মানুষ মাত্রই যেমন অমানুষের গুরু। তেমনই সাংবাদিককে কখনো কখনো শিক্ষক হতে হয়। ঠিক তেমনটাই দেখা গেছে শ্রদ্বেয় সহ-যোদ্ধা এম. শাহীন আল-আমীন স্যারকে। সহ-কর্মী হলেও আমরা একে অপরকে ‘স্যার’ বলে সম্বধন করে থাকি। শাহীন স্যার এশিয়ান টেলিভিশনের জামালপুর প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। বকশীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতির দায়িত্বও তার উপর অর্পিত। এর আগে তিনি সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন। তার সম্পাদনায় প্রথম বারের মতো বকশীগঞ্জ থেকে প্রকাশ হচ্ছে ‘গণজয়’ নামে একটি দৈনিক পত্রিকা। ২০০০ সাল থেকে বকশীগঞ্জ সংবাদদাতা হিসেবে ইত্তেফাকে আছেন। এর আগে তিনি মানবজমিনের জামালপুর ও শেরপুর প্রতিনিধি ছিলেন।
শিক্ষার মানোন্নয়নে তার উদ্যোগে ৫ম থেকে -১০ম শ্রেণির ‘পাঠশালার’ নামে একটি বিনামূল্যে পাঠদান প্রতিষ্ঠান প্রথম বারের মতো উপজেলায় প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এছাড়া ১ম থেকে ১০ম শ্রেণির গরীব শিক্ষার্থীদের জন্য ‘সোনার বাংলা পাবলিক স্কুল’ নামেও একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠা তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তবে সবকিছু ছেপে তিনি ‘ইত্তেফাক শাহীন’ নামেই সমধিক পরিচিত। পত্রিকা সম্পাদনা করায় তিনি কখনো সাংবাদিকদের ‘স্যার’। কখনো শিক্ষার্থীদের পাঠদানে স্যার। সমাজে ঘটমান ঘটনা নিরসনে রাখেন সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। সাংবাদিকতার মাধ্যমে জানান নিয়মের রীতি-নীতি। তিনি সময় পেলেই স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়েন। খোঁজ নেন শিক্ষার্থীদের পড়া শোনার। এতেই তিনি যবনিকা টানেন না। ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞানসহ জটিল বিষয়ে ক্লাসও নেন তিনি। চমৎকার উপস্থাপনায় জ্যামিতির ক্লাস নিয়ে সাংবাদিক শাহীন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিশেষ নজরে আসেন।
আমরা মনে করি, শিক্ষক জন্মায় না, শিক্ষককে তৈরি হতে হয়। অনেকে মনে করেন, শিক্ষকতা একটি গুরুগম্ভীর ও নিরানন্দময় পেশা। এ কারণে ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্কটি হয়ে উঠে ‘ভয়-ভীতির’। এক্ষেত্রে জনাব শাহীন মনে করেন, শিক্ষার্থীদের বোঝাতে হবে যে, শিক্ষক কোনো ভয়ের পাত্র নয়। শিক্ষার্থীদের মনে পড়াশুনার প্রতি উৎসাহ, উদ্দীপনা সৃষ্টি, শ্রমশীলতা, সহনশীলতা, ধৈর্য্য, শ্রদ্ধাশীলতা সর্বোপরি জ্ঞানার্জনে অধ্যবসায়ের অভ্যাস গঠনের বীজ বুনে দিতে হবে। শিক্ষকের উপর শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নির্ভর করে। সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে তার লক্ষ্য অর্জনের পথে ধাবিত হতে উৎসাহ যোগাতে হয়। এক্ষেত্রে শিক্ষকের অনেক কিছু করণীয় আছে।
আগেই বলেছি, শিক্ষক জন্মায় না, শিক্ষককে তৈরি হতে হয়। আমরা মনে করি, শিক্ষকতা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম পেশা। সাংবাদিক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, জজ-ব্যরিস্টার, রাজনীতিবিদ, কবি, সাহিত্যিক যতো যাই বলা হোক না কেনো? শিক্ষার আলো ছাড়া এসবের কোনোটাই প্রত্যাশা করা সম্ভব নয়। এমনকি একজন শিক্ষক হতে গেলেও শিক্ষার প্রয়োজন। সর্বোপরি শিক্ষার বিকল্প নেই। একারণে শিক্ষকতা একটি মহান ও আদর্শ পেশা। সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে শিক্ষকরা মনোযোগসহকারে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করবেন এটাই শিক্ষকদের অন্যতম প্রধান কর্তব্য। শিক্ষক হিসেবে আমাদের মনে রাখতে হবে, দেশ ও জাতি গঠনে শিক্ষকদের দায়িত্ব ও ভূমিকা অনেক। নিষ্ঠার সাথে অর্পিত দায়িত্ব পালন করা, বিনয়ী হওয়া, সৎ জীবন-যাপন করা, পেশাগত দক্ষতা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি করা, নিজেরা পড়াশুনা করা, সামাজিক কাজে নিজেকে নিয়োজিত করা এসব একজন শিক্ষককে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনে ভুমিকা রাখবে।
শাহীন স্যার মহান সাংবাদিকতার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানে সম্পৃক্ত থেকে সমাজ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। ব্যস্তময় সাংবাদিকতা পেশায় নিয়োজিত থেকেও একাধারে স্থানীয় মেরুরচর হাসান আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
শাহীন স্যার পিতৃকুলে পেয়েছেন ধর্মীয় অনুপ্রেরণা। তার দাদা ভারতের দেওবন্দ থেকে উচ্চতর ডিগ্রিধারী আলম ছিলেন। দাদার দেওয়া ধর্মীয় ছবকে শাহীন স্যার বাল্য বয়সেই আয়ত্ব করেন ধর্মীয় জ্ঞান। পালন করতে শিখেন ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান। স্থানীয়রা তাকে থানা জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদ অলঙ্কিত করেছেন।
শাহীন স্যার মাতৃকুল থেকে শিখেছেন অসুস্থ্যদের সেবা ও পরিচর্চার কীভাবে করতে হয়। তার নানা ছিলেন স্বনাধন্য চিকিৎসক। সেকারণেই তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েকে ইতোমধ্যে একজন হোমিও চিকিৎসক হিসেবে সনদ হাসিল করেছেন। ফলে স্বাস্থ্য সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন শাহীন স্যারের ঔরসজাত সন্তান।
শাহীন স্যার সব সময় এলাকার মানুষের উন্নয়নের কথা চিন্তা করেন। ভাবেন কীভাবে এলাকাবাসীর ভাগ্যের পরিবর্তন করা যায়। সীমান্তবর্তী লোকজনের প্রশাসৈনিক সেবার কথা ভেবে বকশীগঞ্জ উপজেলাকে ‘জেলা’ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে শাহীন স্যার জনগণের সাথে একাত্মা ঘোষণা করে প্রাণপণ চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাকে করা হয়েছে বকশীগঞ্জ জেলা বাস্তবায়ন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক। ফলশ্রুতিতে বকশীগঞ্জকে ‘জেলা’ হিসাবে ঘোষণা করা আজ গণদাবিতে পরিণত।
শাহীন স্যার শিক্ষক পরিবারে লালিত পালিত হয়েছেন। তার বাবা ছিলেন মাধ্যমিক স্কুলের একজন আদর্শ শিক্ষক। বাবার আদর্শকে বুকে লালন করে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষক না হয়েও তিনি সময় পেলেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকে বিভিন্ন বিষয়ের উপর শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেন। তিনি ম্যানেজিং কমিটির সভাপিত হিসেবে মেরুরচর হাছেন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর বাড়িতে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে শিক্ষার মানোন্নয়নে পরামর্শ সভার কার্যক্রম করে যাচ্ছেন।
