সারাবিশ্বে মহামারী আকারে রুপ নিয়েছে ভাইরাস সংক্রমণ (কোভিড-১৯)। বাংলাদেশে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ১জনের মৃত্যু হয়েছে। এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ জন। সারাদেশের মতোই আতংক আর উৎকণ্ঠায় কাটছে রাজবাড়ী জেলার ১০ লাখ মানুষের মধ্যে।
প্রশ্ন হচ্ছে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ (কোভিড-১৯) প্রতিরোধে কতটুকু সক্ষম রাজবাড়ীর সরকারী হাসপাতাল গুলো ? উত্তরে অনেক চিকিৎসকই বলেছেন করোনা ইস্যুতে যেতে যাচ্ছিনা সাধারণ চিকিৎসা সেবা দিতেই যে ইকুয়েপমেন্ট প্রয়োজন তার যথেষ্ঠ ঘাটতি রয়েছে। চিকিৎসকদের পারসোনাল প্রটেক্টিভ ইকুয়েপমেন্টই নেই। শুধুমাত্র রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতালেই ৪২ জন চিকিৎসকের মধ্যে মাত্র ১৪ জন চিকিৎসক রয়েছেন।
তবে কবে নাগাদ হাসপাতাল গুলোতে এই সমস্যার সমাধান হবে সেটিও স্পষ্ট করতে পারছেন না জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্নধার সিভিল সার্জন মো: নুরুল ইসলাম।
স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, রাজবাড়ীর ৫টি উপজেলায় বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন ১৭২৫ জন ব্যক্তি। তাদের মধ্যে থেকে মাত্র ৯০ জন প্রবাসীকে হোম কোয়ারেনটাইনে রাখা হয়েছে।
হাসপাতালের কর্তব্যরত একাধিক মেডিকেল অফিসার ও অন্যান্য দায়িত্বপালনকারীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, ‘আমাদের মেইন সমস্যা হলো পারসোনাল প্রটেক্টিভ ইকুয়েপমেন্ট (চচঊ) যা আমাদের কাছে নেই। এমনকি এন৯৫ মাস্কও হাসপাতালে নেই। হাসপাতালের বর্হি:বিভাগে প্রতিদিন দেড় থেকে দুইশত রোগী সেবা নিতে আসে।
আগতদের মধ্যে অনেকেই হাঁচি, কাশি আক্রান্ত ব্যক্তি রয়েছেন। তাদের সেবাদানের সময় নিজেদের যে সেফটি প্রয়োজন সেটি নেই। বলতে গেলে সার্জিক্যাল মাস্কই আমাদের কাছে নেই। অনেক দিন যাবত এ সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছি আমরা। কবে নাগাদ এর সমাধান হবে সে খবরও নেই আমাদের কাছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প: প: কর্মকর্তা ডা. শাফিন জোয়ার্দ্দার বলেন, ‘আমাদের আলাদা কক্ষে ৫ জনের জন্য আইসোলেশন ইউনিট রয়েছে, তোষক রয়েছে, বেড রয়েছে তাছাড়া কিছুই নেই। কিভাবে আমাদের চিকিৎসকরা ওই রোগীর কাছে যাবে জানিনা। আমি চিকিৎসক হিসেবে যদি আমার নিজের প্রটেকশন না পাই তাহলে আমি কিভাবে চিকিৎসা দিব। সাধারণ সার্জারী মাস্কের সংকটে রয়েছে আমার হাসপাতালের চিকিৎসকরা’।
রাজবাড়ী সিভিল সার্জন মো: নুরুল ইসলাম বলেন, এরই মধ্যে জেলার প্রতিটি হাসপাতালে ৫টি করে আইসোলেশন ইউনিট রাখা হয়েছে, সদরে ৩টি অতিরিক্তসহ জেলায় মোট ২৮টি আইসোলেশন ইউনিট করা হয়েছে।
করোনা সন্দেহ ব্যক্তি আইসোলেশন ইউনিটে থাকলে তাদের সেবাদানে কতটুকু সক্ষমতা আছে এ বিষয়ে তিনি বলেন, এই মুহুর্তে কোন সক্ষমতা আমাদের নেই, আজ জেলা সদরে ১০০টির বেশি করোনা প্রতিরোধক সেফটি পোশাক ও ইকুয়েপমেন্ট হাতে পাবো। অন্যান্য হাসপাতাল গুলোতে সাধারণ মাস্ক ও সেফটি মাস্কের যথেষ্ট সংকট রয়েছে।
এরই মধ্যে আমরা মন্ত্রণালয়ে আমাদের প্রয়োজনীয়তা ও সক্ষমতা সম্পর্কে অবহিত করেছি এবং দ্রুত তা সমাধানের জন্য অনুরোধ করেছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হবে।
যদি উপজেলার আইসোলিউশনে কাউকে নেয়া হয় সেক্ষেত্রে জেলা সদর থেকে তারা পোশাক ও অন্যান্য সামগ্রী তাদেরকে সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছেন রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ নুরুল ইসলাম।