‘শুদ্ধাচার’ শুধু একটি রাশভারি শব্দই নয় বরং শব্দটি বিশুদ্ধতায়পূর্ণও বটে। শুদ্ধ ও আচার শব্দের সমন্বয়ে সৃষ্টি ‘শুদ্ধাচার’ শব্দের। যার অর্থ চরিত্রনিষ্ঠা। তবে শুদ্ধাচারের গুরুগম্ভীর ভারিক্কি চালটা ‘প্রস্ফুটিত’ হয় প্রায়োগিকতায়। বাংলায় সাধারণত ‘নৈতিকতা ও সততা’ দ্বারা প্রভাবিত আচরণ ও উৎকর্ষ সাধনকে শুদ্ধাচার বলা হয়ে থাকে।
শুদ্ধ বলতে সহজ ভাষায় বুঝি পবিত্র, সাধু, খাঁটি, পরিষ্কার, শোধিত, নিষ্কলুষ, নিষ্ককণ্টক, নির্ভুল, নির্দোষ ইত্যাদি। একজন মানুষের চরিত্রের বৈশিষ্ট্য প্রকাশের জন্য যখন সমাজ এই অভিধাগুলোর ব্যবহার ও প্রয়োগ করে, তখনই সেই মানুষ ‘শুদ্ধ মানুষ’ হিসেবে গণ্য হন। এ জন্য সত্য, সুন্দর ও কল্যাণকর, নৈতিক আদর্শকে চরিত্রে ধারণ ও বাস্তবে রূপায়ন করতে হয়। ব্যক্তি ও পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে সুশৃঙ্খল ও শান্তি পূর্ণ জীবনধারণের জন্য ভালো আচরণ, ভালো রীতিনীতি, ভালো অভ্যাস রপ্ত ও পরিপালন করা অত্যাবশ্যক।
শুদ্ধাচার দ্বারা একটি সমাজের কালোত্তীর্ণ মানদ-, নীতি ও প্রথার প্রতি আনুগত্য বোঝানো হয়। ব্যক্তি পর্যায়ে শুদ্ধাচারের অর্থ হলো কর্তব্য নিষ্ঠা ও সততা, তথা চরিত্রনিষ্ঠা। কিন্তু সমাজে নিষ্ঠাবান চরিত্রের মানুষ পাওয়া সহজসাধ্য নয়। নীতি নৈতিকতার বালাই না থাকা মানুষের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি হচ্ছে জ্যামিতিক হারে। কর্তব্য কর্মে সবসময় সতর্ক থাকেন এমন ‘স্বভাব’ খুব কমই মেলে। আর সততার লেশমাত্র নেই এমন অনেক ক্ষেত্রেই বিদ্যমান। যেখানে সৎ মানুষের ঠাঁই পাওয়া বড়ই দুষ্কর। অসততার দিগন্ত থেকে দিগন্তজুড়ে কেবলই সততাকে গলাচেপে হত্যা করা হচ্ছে। জনগণের সেবাদানই যাদের কর্তব্যকর্ম, সৎ মানুষ হিসেবে দায়িত্বশীলতার নিদর্শন রাখাই তাদের মূল লক্ষ্য হওয়া বাঞ্ছনীয়। সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে সরকার জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল প্রয়োগের পদক্ষেপ নিয়েছে, সেলক্ষ্যে বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচী চালু হয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের বলা হয় জনগণের সেবক। কিন্তু বাস্তবে অনেকেই যেনো একেক জন জমিদার। জমিদারিত্বের আসীন হয়ে বরং জনগণকে সেবাদাসে পরিণত করে। ফলশ্রুতিতে সাধারণ মানুষ সেবক নামক শোষকের হাতে নানাভাবে, নানা সময়ে নিষ্পেষিত হন। সেবার ক্রম জটিলতর বিবর্তন এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংঘটিত বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন সংকট ও কেলেঙ্কারি উদঘাটনের পর সেবা ও পেশায় নৈতিকতার প্রশ্নটি বারংবার জোরালোভাবে সামনে উঠে আসে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সেবাখাতে শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়নের বিষয়টি নিয়ে বিভিন্নমুখী আলোচনা হচ্ছে। জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল মৌলিক মানবাধিকার, সামাজিক সাম্য, সুবিচারও সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কৌশল হিসেবে সরকারের নিকট বিবেচ্য।