সাংবাদিক শাহীন মনে করেন, ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার হালচাল জানানোর জন্য অভিভাবকদের বিদ্যালয়ে ডাকা হয়। কিন্তু সচেতনতার অভাবে অভিভাকরা অভিভাবক সমাবেশে উপস্থিত হন না। ফলে অনেক সময় অভিভাবকরা তাদের সন্তানের লেখা পড়ার খোজঁ খবর যথাযথভাবে রাখতে পারেন না। তাই প্রতিটি শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার ও মেধার মূল্যায়নসহ শিক্ষা বিষয়ে সার্বিক তথ্য তুলে ধরা ও অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষার্থীর বাড়িতে উঠান বৈঠক করা হয়। উঠান বৈঠকে প্রতিটি শিক্ষার্থীর যাবতীয় পরিসংখ্যন অভিভাবকদের অবহিত করা হয়। পাশা পাশি শিক্ষার মানোন্নয়নে পরামর্শ গ্রহণ করা হয়। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গ্রামের অভিভাবকরা তাদের সন্তানের বিষয়ে অবগত হয়ে সচেন হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। সন্তানের ভবিষৎ বিষয়ে অভিভাকদের চোখ খুলে যাচ্ছে। অভিভাকরা সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীলও হয়ে উঠছেন।
সাংবাদিক শাহীন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন উপজেলা শাখার সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি উপজেলা ভিক্ষুক পুনর্বাসন কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিচালনা কমিটির একজন সক্রিয় সদস্য। দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আশানুরূপ কাজ করায় ইতোমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন তাকে এ্যাওয়ার্ড প্রদান করেছেন।
শাহীন স্যারের নিকট বর্তমান দেশে প্রচলিত শিক্ষার কারিকলাম বিষয়াদি সম্পর্কে জানতে চাইলে জানান, আমাদের দেশে প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক। আর বাধ্যতামূলক এ প্রাথমিক শিক্ষাস্তরের শিক্ষাক্রমটি হলো যোগ্যতাভিত্তিক। কিন্তু এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু যা অর্জন করার কথা অধিকাংশ শিশু তা অর্জন করতে পারছে না। আবার ভর্তিকৃত সব শিশু প্রাথমিক শিক্ষাচক্র সমাপন করছে না, একটা অংশ ঝরে পড়ছে। আবার যারা করছে তারাও সফলভাবে করতে পারছে না। শিশুরা কেনো পারছে না? শ্রেণিকক্ষে আসলে কী ঘটছে? ,শ্রেণিকক্ষের সব শিশুই কি একইভাবে শিখতে পারছে? শ্রেণিকক্ষে শিশুদের যোগ্যতা অর্জন না করার কারণ কী হতে পারে? কেনো আমরা মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারছি না? কোথায় সমস্যা? কোথায় কাজ করা দরকার? কোথায় উন্নয়ন আবশ্যক? এর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিই বা কে? এসব প্রশ্নের উত্তর জানা এবং যথাযথ উদ্যোগ ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যাবশ্যক।
শিক্ষকতা পেশা নিয়ে জানতে চাওয়া তিনি জানান, শিক্ষক হলেন শিক্ষাকে বাস্তব রূপদানকারী। সাধারণভাবে শিক্ষা প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত, বাস্তবায়ন ও ছড়িয়ে দেয়ার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিই হলেন শিক্ষক। শিক্ষকতা একটি মহান পেশা, পাশাপাশি জটিলও বটে। এই পেশার উন্নয়নে জ্ঞান ও দক্ষতার প্রয়োজন সর্বাগ্রে। একজন শিক্ষককে তার পেশার উন্নয়নের স্বার্থে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন তথ্য, জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করতে হয়। শিখন-শেখানো কার্যক্রম শতভাগ সফল করতে হলে জ্ঞান-গবেষণার সন্ধানে নিরলস প্রচেষ্টায় শিক্ষককে মত্ত থাকতে হয়। শিক্ষককে প্রতিনিয়ত জ্ঞান ও দক্ষতার উন্নয়ন সাধনে সচেষ্ট থাকতে হয় এবং যথাসময়ে যথোপযুক্ত স্থানে