ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে মঙ্গলবার থেকে সারা দেশের ন্যায় নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়া বিভিন্ন হাট বাজার নকডাউন করা হয়েছে। একই সাথে উপজেলায় মালামালবাহী যান চলাচলও সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে অনেক ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা কর্মহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। কিন্তু উপজেলার বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণের কিস্তির টাকার জন্য ছুটে বেড়াচ্ছেন গ্রাম গঞ্জের গ্রাহকদের কাছে। ফলে কর্মহীন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা ঋনের কিস্তি পরিশোধ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা সদর ইউনিয়নের উত্তর আলমনগর গ্রামের এক লড়ি ড্রাইভার সেলিম শেখ (৩০) জানান, “ একটি এনজিও থেকে মোটা অংকের ঋণ নিয়ে গাড়ী কিনেছি। কিন্তু করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গাড়ীতে মাটি বালি ও মালামাল টানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অথচ এনজিও কর্মীরা বাড়ীতে এসে ঋনের কিস্তির টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করে চলেছেন। তিনি আরও বলেন, বেকার অবস্থায় পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁেচ থাকাই কষ্টকর, এরমধ্যে আবার ঋনের টাকা পরিশোধ করা কোনো ভাবেই সম্ভব না”। চরভদ্রাসন বাজারের আরেক ব্যবসায়ী সৃজনশীল লাইব্রেরীর মালিক মোঃ কামরুল মোল্যা জানান, “ এক এনজিও থেকে দুই লাখ টাকা ঋণ নিয়ে দোকানে বই ও ফটোষ্ট্যট মেশিন উঠিয়েছি। মাসিক ১০ হাজার টাকা ঋণ কিস্তি দিতে হয়। কিস্তির টাকার জন্য এনজিও কর্মীরা বাড়ীতে এসে বাক-বিতন্ডা করে গেলেও কিস্তি পরিশোধ করতে পারি নাই। তিনি উপজেলার সবগুলো এনজিও প্রতিষ্ঠানকে গ্রাহকদের প্রতি সদর হওয়ার দাবী তোলেন”।
অবশ্য, এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন সুলতানা বলেন, “ পরবর্তি নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব ধরনের ঋনের কিস্তি উঠানো বন্ধ রাখার জন্য জেলা থেকে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছেঁ। কিন্তু এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলো কেন নির্দেশনা মানছেন না তা খতিয়ে দেখা হবে”। একই দিন উপজেলার ব্রাক এনজিও সূত্র জানান, “ গ্রাহকদের ঋণের কিস্তি উঠানো বন্ধ রাখার ব্যাপারে আমরা এখনো কোনো নির্দেশনা পায় নাই, তাই কিস্তি উঠানো অব্যাহত রেখেছি”। তবে দু’এক দিনের মধ্যে অফিসিয়াল নির্দেশনা আসতে পারে বলেও এনজিও সূত্রটি জানান”।