সরকারি কর্মকর্তা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের বিদ্যমান ধারণা বদলাতে এবং সকল কর্মকর্তা কর্মচারীকে সরাসরি জবাবদিহিতার আওতায় আনার লক্ষ্যে সরকার একটি অবলম্বন হিসেবে প্রণয়ন করেছে ‘জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল’। ২০১২ সালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এই কৌশল প্রয়োগের উদ্যোগ নেয়। জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলের জানান দিতে দেশব্যাপী চলছে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। এই প্রশিক্ষণ গ্রহণ সরকারি কর্মকর্তাদের বাধ্যতামূলক। দেশের সবশ্রেণির মানুষ যেনো সরকারি সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছ থেকে ভাল ব্যবহার ও সময়মতো কাজ বুঝে পায় এবং কোনোভাবেই যেনো দুর্নীতির মধ্যে জড়িয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করাই এই কর্মসুচীর অন্যতম উদ্দেশ্য।
মোদ্দা কথা, জবাবদিহিতা বাধ্যতামূলক করার জন্যই এই পদক্ষেপ। একটি স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক ও উন্নয়নশীল দেশ বাংলাদেশের প্রশাসনে যদি জবাবদিহিতা না থাকে, তবে অগ্রগতির সকল আশাই বৃথা হতে বাধ্য। শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা, আইনের শাসন মৌলিক সমানাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্যসহ সুবিচার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। তাই সরকারের শুদ্ধাচারের পরিকল্পনার প্রধান বিষয়ই হচ্ছে উল্লিখিত লক্ষ্য পূরণে সুশাসন প্রতিষ্ঠা। আর তা প্রতিষ্ঠায় দুর্নীতি দমন, শুদ্ধাচার প্রতিপালন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য।
হাল জমানায় প্রশাসনিক কর্মকর্তা কর্মচারীদের দীর্ঘদিন লালিত জমিদারি স্টাইল কিংবা মালিকসুলভ আচরণ পরিহারে যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। অপ্রিয় সত্য, সরকারি দফতরগুলোতে দুর্নীতির কালো ছায়াটা সহজেই মরে না। সমাজ ও রাষ্ট্র এই একটা জায়গায় কন্টকাকীর্ণ। তাই কেবল আইন প্রয়োগ ও শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব নয়। সেজন্য প্রয়োজন বাষ্ট্রীয় ও সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যাপক আন্দোলন সঞ্চারিত করা। নাগরিক এবং সরকারি কর্মচারী উভয়ে যার যার আবস্থান থেকে সৎ থাকলেই দুর্নীতিসহ অপশাসনের বাহুল্য মুক্ত হওয়া যায়। তা হলেই সেবাদান প্রতিষ্ঠানগুলোতে শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠা পাবে। সমাজ ও রাষ্ট্রেরও বিশাল গুণগত পরিবর্তন ঘটতে বাধ্য। দুর্নীতির বিষয়টা উপড়ে ফেলা আর সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যেমন সর্বত্রই প্রয়োজন শুদ্বাচার। তেমনই ব্যক্তি জীবনের জন্যও তা অপরিহার্য।
সোনার বাংলা গড়তে এবং ন্যায়বোধ প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল সহায়তা প্রকল্প সরকার দ্রুতই বাস্তবায়ন করতে চায়। সেই লক্ষ্যেই শুদ্ধাচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ জন্য সরকারি, বেসরকারি কর্মকর্তাসহ সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টা দরকার।