প্রায়োগিক দিকের প্রতি নজর দিতে হয়। কিন্তু এটি সহজ কোনো কর্ম নয়। একজন শিক্ষককের পক্ষে কীভাবে এ যোগ্যতা অর্জন করা সম্ভব? বিষয়টি নিয়ে আমাদের নতুন করে ভাবনার সময় এসেছে। আর হাত গুটিয়ে বসে থাকার সময় নেই। শ্রেণিকক্ষে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে শিশুদের না শেখার কারণ ও এর প্রতিকারের উপায় জানা একজন শিক্ষকের জন্য অতীব জরুরি। সেজন্য শিক্ষককে হতে হবে একজন গবেষকও। তিনি সব সময় ছোট ছোট কর্মসহায়ক গবেষেণা পরিচালনা করে নিজের অভিজ্ঞতার ঝুলি সমৃদ্ধ করবেন এবং সেই অভিজ্ঞতা পেশাগত জীবনে কাজে লাগাবেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ভিন্ন। সত্যি কথা বলতে কি- অধিকাংশ শিক্ষকই বিষয়টি এভাবে চিন্তা করেন না।
সাংবাদিক শাহীন আল আমীন একজন শিক্ষানুরাগী ও ধর্মীয় মুল্যোবোধ সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। ইসলামী চিন্তাবিদ ও পরোপকারী ব্যক্তি হিসাবে তিনি সর্বমহলে প্রশংসিত। শিক্ষা বিস্তারে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। সততা নিষ্ঠা ও অসহায় মানুষের কল্যাণে তিনি যেমন কাজ করে যাচ্ছেন। তেমনই প্রাতিষ্ঠানিক নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক না হয়েও একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে ন্যায় ও আদর্শ মানুষ গড়ে তুলতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
শাহীন স্যার মনে করেন, সুন্দর ও ন্যায় ভিত্তিক সমাজ গড়তে আমাদের বেশি বেশি পড়তে হবে। পড়ার কোনো বিকল্প নেই। আলোকিত সমাজের জন্য সৎ ও শিক্ষিত নাগরিক তৈরি করতে শিক্ষা ও শিক্ষকদের মুল্যায়ন জরুরি। তার মতে, নতুন প্রজন্মকে সঠিক ভাবে তৈরি করতে না পারলে আলোকিত সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। তাই তিনি সাংবাদিকতায় নিয়োজিত থেকেও মানুষ গড়ার কারিগর না হয়েও শিক্ষা বিতরণে সচেষ্ঠ। শুভ হোক শাহীন স্যারের। শুভ হোক সবার। ছড়িয়ে পড়ুক শাহীন স্যারের শুভকর্ম। সত্যি তিনি একজন সব্যসাচী মানুষ।
ক্লিন ইমেজের সমাজ গড়ার কারিগড় এম. শাহীন আল-আমীন স্যারকে বিশেষ করে জামালপুর-শেরপুর তথা ময়মনসিংহে ‘ইত্তেফাক শাহীন’ হিসাবে সাংবাদিকরা তো বটেই পেশাজীবী এবং সাধারণ মানুষও কম বেশি চিনেন। তিনি সাংবাদিকতায় কুড়িয়েছেন অনেক নাম যশ। ইতোপূর্বে মামলা তো দূরের কথা, তার বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরির গন্ধ পর্যন্তও থানাপাড়ায় খোঁজে পাওয়া যায়নি।
কিন্তু কপাল বাম! তার বিরুদ্ধে কেউ মামলা না করলেও পুলিশের অভিযোপত্রে তাকে চাঁদাবাজি মামলার আসামি হতে হবে এমনটি হয়তো তিন দশকের সাংবাদিকতায় তাকে কখনো ভাবতে হয়নি। একটি চাঁদাবাজি মামলায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ। এখানেই পুলিশের হীন মনভাবের শেষ নয়, বরং তাকে তড়িৎ গতিতে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে। দুইদিন কারাবাসের পর তিনি জামিনে মুক্ত হন গত ৭ মার্চ। সাংবাদিক শাহীনকে আসামি করায় পুলিশের হীন কর্ম নিয়ে অবাক হয়েছেন খোদ মামলার বাদি বকশীগঞ্জ কিয়ামত উল্লাহ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয়। কিন্তু তা হলেই বা কী? পুলিশ ও আদালত পাড়ায় এখন আর তিনি ‘ইত্তেফাক শাহীন’ নন বরং ‘চাঁদাবাজি মামলার আসামি’!
(লেখক : এম. কে. দোলন বিশ্বাস, দৈনিক সংবাদের সাবেক সহ-সম্পাদক)