আর কোন আক্রান্ত ব্যক্তি পাওয়া যায়নি। বরং সুস্থ্য হয়েছে ১১ জন। আশার এই কথার সাথে আরো একধাপ এগিয়ে বলতে চাই- চিনে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, তাপমাত্রা ৮.৭২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার করার পর ভাইরাসের সংক্রমণ কমেছে। বিশেষজ্ঞদের অনেকে আবার দাবি করেছে, বেশি তাপমাত্রা বা আর্দ্রতা সহ্য করতে পারে না এই ভাইরাস। আর এরই মধ্যে মহামারি নভেল করোনাভাইরাস ছড়ানো ঠেকাতে ইউরোপ ও আমেরিকাজুড়ে পোশাকের আউটলেটগুলো বন্ধ হওয়ার মধ্যে বিদেশি ক্রেতারা অন্তত ১৪৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল করেছে। যেখানে বাংলাদেশের নামও ছিলো। আর আমরা আছি মাস্ক নিয়ে, মাস্ক না পড়ার কারণে অপমান, পড়লে সম্মান নিয়ে। অথচ এই করোনা সংকট কাটতে না কাটতেই নেমে আসবে ভয়আবহ অর্থনৈতিক কষ্ট। যারা শুরুটা আমি মোমিন মেহেদী দিনরাত জীবনের মায়া না করে রাজপথে থেকে দেখেছি।
দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর রাজনীতিকদের একটি অংশ সর্বোচ্চ চেষ্টায় লুটপাটের জন্য নিজেদেরকে যেমন প্রস্তুত করছে, তেমন শেয়ারবাজারে বড় ধরনের ধসও নেমে এসেছে হয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক এ যাবৎকালের সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে গেছে। করোনাভাইরাস নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বড় ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এ কারণে দেশি-বিদেশি সব ধরনের বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়িয়েছেন। ফলে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। একই সাথে ধারণা করছি- কারোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে, তাতে বিশ্ব শেয়ারবাজারেও দরপতন হয়েছে। পাকিস্তান শেয়ার মার্কেট বন্ধ করে দিয়েছে। এরইমধ্যে করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হওয়ার পর মুজিববর্ষের প্রোগ্রাম পুনর্বিন্যাস করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। যে কারণে আজ শেয়ারবাজারে বড় দরপতন দেখা যাচ্ছে। করোনা আতঙ্ক ছাড়া এ মুহূর্তে শেয়ারবাজারে দরপতন হওয়ার কোনো কারণ নেই। তাছাড়া করোনাভাইরাসের কারণে এখন সবাই আতঙ্কিত। বড় ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করছেন না। তাদের নীরব থাকা বাজারে আরও আতঙ্ক বাড়াচ্ছে। করোনাভাইরাসের কারণে এক ধরনের আতঙ্ক থাকলেও আমাদের সন্দেহ একটি গ্রুপ বাজারে এ আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। তারা শেয়ারের দরপতন ঘটিয়ে শেয়ার কেনার পাঁয়তারা করছে। তারচেয়েও বড় কথা হলো- করোনা আতঙ্কে এতদিন বিদেশিরা শেয়ার বিক্রি করেছেন। কিন্তু এখন দেশি-বিদেশি সব ধরনের বিনিয়োগকারীরা করোনা আতঙ্কে শেয়ার বিক্রি করছেন। করোনাভাইরাসের কারণে শেয়ারবাজারে বড় ধরনের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বিদেশিদের কাছ থেকে দেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে বেশি সেল করার প্রেসার আসছে। বিদেশিরা হয়তো ১০-১৫টি কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করছেন। কিন্তু দেশি বিনিয়োগকারীরা প্রায় সব ধরনের শেয়ার বিক্রির হিড়িক লাগিয়ে দিয়েছেন। এ কারণে বাজারে বড় ধরনের পতন হয়েছে। এরমধ্যে একদিন আমি সরাসরি গিয়ে দেখেছি যে, লেনদেনের শুরুতেই শেয়ারবাজারে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। লেনদেনের প্রথম ঘণ্টাতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্য সূচক ২০০ পয়েন্টের ওপরে পড়ে যায়। সময়ের সঙ্গে বাড়তে থাকে পতনের মাত্রা। সেই সঙ্গে