মাননীয় সফল প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন জননেত্রী সৈনিকলীগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এবং বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা মো. সেলিম। সোমবার দুপুরে হালিশহরের সবুজবাগে দলীয় কার্যালয়ে বসে লেখা ওই চিঠিটি তিনি কুরিয়ারযোগে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে পাঠিয়েছেন। একইসঙ্গে চিঠিটি তিনি প্রকাশের জন্য শীর্ষ অনলাইন সংবাদ সংস্থা এফএনএসের চট্টগ্রাম অফিসেও পাঠিয়েছেন।
এতে ওই চিঠিতে সেলিম উল্লেখ করেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনী জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা। আপনীতো বহু ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের অনেক উন্নয়ন করেছেন। যা এক কথায় তুলনাহীন ও বিশাল। জনগণের জন্য আপনার পাহাড়ের মতো অনেক উঁচু ভালবাসা রয়েছে। দেশের মানুষকে শান্তিতে রাখতে আপনার চেষ্টারও কমতি নেই। বিশেষ করে গরীব-দুখী মানুষের জন্য আপনার সুদৃর্ষ্টি সবাইকে উৎসাহিত এবং অনুপ্রাণিত করেছে। ইতঃপূর্বে মাদক এবং দুর্র্নীতির বিরুদ্ধে আপনার ভূমিকা খুবেই প্রশংসনীয়। আপনী একমাত্র বাংলাদেশের যোগ্য প্রধানমন্ত্রী। আপনার সাথে কারও তুলনা হয়না; হবেও না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী- বর্তমানে সারা বিশ্বের মানুষ করোনা ভাইরাসের কারণে আতঙ্কিত। বাংলাদেশও এর বাইরে কিছু নয়। গত কিছুদিন থেকে সেই করোনা ভাইরাসের কারণেই একশ্রেণির রাক্ষুসী মানুষ প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত জিনিষপত্র বাসায় মজুদ করছেন। এতে লাখ লাখ দরিদ্র মানুষ খাদ্যদ্রব্য অতিরিক্ত দামে ক্রয় করতে হচ্ছে।
এক্ষেত্রে শুধু চালের দামই বেড়েছে প্রতি বস্তায় ৫শত টাকা। যা অবিশ্বাস্য হলেও সত্য। জামায়াত-বিএনপি সমর্থিত ব্যবসায়ীরা খাদ্যদ্রব্যের কৃত্রিম সংকট তৈরী করে অতিরিক্ত মুনাফা আদায়ের জন্য ক্রেতাদের পকেট কাটছেন। ওই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চট্টগ্রামেই বেশি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী- দেশের বেশিরভাগ ভোগ্যপণ্য চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েই আমদানি হয়। এখানকার কয়েকটি বাজারে সেই মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করছেন। যেমন ব্যবসায়ীরা বলছেন- চালসহ নিত্যপণ্যের সংকট চলছে। আর সরকারি তথ্যমতে- দেশে কোনো খাদ্যপণ্যের সংকট নেই। এজন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে চট্টগ্রামের প্রত্যেকটি খাদ্যের গুদামে অভিযান চালানোর দরকার। তাহলে দেখবেন চালসহ নিত্যপণ্যের দাম দ্রুত কমে যাবে। আমরা শ্রমিকশ্রেণির মানুষ কাজ করে ভাত খাই। এখন কাজও নেই। তাই চাল ক্রয় করতেও পারছিনা। এমন অবস্থা বহু মানুষের। গরীবদের হাহাকার বরাবরেই চলমান। আমাদের মতো দেশে অভাবী মানুষের সংখ্যা প্রচুর। তাদের কথা একটু চিন্তা করে আপনী এই কাজটি দ্রুত করুন।
এছাড়া কিছু মন্ত্রী-এমপিকে আপনী এলাকায় গিয়ে মানুষের সেবা করার যে নির্দেশ দিয়েছেন- তা উপেক্ষিত হচ্ছে। কারণ; আমাদের প্রিয় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের পদ-পদবী ধারী নেতারা সৌভাগ্যক্রমে মন্ত্রী-এমপিও হয়েছেন। তারা জনগণের সেবার চেয়েও নিজেদের আরো সম্পদশালী করার কাজে ঢাকায় ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। তারা গ্রামের বাড়ীতে মাঝে মাঝে আসলেও আমাদের মতো অসহায় মানুষজন তাদের কাছে যেতে অনেক ঝক্কি-ঝামেলা পৌহাতে হয়। এমনকি এই জাতীয় মন্ত্রী-এমপিরা ঈদ কিংবা নির্বাচনের সময়েও আমাদের এড়িয়ে চলেন। আমাদের দুঃখ শুনার তাদের সময় কই? আমার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারটি (০১৫৫৩-১৩৪৬৬৭) আপনাকে দিলাম। যে কোনো সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা আমার উপর্যুক্ত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করলে আমি প্রমাণ দিব ইনশাআল্লাহ। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের এই সময়েও তারা নিজকে রক্ষায় ব্যস্ত। তারা জনগণকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দিয়ে মিডিয়ায় উল্টা-পাল্টা কথা বলছেন; যা বেদনা এবং হতাশার তৈরী করছে জনগণের মাঝে।
এদের কারণেই গত ২১মার্চ ঢাকায় উপ-নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৫%। এর আগে আপনী দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মূল্যায়নের নির্দেশ দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডকে। কিন্তু তখনও আমাদের খবর কেউ নিতে আসেনি। দীর্ঘ ৫০বছর দলের জন্য অনেক ত্যাগ করেছি। মামলা-হামলাও ছিল নিত্যদিনের। অথচ আজ আমার দল ক্ষমতায় থাকার পরেও মনের ইচ্ছে পূরণ হয়নি। বর্তমানে চট্টগ্রামে খাদ্য মজুদকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। মন্ত্রী-এমপিদের এলাকায় গিয়ে মানুষের সেবা করার নির্দেশ দিন। দলের অসহায়দের তালিকা করে তাদেরকে মূল্যায়ন করুন; তাহলেই আমার স্বপ্নপূরণ হবে। মানুষও আতঙ্কিত হবেনা। বরং আপনার জন্য মানুষ মহান আল্লাহর কাছে দু’হাত তুলে দোয়া করবেন। আপনার সাফল্যের কথা তুলে ধরবেন প্রত্যেক গ্রামে গ্রামে।