বিশেষ করে সেবাখাতে শুদ্ধাচার অনুশীলন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। সেবাখাতে সকল শ্রেণির মানুষ সেবা প্রত্যাশিত বিধায় এখানে বিশৃঙ্খলা, অনিয়ম, অসাধুতা, অনৈতিকতার চর্চা যে কোনো মূল্যে প্রতিরোধ প্রয়োজন।
জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলের রূপকল্প হচ্ছে ‘সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলা’। সোনার বাংলা গড়তে হলে রাষ্ট্রের সর্বস্তরে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সুশাসন প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। এই কঠিন কাজটিকে তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বলেছিলেন- ‘নেশন মাস্ট বি ইউনাইটেড অ্যাগেইনস্ট করাপসন। পাবলিক ওপিনিয়ন মবিলাইজ না করলে শুধু আইন দিয়ে করাপসন বন্ধ করা যাবে না।’
১৯৭৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘সুখী ও সমৃদ্ধশালী দেশ গড়তে হলে দেশবাসীকে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়াতে হবে। কিন্তু একটি কথা ভুলে গেলে চলবে না যে, চরিত্রের পরিবর্তন না হলে এই অভাগা দেশের ভাগ্য ফেরানো যাবে কি-না সন্দেহ। স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি ও আত্মপ্রবঞ্চনার ঊর্ধ্বে থেকে সকলকে আত্মসমালোচনা, আত্মসংযম ও আত্মশুদ্ধি করতে হবে।’
আমাদের সকল উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে দেশের সেবাখাত। এখানে শৃঙ্খলা, সুশাসন এবং সর্বোপরি শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠা ছাড়া সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের আশা করা বৃথা। শুদ্ধাচারের চর্চা না থাকলে বিশৃঙ্খলা, অনিয়ম, দুর্নীতি সহসাই বাসা বাঁধে। ফলে সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন প্রক্রিয়া চরম হুমকির মধ্যে পড়ে।
আমাদের সবার প্রাত্যহিক জীবনযাপনে ‘নৈতিকতা’ শব্দটি খুবই পরিচিত। ইংরেজিতে এর নাম ঊঃযরপং। বিভিন্ন দার্শনিক বিভিন্নভাবে ঊঃযরপং কে সংজ্ঞায়িত করেছেন। তবে ঊঃযরপং এর পরিপূর্ণ ও ঝঢ়বপরভরপ সংজ্ঞা এখনও অজানা। নৈতিকতার কোনো নির্দিষ্ট মাপকাঠি বা মানদ- নেই। বিবেকবোধই হলো নৈতিকতার ‘উৎস’। বিবেকও সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞাহীন। তবে বিবেক বলতে- নিজের জন্য যা প্রত্যাশা, তা অন্যের জন্যও চাওয়া। বিবেকের তাড়নায় তাড়িত হয়েই ভালো কাজ করতে, সৎ পথে চলতে মানুষ উৎসাহিত হয়। পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষ, পৃথিবীর সবচেয়ে উৎকৃষ্ঠ জিনিসটি পেতে চায়। বর্ণ, রঙ, উচ্চতা, চিন্তাশক্তি, আকৃতি, গঠন ভেদে মানুষ আলাদা হলেও আকাক্সক্ষার ক্ষেত্রে সব মানুষের চাওয়াই অভিন্ন। কেউ মন্দ জিনিসটি নিজের জন্য নিতে চায় না। সবাই ভালোটি পেতে চায়। কেউই চায় না তার সাথে কেউ দুর্ব্যবহার করুক বা কেউ ক্ষতি করুক। নৈতিকতা হলো মানুষের মনের এই নিরন্তর চাওয়া পাওয়ার নীতি। নৈতিকতার চর্চা আমাদের অন্যের প্রতি যতœশীল, সহমর্মী, দয়ালু ও অন্যের অধিকার বজায় রাখার ও অন্যের ক্ষতি হতে বিরত থাকার শিক্ষা দেয়। প্রেরণা যোগায় সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে কাজ করবার। নৈতিকতা থেকে উৎসারিত হয় সৎসাহস, দেশপ্রেম সত্যবাদিতা ও দৃঢ় প্রত্যয়। যা একটি শৃঙ্খলাপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং শুদ্ধ সমাজ বিনির্মাণের অন্যতম শর্ত।