দরপতন হতে থাকে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। এতে দিনভর ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া মাত্র ২টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৫২টির। আর ১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দেশের শেয়ারবাজারে সাম্প্রতিককালে এমন ভয়াবহ দরপতন দেখা যায়নি। এই ভয়াবহ পতনের কারণে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৭৯ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান মূল্য সূচক হিসেবে ডিএসইএক্স চালুর পর সূচকটির এত বড় পতন আর হয়নি। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচকটি শুরুরও নিচে নেমে গেল। ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক হিসেবে ডিএসইএক্স ৪ হাজার ৫৫ পয়েন্ট নিয়ে যাত্রা শুরু করে ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি। প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি করুণ দশা বিরাজ করছে ডিএসইর অপর সূচকগুলোর। বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচকটি কমেছে ৮৮ পয়েন্ট। ১ হাজার ৪৬০ পয়েন্ট নিয়ে ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি চালু হওয়া সূচকটি এখন ১ হাজার ৩৪৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইর আর একটি সূচক 'ডিএসই শরিয়াহ্'। ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে ২০১৪ সালের ২০ জানুয়ারি এ সূচকটি যাত্রা শুরু করে। শুরুতে এ সূচকটি ছিল ৯৪১ পয়েন্টে। সেদিন লেনদেন শেষে সূচকটি ৬৯ পয়েন্ট কমে ৯২৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইতে ১২৪টি প্রতিষ্ঠানের দাম কমেছে ৯ শতাংশের ওপরে। দফায় দফায় দাম কমিয়ে অনেক বিনিয়োগকারী এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রি করতে পারেননি। ২০১০ সালের মহাধসের পর দেশের শেয়ারবাজারে এমন নাজুক অবস্থা আর দেখা যায়নি। শেয়ারবাজারে বড় ধরনের ধস হলেও লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৯৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪২৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৭০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৭৫৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৩৪৩ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে ৭০ কোটি ২০ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ২৫৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে তিনটির, কমেছে ২৪৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে চারটির। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই বর্তমান ক্ষমতাসীনদেরকে দায়ি করে রিউমার ছড়াচ্ছেন- ‘ জোর করে ক্ষমতায় থাকার গজব নেমেছে’ বলে। তবে বাংলাদেশের রাজনীতি-শিক্ষা-সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক কর্মী হিসেবে বলতে পারি- রাজনীতিতে এমন নীতি সারাবিশ্বেই আছে, ক্ষমতায় আসলে আর ছাড়তে চায় না। তাই বলে গজব বা আজব পরিস্থিতি তৈরি হবে, এটা ভাবা বোকামি। বরং আমরা কিভাবে বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের জন্য চরম হুমকি করোনা ভাইরাস সমস্যার সমাধান করতে পারি, তা ভাবতে হবে। কেননা, বর্তমানে ঢাকায় অবস্থানরত ইতালি থেকে আসা দুই ব্যক্তিসহ তিনজনকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী হিসেবে চিহ্নিত করার পর উদ্বেগ-আতঙ্কে কাঁপছে গোটা দেশ। ঘনবসতিপূর্ণ এই এলাকায় ভয়াবহ এ রোগ দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে দেশের দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় তা