আমতলী থানা হেফাজতে শানু হাওলাদারের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় শুক্রবার বিকালে আমতলী থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ মো: আবুল বাশারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পুলিশের প্রধান কার্যালয়ের এক আদেশে বরিশাল ডিআইজির নির্দেশে বরগুনা পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন পিপিএম স্বাক্ষরিত এক পত্রে তাকে প্রত্যাহার করে বরগুনা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কমিটির প্রধান বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ,এসপি পদায়ন) তোফায়েল আহম্মেদ।
ঘটনার দিন সকালেই বরগুনার পুলিশ সুপার মো মারুফ হোসেন দায়িত্ব অবহেলায় ওসি (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রী ও ডিউটি কর্মকর্তা এএসআই আরিফকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ,এসপি পদায়ন) তোফায়েল আহম্মেদকে প্রধান করে এ ঘটনার তদন্ত করার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ঠ একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বরগুনা সদর) মোঃ মহব্বত আলী ও সহকারী পুলিশ সুপার (আমতলী-তালতলী সার্কেল) সৈয়দ রবিউল ইসলাম। তদন্ত কমিটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেক, ভিরেসা রিপোর্টসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তদন্ত কমিটির প্রধান বরগুনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ,এসপি পদায়ন) তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, থানায় আসামীর মৃত্যুর মূল কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত কাজ শুরু করেছি। অল্প সময়ের মধ্যেই তদন্ত কাজ শেষ হবে।
অপর দিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিহত শানু হাওলাদারের মরদেহ গ্রামের বাড়ীতে পৌছলে স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। ওইদিন রাত ১১ টার দিকে গুলিশাখালী ইউনিয়নের পশ্চিম কলাগাছিয়ার গ্রামের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। এ ঘটনার পরিবারের পক্ষ থেকে শুক্রবার পর্যন্ত মামলা হয়নি।
উল্লেখ্যবৃহসপতিবার সকালে আমতলী থানা হেফাজতে শানু হাওলাদারের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। ওসি তদন্ত মনোরঞ্জন মিস্ত্রীর অফিস কক্ষের ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের পরিবার অভিযোগ করেছে, গত ২৩ মার্চ রাতে গুলিশাখালীর পশ্চিম কলাগাছিয়ার গ্রামের বাড়ি থেকে শানু হাওলাদারকে আটক করে এবং নির্যাতন করে হত্যা করে। তবে পুলিশ সুত্র জানায়,তাকে ২৫ মার্চ রাতে ইব্রাহিম হত্যা মামলায় সন্দেহজনকভাবে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কোন ধরনের নির্যাতন করা হয়নি। পুলিশের দাবী শানু আত্মহত্যা করেছে।
একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আপাদ দৃষ্টিতে আত্মহত্যা মনে হলেও সিসিটিভির ফুটেজ নিরপেক্ষভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা, ভিসেরা রিপোর্ট এবং ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং নাগরিক ফোরাম ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবী করেছেন।
পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত রিপোর্টের প্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।