করোনা ভাইরাসে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীসহ নানা মহলের সচেতন ভূমিকা যখন জরুরি, তখন উল্টো চিত্র জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার। অভিযোগ রয়েছে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে চালসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়েছেন খুরচা ও পাইকারী ব্যবসায়ীরা। আর করোনার আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ক্রেতাদের মাঝেও বাড়তি পণ্য কেনার হিড়িক রয়েছে। করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে কয়েকদিন ধরে কালাই উপজেলায় চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দামও বেড়েছে। তবে খুরচা ব্যবসায়ীদের দাবী, বর্তমানে করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে বাজারে চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির কৃত্রিম সংকট দেখা দিতে পারে বলে জনসাধারণের মধ্যে কয়েকদিন ধরে মজুতের প্রবনতা বেড়েই যাওয়াই চালসহ আটা, ডিম, তেল, হ্যান্ডওয়াশ, টিস্যু পেপারসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য অস্বাভাবিকভাবে দাম বৃদ্ধি হয়েছে। ফলে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যার দাম অস্বাভিক হারে বেড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কালাই পৌরসভাসহ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ানের বিভিন্ন হাট-বাজারে চিকন ও মোটাসহ সবধরনের চাল প্রতি কেজিতে ৬ থেকে ৭ টাকা বেড়েছে। আগের চেয়ে বর্তমানে আড়ৎগুলোতে বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৪ গুন। একদিনে উপজেলার হাট-বাজারে দাম বেড়েছে মুসুর ডাল প্রতি কেজি ৬ টাকা, চিনি প্রতি কেজি ৪ টাকা, সোয়াবিনের খোলা তেল প্রতি লিটারে ৪ টাকা, পেঁয়াজ প্রতি কেজিতে ১০ টাকা, আদা বৃদ্ধি ৩০ টাকা, রসুন ৪০ টাকা। এছাড়াও বেগুন প্রতি কেজি, কাঁচা মরিজ, আলু, করলা, পটল, মিষ্টি লাউসহ বেড়েছে মাছ ও মাংসের দাম। করোনার অজুহাত দেখিয়ে নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় নাভিশ্বাস উঠেছে উপজেলার নিম্ন-আয়ের মানুষের। আর সুশীল সমাজ মনে করেন, করোনা ভাইরাসের এই আতঙ্কের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি হওয়াই নিম্ন আয়ের মানুষ সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন। তারা আশঙ্কা করছেন, বাজারে যত সহজে পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে, তত দ্রুত কমানো দূরূহ হবে। তাই ব্যয় বৃদ্ধির ভোগান্তি আরও বাড়বে বলে তারা মনে করছেন।
মাত্রাই হাটে বাজার করতে আসা উপজেলার মাত্রাই গ্রামের ভ্যান চালক জাহাঙ্গীর হোসেন ও মুজিবর বলেন, আমরা গরিব মানুষ, দিন আনি দিন খাই, সারাদিন ভ্যান চালিয়ে আয় করি মাত্র ৩০০ টাকা কিন্তু করোনার অজুহাত দেখিয়ে নিত্যপণ্যের দাম এমন হারে বাড়তে থাকলে আমাদের পরিবার নিয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হবে। তাছাড়াও স্থানীয় এনজিও কাছে আছে সাপ্তাহিক কিস্তি। এসব মিলে বর্তমান তারা খুব বিপদে আছেন বলে জানান।
কালাই উপজেলার চালকল মালিক সমিতির সভাপতি আবদুল বারী বলেন, আমাদের এখানে চালের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। এখন চালের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই।
কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোবারক হোসেন পারভেজ বলেন, কোনো ব্যাবসায়ী যাতে বেশী দামে নিত্যপণ্য বিক্রয় করতে না পারে সেই ব্যাপারে বাজার নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। দাম বেশী নেয়ার কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাৎক্ষনিক ব্যাবস্থা নেয়া হবে।