কতটা সামাল দেওয়া সম্ভব হবে তা নিয়েও উদ্বিগ্ন সবাই। পাশাপাশি এ রোগের ভয়াবহ বিস্তার ঘটলে উন্নয়নশীল এ দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোতে তা কতটা আঘাত হানবে এবং মন্দা সে পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠা আদৌও সম্ভব হবে কি না তা এখন সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের উৎকণ্ঠার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একটা শ্রেণি নিজেকে বাঁচাতে ভুলপথে হাঁটা শুরু করেছে- মাস্ক লাগিয়ে ঘুরছে-কাজ করছে, ভাবছে সে সবচেয়ে নিরাপদ কাজটি করছে। আর এই সুযোগে সিন্ডিকেট করে মাস্ক-এর দাম বাড়ানো হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে হাত ধোয়ার জন্য তৈরি বিভিন্ন হ্যান্ডওয়াশ থেকে শুরু করে টয়লেট বিষয়ক সামগ্রীর দামও। কিন্তু কেন? যেখানে নিজেদের জীবন বিপন্ন হয়ে যেতে পারে, সেখানে ব্যবসা কেন? মনে রাখতে হবে বারবার- করোনা ভাইরাস নিয়ে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া উদ্বেগ আতঙ্কের ঢেউ এরই মধ্যে দেশের কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে শেয়ারবাজার পর্যন্ত সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকান্ডও সীমিত হয়ে আসছে।
এরই মধ্যে অবশ্য দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল বিএনপির একাধিক সভা-সমাবেশের কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। বিয়ে-সাদিসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য পার্টি সেন্টার, কমিউনিটি সেন্টার ও হোটেলের নির্ধারিত অনেক আগাম বুকিংও বাতিল করা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে স্বজনের সান্নিধ্যে আসার জন্য সোমবারের ফ্লাইটের টিকিট কেটেও অনেকে তা বাতিল করেছেন। করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা দুর্বলতার সুযোগে ওই দুই ইতালিফেরত যাত্রীর (যাদের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে) মতো আরও প্রবাসী কিংবা বিদেশি রোগী ইতোমধ্যে দেশে প্রবেশ করেছে কি না তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছিল, সোমবার তা যেন আরও ভালোভাবে জেঁকে বসেছে। বিশেষ করে দেশে করোনা আক্রান্ত তিনজনের সংস্পর্শে আসা ৪০ জনকে সোমবার কোয়ারেন্টাইনে নেওয়ার খবর সে ভীতি আরও ভীষণভাবে উসকে দিয়েছে। কেননা ওই ৪০ জন কারা এবং আরও কতজন এদের সংস্পর্শে এসেছিলেন তা এখনো সবার অজানা। তাই এ মরণব্যাধি তাদের মাধ্যমে দ্রুত ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়বে কিনা এ আশঙ্কা অনেকের মনে ভর করেছে। প্রতিটি দিন এখন রাস্তা-ঘাট, নগর পরিবহণ, অফিস-আদালত, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সবর্ত্রই উদ্বিগ্ন পরিস্থিত বিরাজ করে। ঢাকা মহানগরীসহ দেশের সবখানেই চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীসহ সর্বস্তরের মানুষের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার নানা কথা।
অনেক কষ্টের খবরের মধ্যে একটি হলো- স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে বড় ধরনের জনসমাগমে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়ায় সচেতন অধিকাংশ মানুষ সেদিকে পা বাড়ায়নি। এমনকি নিত্যপ্রয়োজনীয় কেনাকাটায় অনেকে বড় বাজারগুলো এড়িয়ে চলেছে। এছাড়া গণপরিবহণেও এ সতর্কতার নেতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে। নগরীর চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিপুল সংখ্যক মানুষ আগে নিয়মিত বাস-মিনিবাস ও হিউম্যান হলারে চলাফেরা করলেও তাদের অনেকে পায়ে হেঁটে কিংবা বিকল্প কোনো