নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। হামলায় আবদুর রশিদ (৫৫) তার ছেলে এনামুল(২৫)সহ পুত্রবধু আয়েশা খাতুন (২২)ও আবদুল আজিজ (৩৪) মারাত্বকভাবে আহত হয়।
পেশায় ভ্যান চালক নিহত আবদুস সাত্তার ছিলেন মৃত সফেদ আলী মোল্যার বড় ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের ভাতিজা এনামুল বাদি হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনকে আসামি করে শ্যামনগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ স্থানীয়দের সহযোগীতায় আবদুর রাজ্জাক (৪৫) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে। আহতরা শ্যামনগর ও সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
নিহতের জামাতা অনোয়ারুল ও ভাতিজা এনামুলসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় আবদুস সাত্তার ও আবদুল গফুরের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বসতভিটার দখল নিয়ে বিরোধ চলছিল। পুর্ব বিরোধের জেরে বুধবার বেলা দেড়টার দিকে শ্রীফলকাঠি গ্রামের আবদুল জলিলের নেতৃত্বে ৪০/৫০টি মটর সাইকেলযোগে কিছু সন্ত্রাসী ঘটনাস্থলে পৌছে আবদুস সাত্তারের রান্না ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় সন্ত্রাসীরা নিহত আবদুস সাত্তারের দখলে থাকা জমি থেকে গাছ-গাছালী কেটে সাবাড় করে এবং আবদুল গফুরের পক্ষে একই জায়গায় পিলার বসিয়ে বেঁড়া নির্মান করে।
এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা শোবার ঘরের সামনে নুতন ঘর বাঁধার চেষ্টা করলে আবদুস সাত্তার ও তার পরিবারের সদস্যরা বাঁধা দিতেই তাদের উপর হামলা করা হয়। এ সময় ধারালো গেছো দা ও রামদা এর আঘাতে আবদুস সাত্তার তার ভাই আবদুর রশিদ ও এনামুল মারাত্বকভাবে আহত হয়।
শ্যামনগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আয়েশা খাতুন জানান রক্তাত্ত্ব অবস্থায় স্বামী শ^শুরসহ অন্যান্যের হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাঁধা দেয় জলিল ও তার লোকজন। এ সময় সে মুমূর্ষু অবস্থায় থাকা চাচা শ^শুরকে হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করলে তাকে কুপিয়ে আহত করে সন্ত্রাসীরা।
নিহতের জামাতা আনোয়ারুল জানায় প্রতিপক্ষের বাঁধা উপেক্ষা করে স্থানীয়রা আহতদের শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পর সন্ধ্যায় আবদুস সাত্তার ও আবদুর রশিদকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে আবদুস সাত্তারকে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেয়ার পথে রাত ১০ টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের ভাতিজা আশরাফ হোসেন জানায় হামলার নেতৃত্ব দেয়া তার চাচা আবদুল গফুর অঢেল অর্থ-বিত্তের মালিক হওয়ায় ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের এনে বসতভিটা দখলে বাধাঁ পেয়ে নারকীয় তান্ডব চালিয়েছে। তিনি শ্রীফলকাঠি ছাড়াও শ্যামনগরের ফুলতলা ও বংশীপুর এলাকা থেকে সন্ত্রাসীদের ভাড়া করে নিয়ে আসেন।
ইউপি সদস্য বিরেন্দ্র নাথ মন্ডল জানান, বহিরাগত কিছু লোকজন নিয়ে আবদুল গফুর বিরোধপুর্ন জমি দখল করলে সংঘর্ষে আহত আবদুস সাত্তার রাত দশটার দিকে মারা যায়।
শ্যামনগর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ মোঃ নাজমুল হুদা জানান, আবদুস সাত্তার নিহতের ঘটনায় ১১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের হয়েছে। ইতোমধ্যে একজনকে গ্রেফতারের পর অন্যদেরও গ্রেফতারে অভিযান চলছে।