মনে রাখতে হবে, ব্যক্তির সমষ্টিতে যেমন প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি হয়। তেমনই ব্যক্তির সম্মিলিত লক্ষ্যই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যে প্রতিফলিত হয়। একজন মানুষের নৈতিকতা শিক্ষা শুরু হয় পরিবারে এবং শুদ্ধাচার অনুসরণের ক্ষেত্রে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। দ্বিতীয় ধাপে রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নৈতিক জীবন গঠনে যার গুরুত্ব অপরিসীম। তৃতীয় ধাপে রয়েছে তার কর্মস্থল। শুদ্ধাচার নির্ভর করে প্রাতিষ্ঠানিক দৃষ্টিভঙ্গি ও নৈতিক চর্চার ওপর।
বলে রাখা দরকার যে, নিবন্ধের শিরোনামটি ‘সুশাসনের জন্য কৌশলগত যোগাযোগ’ শীর্ষক দুদিন ব্যাপী এক কর্মশালাকে কেন্দ্র করে চয়ন করা হয়েছে। তথ্য মন্ত্রণালয়াধীন জাতীয় গণমাধ্যম ইন্সটিটিউটের আয়োজনে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে গত ১১ ও ১২ মার্চ ওই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন স্থানীয় ২৪ জন সাংবাদিক। ভাগ্যক্রমে আমারও কর্মশালায় অংশগ্রহণের সুযোগ হয়। কর্মশালায় দ্বিতীয় দিন প্রশিক্ষকরা অংশগ্রহণকারীদের চারটি দলে ভাগ করে দেন। প্রতিটি দলকে আলাদা আলাদা নামকরণ করা হয়। দেওয়া হয় আলাদা আলাদা বিষয়ভিত্তিক প্রতিবেন তৈরি করে প্রশিক্ষকদের নিকট জমা দিতে। আমার স্থান হয় তৃতীয় দলে। দলটির নাম দেওয়া রজনীগন্ধা। এ দলে অংশ নেওয়া অন্যরা হলেন সাপ্তাহিক একতা পত্রিকার অরুন ভাস্কর, স্থানীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ফিরোজ খান লোহানী, ইত্তেফাকের শফিকুল ইসলাম ফারুক, দিনকালের শহিদুল ইসলাম কাজল ও পিডিটিভি ইউটিউবের রফিকুল ইসলাম রঞ্জু। আমাদের বলা হয়, ‘জাতীয় শুদ্ধাচার’ এর উপর একটি প্রতিবেদন লিখে জমা দিতে। আমাদের দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিবেদনটি লেখার ভার আসে আমার উপর। আর তা পড়ে শুনানোর দায়িত্ব পান আমার সাংবাদিকতার পথপ্রদর্শক অরুন ভাস্কর। ওই কর্মশালায় তৈরি প্রতিবেদনই আজকের নিবন্ধ।
আমরা বলতে চাই, সর্বক্ষেত্রে ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার বিষয়ে ইসলামসহ প্রত্যেক ধর্মেই নির্দেশনা রয়েছে। নৈতিকতা ও সততা দ্বারা প্রভাবিত আচরণগত উৎকর্ষই ‘শুদ্ধাচার’। ন্যায়পরায়ণ, দুর্নীতিমুক্ত, শুদ্ধাচারী রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সকলকে শুদ্ধাচারী হওয়ার বিকল্প নেই। সুতরাং, শুদ্ধাচার ব্যতিরেখে সভ্যতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
(লেখক : এম. কে. দোলন বিশ্বাস, দৈনিক সংবাদের সাবেক সহ-সম্পাদক)