পটুয়াখালীতে দুটি বাড়ি কোয়ারেন্টিন ঘোষণা করা হয়েছে। আজ জেলা প্রশাসন বাড়ি দুটি কোয়ারেন্টিন ঘোষণা করে এবং করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেÑএমন সন্দেহে ওই বাড়ি দুটি থেকে দুজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এই নমুনা ঢাকার রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে।
আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী এ তথ্য জানান।
যে দুজনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে, তাঁদের মধ্যে একজন মাদারীপুর এলাকা থেকে এসেছেন। অপরজন নারী এবং তিনি বিদেশফেরত।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত তিন মাসে তিন ধাপে পটুয়াখালীতে বিদেশ থেকে এসেছেন মোট ৮ হাজার ৩৪৪ জন। এর মধ্যে ২ হাজার ৫৬৭ জনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। বাকিদের সন্ধান চলছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, আজ পর্যন্ত পটুয়াখালী জেলায় মোট ২ হাজার ১৬৫ জন হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। ৪০২ জন হোম কোয়ারেন্টিন থেকে মুক্ত হয়েছেন। হোম কোয়ারেন্টিন না মানায় ইতোমধ্যে বিদেশফেরত তিনজনকে শাস্তির আওতায় এনে ১৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে পটুয়াখালীর যৌনপল্লিতে সবার যাতায়াত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পটুয়াখালী পৌরসভার জরুরি সভায় নেওয়া এই সিদ্ধান্ত আজ থেকে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
পটুয়াখালী পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে ওই সভায় সব ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পৌরসভার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। পৌরসভার সচিব হেলাল উদ্দিন জানান, যৌনপল্লিতে বিভিন্ন এলাকার মানুষ যাতায়াত করেন। কে কোথা থেকে আসছেন, কোথায় থাকছেন, তা তদারকির ব্যবস্থা নেই সেখানে। এই অবস্থায় আজ থেকে সেখানে সবার যাতায়াত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
যৌনকর্মীদের সংগঠন শক্তি নারী সংঘের সভানেত্রী ঝুমুর বেগম বলেন, তাদের এখানে প্রায় ২০০ ঘর আছে। ১৩০ জন যৌনকর্মী, মাসি ও শিশুসহ মোট ২০০ লোকের বসবাস। তাঁরা কীভাবে খেয়েদেয়ে বাঁচবেন, এ নিয়ে উদ্বিগ্ন বলে জানালেন তিনি। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা মেয়রের কাছে লিখিত আবেদন করবেন। তাদের জন্য কিছু অনুদান কিংবা খাদ্য সহায়তার ব্যবস্থা করা না হলে তাদের সবাইকে বিপদে পড়তে হবে।
যৌনকর্মীদের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কাজ করছে 'লাইট হাউস' নামের একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও)। এই সংস্থার স্বাস্থ্য সহকারী দোলন বারিকদার বলেন, 'আজ থেকে খদ্দেরদের আসা-যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে করে সংক্রমণের হাত থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পারেন এখানকার বাসিন্দারা। তবে এই সময়ে তাদের জীবন কীভাবে চলবে, এটা নিয়ে সবাইকে ভাবতে হবে।'
পটুয়াখালী পুলিশ ফাঁড়ির টাউন পরিদর্শক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, যৌনপল্লিতে যাতায়াত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। খদ্দের যাতে যাতায়াত করতে না পারেন, সে জন্য সাইন বোর্ড টানানো হয়েছে।
পৌর মেয়র মহিউদ্দিন বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে পৌরসভা থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আরও উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে যৌনকর্মীদের খাওয়া-থাকা চলবে কীভাবে, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।