কালিগঞ্জে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে রাশিদা খাতুন শিল্পী (২৪) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১ এপ্রিল) ভোরে উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বন্দকাটি গ্রামে ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়। তিনি উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী ও পাশর্^বর্তী বন্দকাটি গ্রামের আবদুস সালামের মেয়ে।
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস আতংকের মধ্যে করোনা উপসর্গ নিয়ে এই মৃত্যু হওয়ায় এলাকাবাসীর মাঝে ভীতি সৃষ্টি হয়। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বলেছেন করোনা নয়, হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে ওই গৃহবধূর।
বিষ্ণুপুর ইউপি’র ৮নং ওয়ার্ডের (বন্দকাটি) সদস্য মনিরুজ্জামান মনি জানান, গত ২৭ মার্চ রাশিদা খাতুন অসুস্থ অবস্থায় শ্বশুরবাড়ি থেকে বন্দকাটি গ্রামে পিতার বাড়িতে আসেন। এর মধ্যে একদিন তার জ্বর হয়। স্থানীয় চিকিৎসক রুহুল আমিনের চিকিৎসায় জ্বর সেরে যায়। এরপর মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাশিদা খাতুন অসুস্থ বোধ করতে থাকেন এবং ফজরের নামাজের পর তার মৃত্যু হয়। নিহতের পিতার উদ্ধৃতি দিয়ে ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান মনি আরও জানান, দীর্ঘদিন যাবত রাশিদা খাতুন অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। এজন্য ঢাকাসহ বিভিন্ন ডাক্তার দেখানো হয়। তিনি আরও বলেন, রাশিদা খাতুনের পিতা ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলেন। দুই পুত্র সন্তানের জননী রাশিদা খাতুনও পর্দানশীন মহিলা ছিলেন।
বিষ্ণুপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ রিয়াজ উদ্দীন জানান, রাশিদা খাতুন শিল্পীর মৃত্যুর পরপরই উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করি। খবর পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শেখ তৈয়েবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল টিম ঘটনাস্থলে যেয়ে সার্বিক খোঁজখবর নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলোচনার পর মৃতদেহ দাফনের অনুমতি দেন। পরে মৃতদেহ ফতেপুর গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে জোহর নামাজের পূর্বে জানাজা শেষে মৃতদেহ দাফন করা হয়। জানাজায় আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী অংশ নেন। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
তবে রাশিদা খাতুন শিল্পীকে চিকিৎসা প্রদানকারী গ্রাম্য চিকিৎসক রুহুল আমিন বলেন, রাশিদা খাতুনের শরীরে জ্বর ছিল। সেই সঙ্গে শ্বাসকষ্টও ছিল। এজন্য তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছিল।
এব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শেখ তৈয়েবুর রহমান বলেন, আমি খবর পেয়ে ১২ জনের একটি চিকিৎসক টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে যেয়ে বিষয়টি যাচাই করেছি। হার্ট অ্যাটাকে ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছি। করোানা’র উপসর্গ না থাকায় নমুনা পরীক্ষার প্রয়োজন হয় নি বলে জানান তিনি।
কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোজাম্মেল হক রাসেল বলেন, উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে শিল্পী নামে এক গৃহবধূর মৃত্যুর খবর পেয়ে চিকিৎসক টিম প্রেরণ করি। হৃদরোগে তার মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা আমাকে জানিয়েছেন।