পরিবহণে গন্তব্যে যাতায়াত করেন। এ কারণে সকাল থেকে দিনভর ঢাকা মহানগরীর অধিকাংশ গণপরিবহণে যাত্রীস্বল্পতা দেখা গেছে। পর্যাপ্ত যাত্রী না পাওয়ায় সিটি সার্ভিসের কয়েকটি পরিবহণ বেশকিছু রুটে তাদের নিয়মিত ট্রিপ কিছুটা কমিয়ে দিয়েছে। যাত্রীদের একটি বড় অংশ মুখে মাস্ক বেঁধে বাস-মিনিবাসে চড়েছেন। যাদের মুখে মাস্ক ছিল না, তারাও বাসে অবস্থানরত পুরো সময়টুকু রুমাল কিংবা সাধারণ কাপড়ের টুকরো দিয়ে মুখ ঢেকে রেখেছেন। কিন্তু তাতে কোন লাভ নেই বরং গণপরিবহণে হাতল না ধরেই বাসে চড়তে হবে। মাস্ক নিয়ে বেশি সিন্ডিকেট করায় এখন মাস্ক সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এক এলাকার ফার্মেসি থেকে অন্য এলাকার ফার্মেসি ঘুরেও যারা মাস্ক কিনতে পারেননি অনেকেই। নিম্নবিত্তের পেশাজীবীরা অনেকে বাসায় কিংবা দর্জির দোকান থেকে কাপড়ের টুকরো দিয়ে মাস্ক তৈরি করে তা ব্যবহার করেন। মধ্যবিত্তরা অনেকে ৬০-৭০ টাকার মাস্ক আড়াইশ থেকে তিনশ টাকায় কিনে তা মুখে বেঁধে মরণব্যাধি করোনাভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু জানতে হবে বায়ুতে ভাইরাস ছড়ায় না। ছড়ায় সরাসরি স্পর্শে। মনে রাখতে হবে- করোনাভাইরাসে যারা আক্রান্ত নন, কিংবা যাদের সর্দি-কাশি কিংবা সাধারণ জ্বরের কোনো উপসর্গ নেই তাদের মাস্ক পরিধানের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। অথচ করোনা নিয়ে আতঙ্কিত অনেকেই অতিরিক্ত সতর্কতার জন্য বাসাবাড়িতেও মাস্ক ব্যবহার করছেন। পরে আর মাস্ক কিনতে পাওয়া যাবে কিনা এ আশঙ্কায় দশ থেকে ১৫ গুণ অতিরিক্ত দামে ৫০ থেকে একশ মাস্ক কিনে কেউ কেউ বাসায় মজুত রেখেছেন।
‘হুজুগে বাঙালি’ বলে একটি কথা প্রচলিত আছে, সেই কথাটিই প্রমাণ করছে আমাদের দেশের রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু রুট লেভেলের ব্যক্তিটিও। কিন্তু কেন তারা সচেতনতার নামে বাড়াবাড়ি করছেন, আমার বোধগম্য নয়। অবশ্য সর্বশেষ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন- যেহেতু এটা ছোঁয়াচে রোগ, তাই তিন স্তরে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা যেন আতঙ্কিত না হই। প্রোটোকল অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কোনোভাবে যাতে ছড়াতে না পারে সেদিকে কড়া নজর দেওয়া হয়েছে।’
ইতমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহজনক রোগীদের জন্য রেফারেন্স হাসপাতাল হিসেবে দেশের কয়েকটি হাসপাতাল নির্দিষ্ট রাখা হয়েছে। হাসপাতালগুলো হলো- মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল। হাসপাতালগুলোতে সোমবার থেকে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। চিকিৎসা কাজে ব্যবহারের জন্য মজুদ রাখা হয়েছে মাস্ক, গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও রোগ প্রতিরোধী পোশাক।
অতিতের মত অবিরত আমি আলোর কথা, ভালোর কথা বলার মানুষ বলেই বলছি- দেশে নতুন করে কোনো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়নি। আক্রান্ত ৩ জনের মধ্যে দুইজন ইতালি থেকে সম্প্রতি বাংলাদেশে এসেছেন। দেশে এলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাদের কভিড ১৯-এ আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি শনাক্ত করা হয়। আক্রান্ত একজনের মাধ্যমে পরবর্তীতে একই পরিবারের আরও এক সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন। তিনজনের মধ্যে একজন নারী, দুইজন পুরুষ। তাদের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। অতএব, বারবার বলছি- খাওয়া-দাওয়া নিয়ে সতর্ক থাকুন, সতর্ক থাকুন নিজের সকল কাজে...
মোমিন মেহেদী : চেয়ারম্যান, নতুনধারা বাংলাদেশ এনডিবি