দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে প্রধান শিক্ষক স্বামীর যৌতুকের দাবি মেটাতে অস্বীকার করায় প্রধান শিক্ষিকা স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করলে প্রতিবেশিগণ এগিয়ে এসে রক্তাক্ত জখম ও গুরুতর আহত অবস্থায় স্ত্রীকে উদ্ধার করে চিরিরবন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। ঘটনাটি গত ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাত আনুমানিক দেড়টায় উপজেলার ফতেজংপুর ইউনিয়নের বড় হাশিমপুর গ্রামের মুন্সীপাড়ায় ঘটেছে। এ ঘটনায় চিরিরবন্দর থানায় প্রধান শিক্ষিকা স্ত্রী বাদি হয়ে একটি এজাহার দাখিল করেছে।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা গেছে, বড় হাশিমপুর গ্রামের মুন্সীপাড়ার মৃত শাহাবদ্দিনের ছেলে দগড়বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইয়াকুব আলীর (৪৮) সাথে একই ইউনিয়নের চম্পাতলী শাহপাড়ার মৃত আবদুস সাত্তারের ৪র্থ কন্যা হাশিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোছাঃ মঞ্জুয়ারার (৪৫) সহিত ১৮ বছর পূর্বে বিবাহ হয়। বিয়ের পর হতে স্বামী ইয়াকুব আলী প্রতি মাসের বেতনের চেক ও বাবার বাড়ির জমি বিক্রি করে ১০ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছে। যৌতুকের টাকা আনতে অস্বীকার করায় প্রায়ই স্বামীসহ শ্বাশুরী, ভাসুর মারধর করত। এনিয়ে কয়েক বার স্থানীয়ভাবে কয়েক বার সালিশ বৈঠকও হয়। এ যৌতুকের চাপের রেশ ধরে গত ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাত আনুমানিক দেড়টায় স্ত্রী মঞ্জুয়ারাকে স্বামী ইয়াকুবসহ শ্বাশুরী, ভাসুর মারধর করে এবং হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় তার চিৎকারে প্রতিবেশিগণ এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক ইয়াকুব আলী জানায়, তার ৯ম শ্রেণিতে পড়-য়া ছেলেকে তার মা রুটি খেতে বললে সেই ছেলে তার মাকে লাথি মারে এবং মারধর করে। এ ঘটনায় প্রতিবেশি কয়েকজনের সহায়তায় ছেলেকে শাসন করলে পরদিন সকালে তার মা বকাবকি করে। এ সময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে একটু শাসন দেয়া হয়েছে। প্রতিবেশি কয়েকজন জানান, তাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ছেলেকে নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকত। ছেলে ঘরের আসবাবপত্র ভেঙ্গে ফেললে তাকে শাসন করলে মা তার পক্ষ নিত। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রতিবেশি নুর মোহাম্মদ লুনার জানায়, তিনি কয়েক বার তাদের বিবাদ মিমাংসা করে দিয়েছেন।
চিরিরবন্দর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ সুব্রত কুমার সরকার জানান, থানায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। বিষয়টি মিমাংসার জন্য চেষ্টা ছিল। অভিযুক্ত শিক্ষক সাড়া না দেয়ায় মামলাটি এজাহার হিসেবে রুজু করা হয়েছে। মামলা নং ১২।